সপরিবারে অদূরবর্তী স্থানে ভ্রমণে আনন্দলাভ। কাজকর্মে কমবেশি ভালো। সাহিত্যচর্চায় আনন্দ। ... বিশদ
এই শিলদাতেই বিএসএফ ক্যাম্পে হামলা চালিয়েছিল মাওবাদীরা। নির্বিচারে জওয়ানদের গুলি করে মেরেছিল। ভোট এলেই জঙ্গলমহলে ঘুরেফিরে আসে সেই সব আতঙ্কের দিনের কথা। একজন বললেন, ‘চাওয়া পাওয়া তো আছেই। তবে, এখানে অনেকেই শান্তির কথা মাথায় রেখে ভোটটা দেন।’ জঙ্গলমহলের দিন বদলে খুশি দর্পশীলা গ্রামের বাবলু মান্ডি, জমেড়াশুলি গ্রামের সঞ্জয় মাণ্ডিরাও। তাঁদের কথায়, ‘শুধু শান্তিই ফেরেনি, মিটেছে পেটের জ্বালা। এখন বিনা পয়সায় রেশনের চাল পাই। মেয়েরা পায় লক্ষ্মীর ভাণ্ডার। আর চাষিরা কৃষকবন্ধু। তাই পাল্লা ভারী দিদিরই।’
বিনপুর বাসস্ট্যান্ডে চায়ের দোকানে বসেছিলেন বাবর খাঁ ও তাঁর সঙ্গীরা। বাবর বলেন, ‘আমরা প্রথম থেকে সিপিএম করি। ২০১৮ সালে অনেক আশা নিয়ে বিজেপিকে ভোট দিয়েছিলাম। পঞ্চায়েত পেয়েছিল বিজেপি। কিন্তু ওরাও তৃণমূলের মতো চুরি করল। তাই এবার হারিয়ে দিয়েছি। এখন আমরা ফের সিপিএম। এবার হাল ফিরবে লালের।’ তাঁর কথায় সায় দিলেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক বিনয় মিশ্র। বললেন, ‘সিপিএমের সমর্থকরা সরে যাওয়ায় বিজেপিতে এখন ভাটার টান। বিনপুর পঞ্চায়েতটাও বিজেপির হাতছাড়া হয়েছে।’ ‘হাওয়া’ যে আগের মতো নেই, সেকথা মানছেন বিজেপির ঝাড়গ্রাম জেলার সম্পাদক দীনবন্ধু কর্মকার। তাঁর দাবি, গতবারের মতো হইহই ব্যাপারটা হয়তো নেই। কিন্তু মানুষের হৃদয়ে আছে বিজেপি। এবারও আমরাই ঝাড়গ্রামে জিতব।
ঝাড়গ্রাম শহর থেকে বেলপাহাড়ী যাওয়ার পথে ফ্লাইওভার থেকে নামলেই পেট্রল পাম্প। পাশেই বুদ্ধদেব দাসের ফলের দোকান। একুশের ভোটের আগে বুদ্ধদেব বলেছিলেন, ‘হাওয়া বিজেপির দিকে। কিন্তু লড়াই হবে জোর।’ তিন বছর পর সেই বুদ্ধদেবের সামনে একই প্রশ্ন, এবার হাওয়া কোন দিকে? একটুও সময় নিলেন না বুদ্ধদেব। বললেন, ‘তৃণমূলের দিকে।’ দোকানের পাশেই দাঁড়িয়েছিলেন বাঁকুড়ার রাইপুরের সুশান্ত সাহু। সাংবাদিক বুঝতে পেরে বললেন, ‘এবার জঙ্গলমহলজুড়ে তৃণমূলের হাওয়া। আর হবে নাই বা কেন? রেশন, কৃষকবন্ধু থেকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার কোনও কিছুই বাদ নেই।’
ঝাড়গ্রামের বিধায়ক বীরবাহা হাঁসদার কথায়, জঙ্গলমহলে শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিনা পয়সায় রেশন দেওয়ায় এলাকার মানুষকে আর উদরপূর্তির জন্য পিঁপড়ের ডিম খেতে হয় না। গত লোকসভা ভোটে বিজেপির মিথ্যে প্রচারে অনেকে বিভ্রান্ত হয়েছিলেন। এখন তাঁরা সত্যিটা বুঝেছেন। আমাদের উদ্দেশ্য, ভোটের মার্জিনটা বাড়িয়ে নেওয়া।
উনিশের ভোটে ঝাড়গ্রামে জিতেছিল বিজেপি। তা সত্ত্বেও বীরবাহা হাঁসদা কেন বলছেন, জয়ের মার্জিন বাড়ানোই লক্ষ্য! তার কারণ লোকসভার অন্তর্গত সাতটি বিধানসভা আসনেই একুশে জিতেছে রাজ্যের শাসক দল। তাই স্নায়ুযুদ্ধে ঝাড়গ্রামে বিজেপির চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে তৃণমূল।