মানসিক অস্থিরতার জন্য পঠন-পাঠনে আগ্রহ কমবে। কর্মপ্রার্থীদের যোগাযোগ থেকে উপকৃত হবেন। ব্যবসায় যুক্ত হলে শুভ। ... বিশদ
বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ে মালদহের শিক্ষামহল চরম বিরক্ত। সমস্যা সমাধানে উচ্চ শিক্ষা দপ্তরও তেমন কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। পুরো ঘটনায় রাজ্য সরকারের ভূমিকায় জেলার শিক্ষামহল হতাশ। অন্তত ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে অবিলম্বে বিষয়টি নিয়ে সরকার তথা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলে তাঁদের অভিমত। এব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বিপ্লব গিরি বলেন, ফিনান্স বিভাগ বিল তৈরি না করা পর্যন্ত বেতন হওয়া সম্ভব নয়। এখনও পর্যন্ত বেতন সংক্রান্ত কাগজপত্র প্রস্তুত করা হয়নি। তা প্রস্তুত না হওয়া পর্যন্ত আমি চেকে সই করতে পারি না। ফলে কবে বেতন হবে তাই এখন বলা সম্ভব নয়। এ প্রসঙ্গে পদত্যাগী ফিনান্স অফিসার ভাস্কর বাগচী বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বেতন সমস্যা মেটাতে রেজিস্ট্রারকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতেই হবে। অন্যথায় সমস্যা মিটবে না।
এদিকে রেজিস্ট্রার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার যাওয়া নিয়ে চাপানউতোর তেরি হয়েছে। আমি মালদহে রয়েছি বলে কোনও কোনও মহল গুজব রটাচ্ছে। তবে সোমবারও অশিক্ষক কর্মীদের দাবি-দাওয়া সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আমি উচ্চ শিক্ষাদপ্তরে যাতায়াত করেছি। ফলে কলকাতাতেই ওই কাজের জন্য আমাকে থাকতে হয়েছে। মালদহ যাওয়ার আগে জেলা পুলিস ও প্রশাসনকে জানাব। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলে আমাকে হেনস্থা করা হতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন মোতাবেক সমস্ত নথি ও ফাইলপত্র আমার হেফাজতে আমি রাখতে পারি। সেই ফাইল কখন কোথায় নিয়ে যাব, তা একান্তই আমার এক্তিয়ারভুক্ত। তা নিয়ে উপাচার্য ছাড়া আর কারও প্রশ্ন তোলার অধিকার নেই। বিষয়টি নিয়ে অযথা জলঘোলা করা হচ্ছে।
সারা বাংলা শিক্ষাবন্ধু সমিতির গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি শুভায়ু দাস বলেন, বেতন নিয়ে আমাদের কোনও মাথাব্যাথা নেই। দাবিপূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করব না। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে আমাদের সঙ্গে আলোচনায় বসার ব্যাপারে রেজিস্টার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু এদিন তাঁর দেখা পাইনি। বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি নিশ্চিন্তে আসতে পারেন। তাঁকে হেনস্থা করার প্রশ্ন নেই। আমরা বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধানের পক্ষে রয়েছি।
উল্লেখ্য, গত ১৯ নভেম্বর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মালদহ জেলা সফরে আসেন। মালদহ কলেজ অডিটোরিয়ামের প্রশাসনিক সভায় গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য স্বাগত সেনকে মুখ্যমন্ত্রী কয়েকটি বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করেন। ওই সময় উপাচার্য মুখ্যমন্ত্রীকে নেতিবাচক ভঙ্গিমায় উত্তর দেন। মুখ্যমন্ত্রী সকলের সামনে উপাচার্যের নেতিবাচক মানসিকতার সমালোচনা করেন। মুখ্যমন্ত্রী জেলা ছাড়ার পর স্থায়ীকরণ সহ অন্যান্য দাবিদাওয়া নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অশিক্ষক কর্মীরা কর্মবিরতি শুরু করেন। ওই দিনই উপাচার্যও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ছেড়ে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। তারপর থেকে তিনি আর মালদহমুখো হননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারও উপাচার্যের পিছু নেন। তিনিও তারপর থেকে আর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আসেননি। তারপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অফিসারও নিজের পদত্যাগপত্র উপাচার্যের ই-মেইলে পাঠিয়ে দেন। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন কর্মী-আধিকারিকেরই নভেম্বর মাসের বেতন হয়নি।
এব্যাপারে এক অধ্যাপক বলেন, মাস পয়লা বেতন পেলে আমাদের সুবিধা হতো। বেতন সময়ে না পাওয়ার ফলে পাওনাদারদের টাকা পাঠাতে পারছি না। তবে বেশি বেতনের শিক্ষক শিক্ষিরা যদিওবা পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছেন, চতুর্থ শ্রেণীর কর্মী ও করণিকরা চরম অর্থ সকটে পড়েছেন।