উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ যোগ। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
ভিনরাজ্যের আম বাজারে অনেকদিন আগে এলেও জেলার আমের জন্য হাপিত্যেশ করছিলেন সকলেই। কারণ, নবাবি মুলুকের এই আমের কদর বহুদিনের। এখানকার এই রসালো ফল নিয়ে রয়েছে নানারকম রোমাঞ্চকর কাহিনী। এবার সেই আম বাজারে আসতে শুরু করেছে। বিভিন্ন মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার জলদি প্রজাতির আমের মধ্যে গোপালভোগ বা বোম্বাই অন্যতম। জেলা তো বটেই, সমগ্র রাজ্যেই এই আমের চাহিদা যথেষ্ঠ। একই সঙ্গে চন্দনখোসা, সারেঙ্গা, গোলাপখাস প্রভৃতি প্রজাতির আমও বাজারে এসেছে। এমনকী, জেলার সাদুল্লা বা হিমসাগরও এসেছে বাজারে। ঈদের আগেই জেলা সদর শহর বহরমপুরের কান্দি বাসস্ট্যান্ড, স্বর্ণময়ী, কোর্টবাজার, গোরাবাজার প্রভৃতি সহ বিভিন্ন বাজারে ছেয়ে গিয়েছে স্থানীয় আমে। দু’দিনে জলদি প্রজাতির আম প্রায় ১৬হাজার মেট্রিক টন বাজারে এসেছে। তা দিয়েই চলছে ইফতার পার্টি। বর্তমানে গোপালভোগ ২০টাকা এবং হিমসাগর ৪০টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
ক্রেতারা বলেন, ভিনরাজ্যের আমে মন ভরে না। তাই জেলার আমের জন্য অপেক্ষায় ছিলাম। দু’দিন ধরে তা বাজারে মেলায় ভালো লাগছে। ইফতার পার্টিতে এবং বাড়িতে অতিথি আপ্যায়ন সেই আম দিয়ে সারা হচ্ছে। তবে, অন্যবারের তুলনায় এবার আমের দাম কিছুটা বেশি। জেলা উদ্যানপালন আধিকারিক গৌতম রায় বলেন, বিভিন্ন বাজার ও বাগান ঘুরে, আম ব্যবসায়ী ও চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, এবার জেলায় ১লক্ষ ৩০হাজার থেকে ১লক্ষ ৬০হাজার মেট্রিক টনের আশপাশে আমের ফলন হবে। দু’দিন ধরে সেই আম বাজারে আসতে শুরু করেছে। দু’দিনের প্রায় সম্ভাব্য ফলনের ১০শতাংশ বাজারজাত হয়েছে। সামনেই বাঙালির জামাইষষ্ঠী। সেই উৎসবের আগেই বাজারে আরও ৩০শতাংশ আম উঠতে পারে।
গঙ্গা ও ভাগীরথী বেষ্টিত এই নবাবি মুলুকের ইতিহাস বহু প্রাচীন। জেলার লালবাগ, হরিহরপাড়া, লালগোলা, ভগবানগোলা, নওদা, রঘুনাথগঞ্জ, সূতি প্রভৃতি এলাকায় আম চাষ করা হয়। সংশ্লিষ্ট এলাকার বাগান থেকে আম পাড়া শুরু হয়েছে। জেলার পাশাপাশি, ভিন রাজ্যেও আম পাঠানো হচ্ছে। তবে, আমের স্বাদ নিয়ে ক্রেতারা প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের একাংশ বলেন, এখানকার আমে আগের মতো স্বাদ বা গন্ধ নেই। বোম্বাই বা গোপালভোগ, হিমসাগর প্রভৃতি আম দেখেই বোঝা যায়, সেগুলি কার্বাইড দিয়ে পাকানো। সেগুলির কোনওটির একদিক পাকা, আর একদিক কাঁচা থাকে। কিছু আমে মিষ্টতা নেই, পানসে। আবার প্রতিটি আমের গায়ে বিভিন্ন রকম দাগ লেগে থাকছে। বোঁটার দিকটা শুকিয়ে কালো হয়ে যাচ্ছে। তাঁদের অভিযোগ, উদ্যানপালন দপ্তরের নজরদারির অভাবে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কাঁচা আম গাছ থেকে পাড়ছেন। তা কার্বাইড দিয়ে পাকিয়ে বাজারজাত করছেন। ফলে, এখানকার আম গুণগত মান হারাচ্ছে।
জেলা উদ্যানপালন আধিকারিক অবশ্য বলেন, আমের স্বাদ ধরে রাখতে ও গুণমাণ বাড়াতে চাষি ও ব্যবসায়ীদের নিয়মিত বোঝানো হচ্ছে। তাঁদের নিয়ে মাঝেমধ্যে কর্মশালাও করা হয়। আম পাকানোর ক্ষেত্রে কার্বাইডের ব্যবহার রুখতে সোমবার সারগাছি রামকৃষ্ণ মিশনে শতাধিক আম চাষিকে নিয়ে একটি কর্মশালা করা হয়। কার্বাইড ব্যবহার না করা এবং আমের প্যাকেজিং করা নিয়ে চাষিদের বোঝানো হয়। কাজেই, উদ্যানপালন দপ্তরের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ঠিক নয়।