উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ যোগ। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
দেশের স্বল্প সঞ্চয় সংক্রান্ত বিষয়ে হিসেব রাখা ও নির্দেশিকা জারি করার দায়িত্বের অনেকটাই পালন করে ন্যাশনাল সেভিংস ইনস্টিটিউট। তাদেরই একটি সূত্র বলছে, গত আর্থিক বছরের শেষে গোটা দেশে স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পগুলি থেকে আদায় হয়েছে প্রায় ৫ লক্ষ ৫০ হাজার ৯১৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে শুধু পশ্চিমবঙ্গ থেকে এসেছে প্রায় ৮২ হাজার ৮৪৮ কোটি টাকা। এটাই দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ। এরপর আছে উত্তরপ্রদেশ। সেই রাজ্যে সঞ্চয়ের মোট অঙ্ক প্রায় ৬৭ হাজার ৭৯৬ কোটি টাকা। তৃতীয় স্থানে গুজরাত। সেখানে জমা পড়েছে প্রায় ৪৪ হাজার ৬৬৮ কোটি টাকা। মহারাষ্ট্র নিঃশ্বাস ফেলছে গুজরাতের গায়ে। সেখানে মোট স্বল্প সঞ্চয় প্রায় ৪৪ হাজার কোটি টাকা। প্রায় ২৯ হাজার ৪৯৫ কোটি টাকা জমা করে পঞ্চম স্থানে আছে তামিলনাড়ু।
বিভিন্ন প্রকল্পে জমা করা টাকার মধ্যে যেগুলির মেয়াদ গত আর্থিক বছরে উত্তীর্ণ হয়েছে, সেই টাকা গ্রাহককে ফিরিয়ে দিয়েছে সরকার। তারপর এই রাজ্যের হাতে গত আর্থিক বছরে নিট জমা হয়েছে প্রায় ১৪ হাজার ৫৩৯ কোটি টাকা। এই অঙ্কেও দেশের সেরা পশ্চিমবঙ্গ। এরপর রয়েছে তামিলনাড়ু। তাদের নিট সঞ্চয়ের পরিমাণ প্রায় ১০ হাজার ৪৪৮ কোটি টাকা। মেয়াদ শেষে টাকা ফিরিয়ে গোটা দেশে নিট সঞ্চয়ের অঙ্ক প্রায় ১ লক্ষ ৭ হাজার ৪০৭ কোটি টাকা।
একটা সময় ছিল, যখন রাজ্যের স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পগুলি থেকে যে আদায় হতো, তার উপর ভিত্তি করে ঋণ নিত রাজ্যগুলি। বাম আমলে নেওয়া ঋণের মূল ভিত্তিই ছিল স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্প। সেই কারণেই অর্থদপ্তরের আওতায় থাকা স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্প বিভাগকে বিশেষ গুরুত্ব দিত রাজ্য সরকার। কিন্তু সেই নিয়ম থেকে সরে এসে এখন যেহেতু বাজার থেকে ধার নেয় রাজ্য প্রশাসন, তাই স্বল্প সঞ্চয় বিভাগটিকে ততটা গুরুত্ব দেওয়া হয় না, এমনটাই অভিযোগ করেন এ রাজ্যের ডাকঘর এজেন্টরা।
তাহলে সঞ্চয় প্রকল্পে নিজেদের জায়গা পয়লা নম্বরে ধরে রাখল কী করে রাজ্য? ওয়েস্ট বেঙ্গল স্মল সেভিংস এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নির্মল দাস বলেন, চিটফান্ডকাণ্ডের পরবর্তী সময়ে এ রাজ্যে টাকা জমানোর জন্য সরকারি সঞ্চয় প্রকল্পগুলিতেই আস্থা রেখেছেন মানুষ। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার যেভাবে পরপর সাতবার সুদ কমিয়েছে, তাতে গ্রাহকরা অনেকটাই নির্লিপ্ত ছিলেন প্রকল্পগুলি নিয়ে। কমানো হয়েছে এজেন্টের কমিশনও। তবুও এত টাকা সঞ্চয় প্রকল্পে আসায় এজেন্টদের অবদানই যে সবচেয়ে বেশি, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। অথচ আমাদের নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই। আমরা আশা করব, স্মল সেভিংস-এ টাকা জমা রাখায় উৎসাহের কথা বিচার করে রাজ্য সরকার আমাদের পাশে দাঁড়াবে। কারণ এজেন্সি দেওয়া থেকে তার নবীকরণ বা সঞ্চয় প্রকল্পের প্রচার— সবকিছুই রাজ্য সরকারের আওতায়।