শরীর নিয়ে চিন্তায় থাকতে হবে। মাথা ও কোমরে সমস্যা হতে পারে। উপার্জন ভাগ্য শুভ নয়। ... বিশদ
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিযায়ী শ্রমিকরা ভিন রাজ্যে গিয়ে যে পরিমাণ টাকা আয় করত সেই পরিমাণ অর্থ জেলায় থেকে রোজগার করা বেশ কঠিন। জেলায় নির্মাণ শ্রমিকের সংখ্যা বেশি। দেশজুড়ে এখানকার নির্মাণ শ্রমিকদের কদর রয়েছে। কেরল, মুম্বই, বেঙ্গালুরু সহ সমস্ত এলাকাতে তাঁরা বড় বড় প্রজেক্টের কাজ করে আয় করেন। মুম্বইয়ে একটি এসি নির্মাণকারী সংস্থায় শ্রমিকের কাজ করতেন বেলডাঙার কাপাসডাঙা গ্রামের তারিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, মাসে প্রায় ২১হাজার টাকা আয় হতো। আমাদের কাজ ছিল বড় বড় বিল্ডিংয়ে এসি বসানো। এলাকার প্রায় ৫০জন একই জায়গায় কাজ করতাম। সবাই ফিরে এসে বাড়িতে রয়েছি। ১০০দিনের কাজ করে আর কত টাকা আয় হবে? তাছাড়া আমরা এই ধরনের কাজ কোনওদিন করিনি। আরেক শ্রমিক ইদেল শেখ বলেন, বাইরে যাঁরা কাজ করতে যান তাঁরা মাসে কমপক্ষে ১৫ হাজার টাকা আয় করেন। জেলায় থেকে এই পরিমাণ টাকা আয় করা কোনও ভাবেই সম্ভব নয়। সকলে একরকম লাইফ স্টাইলে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি। এখন কী হবে বুঝতে পারছি না।
প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় বিভিন্ন রাজ্য থেকে এক লক্ষ ২৬ হাজারের বেশি লোকজন ফিরেছেন। বিভিন্ন জেলা থেকে প্রায় ৩৩ হাজার জন ফিরেছেন। এখনও বহু শ্রমিক মহারাষ্ট্র, গুজরাত, ত্রিপুরা, কেরল সহ বিভিন্ন রাজ্যে রয়েছেন। ট্রেনে ও বাসে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে তাঁরা ফিরে আসবেন। তাঁরা ফিরে এলে সংখ্যাটা দু’লক্ষ হবে বলে আধিকারিকদের অনেকেই মনে করছেন।
অতিরিক্ত জেলাশাসক(সাধারণ) সিরাজ দানেশ্বর বলেন, প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকা থেকে আড়াই থেকে তিন হাজার জন ফিরেছেন। তাঁদের ট্রেনের পাশাপাশি বাসেও ফেরানো হচ্ছে। এক আধিকারিক বলেন, শ্রমিকরা ভিন রাজ্যে কাজে না যেতে পারলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। করোনার মাঝে সেই পরিস্থিতিও সামাল দেওয়া বেশ কঠিন হয়ে যাবে। ১০০দিনের কাজ বা বাংলা আবাস যোজনার কাজে সবাই অংশগ্রহণ করবে বলে মনে হয় না। তাঁরা অধিকাংশই দক্ষ শ্রমিক। তাই তাঁরা বাইরে না গেলে অনেক প্রকল্পের কাজ আটকে যাবে। নির্মাণ শিল্পে এই জেলার মতো এত দক্ষ শ্রমিক অন্য কোথাও নেই।
জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বাইরে থেকে ফেরা সবাইকে ১৪দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা হয়েছে। কোয়ারেন্টাইনের মেয়াদ পেরিয়ে গেলেও কাজের সময় মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে। কাজের সময় অবশ্যই সামাজিক দূরত্ব বজার রাখা সহ অন্যান্য বিধিনিষেধ মানতে হবে। জেলা প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, পরিযায়ী শ্রমিকদের দিয়ে আপাতত ছোট ছোট বাগান তৈরি, মাছ চাষ করানোর পরিকল্পনাও রয়েছে। মুর্শিদাবাদের অতিরিক্ত জেলাশাসক(জেলা পরিষদ) সুদীপ্ত পোড়েল বলেন, পরিযায়ী শ্রমিকদের অনেকেই ১০০দিনের কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। তারা ভালোই কাজ করছে। আগামী দিনে তাদের আরও কী কাজ দেওয়া যায় তা নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে।