অত্যাধিক পরিশ্রমে শারীরিক দুর্বলতা। বাহন বিষয়ে সতর্কতা প্রয়োজন। সন্তানের বিদ্যা শিক্ষায় অগ্রগতি বিষয়ে সংশয় বৃদ্ধি। ... বিশদ
জেলা প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, সুপার সাইক্লোনে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে নন্দীগ্রাম-১ব্লকে। ওই ব্লকে ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ১৮হাজার পোলট্রি ফার্ম ও গবাদি পশুর শেড নষ্ট হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১০কোটি ৪৪লক্ষ টাকা। এছাড়াও সুতাহাটা ব্লকে ৩০হাজার গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারমধ্যে কিছু মারা গিয়েছে এবং বেশকিছু জখম হয়েছে। ওই ব্লকে ১৯২১টি পোলট্রি খামার ও শেড ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৪কোটি ১ লক্ষ টাকা। হলদিয়া ব্লকে মোট ৪৬০০টি শেড ক্ষতিগ্রস্ত। প্রায় ২০হাজার গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগি ক্ষতিগ্রস্ত। প্রায় ১০হাজার মুরগি মারা গিয়েছে।
হলদিয়ার চারটি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং ১২টি ওয়ার্ডে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৮কোটি ১৩লক্ষ টাকা। খেজুরি-১ব্লকে ৬০০০ খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৩কোটি ৬লক্ষ টাকা। এছাড়াও রামনগর-২ব্লকে ১৩লক্ষ টাকা, এগরা-২ব্লকে ৭লক্ষ টাকা, কোলাঘাট ব্লকে ২৭লক্ষ টাকা, পটাশপুর-২ব্লকে ৮লক্ষ টাকা, দেশপ্রাণ ব্লকে ৩১লক্ষ টাকা, শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকে ২৭লক্ষ টাকা, চণ্ডীপুর ব্লকে ১৫লক্ষ টাকা, কাঁথি-৩ব্লকে ৪৬লক্ষ টাকা, তমলুক ব্লকে ৩৫লক্ষ টাকা, ময়না ব্লকে ২৩লক্ষ টাকা, মহিষাদল ব্লকে ৩১লক্ষ টাকা, ভগবানপুর-২ব্লকে ৪৮লক্ষ টাকা, পটাশপুর-১ব্লকে ৮লক্ষ টাকা, ভগবানপুর-১ব্লকে ৫৭লক্ষ টাকা, খেজুরি-২ব্লকে ৪লক্ষ টাকা, কাঁথি-১ব্লকে ৩৫লক্ষ টাকা ও নন্দকুমার ব্লকে ১৫লক্ষ টাকা মূল্যের শেড নষ্ট হয়েছে এবং গবাদি পশু-পাখির মৃত্যু হয়েছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, সাইক্লোনের তাণ্ডবে জেলায় মোট ২লক্ষ ৩৪হাজার ৭৫২পশু ও হাঁস-মুরগি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারমধ্যে মারা গিয়েছে ৯২হাজার ৭৬৪টি। মোট ৯১হাজার ৯৩৮টি মুরগি মারা গিয়েছে। এছাড়াও ৩৫২টি হাঁস মারা গিয়েছে। গোরু মারা গিয়েছে ৬২টি। কাঁথি-৩ব্লকেই পোলট্রি খামারে প্রায় ৩১হাজার মুরগি মারা গিয়েছে। এছাড়াও মহিষাদলে ১৩হাজার এবং কাঁথি-১ব্লকে ১১হাজার মুরগি মারা গিয়েছে।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন ব্লকের কয়েক হাজার মানুষ হাঁস, মুরগি ও গবাদি পশু পালন করেই জীবিকা নির্বাহ করেন। গত ২০মে সুপার সাইক্লোন উম-পুনের দাপটে প্রাণিসম্পদ ক্ষেত্রে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিপুল সংখ্যক খামারের ক্ষতি হওয়ায় এখন পোলট্রি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত মানুষজন খুবই সমস্যার মধ্যে পড়ে গিয়েছেন।
ওয়েস্ট বেঙ্গল পোলট্রি ফেডারেশনের সদস্য আশিসকুমার পাল বলেন, আমার নিয়ন্ত্রণে জেলায় ৩০টি পোলট্রি ফার্ম আছে। তমলুক ব্লকের সাতকালুয়া গ্রামে নিজের ফার্ম আছে। এছাড়াও নন্দকুমার, চণ্ডীপুর, নন্দীগ্রাম, খেজুরি প্রভৃতি এলাকায় কমিশনের ভিত্তিতে ফার্ম চলছে। মূলত ২৮দিনের মুরগি বাচ্চা সরকারকে সরবরাহ করে থাকি। লকডাউনে আড়াই লক্ষ মুরগির বাচ্চার অর্ডার থাকার পরও উত্তরবঙ্গে পাঠাতে পারিনি। বেশিরভাগ ফার্মে বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমার প্রায় তিন লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। গোটা জেলায় পোলট্রি ব্যাবসায়ীদের মাথায় হাত পড়ে গিয়েছে।
জেলা পরিষদের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ আনন্দময় অধিকারী বলেন, উম-পুন সাইক্লোনে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় প্রাণিসম্পদ বিভাগের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ৩০কোটি টাকার। হাঁস, মুরগি ও গবাদি পশু পালনের সঙ্গে যুক্ত কয়েক হাজার মানুষ চূড়ান্ত সমস্যার মধ্যে পড়েছেন।