আত্মবিশ্বাস এত বৃদ্ধি পাবে যে, কোনও কাজই কঠিন মনে হবে না। সঞ্চয় বেশ ভালো হবে। ... বিশদ
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার সকালে বোনকে সাইকেলে চাপিয়ে টিউশানিতে ছাড়তে যাচ্ছিল অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র মহম্মদ সাদেক। তাদের বাড়ি পাঁচবেড়িয়া কাজি মহল্লায়। বাসস্ট্যান্ডের কাছ দিয়ে যখন তারা যাচ্ছিল, সেই সময় পাশের বস্তির কিছু ছেলে ঘুড়ি ওড়াচ্ছিল। চীনা মাঞ্জার সুতো সাদেকের গলায় পেঁচিয়ে যায়। সে চিৎকার করে সুতো টানতে বারণ করে। কিন্তু, সুতোয় টান পড়ায় তার গলার বেশ কিছুটা অংশ কেটে যায়। বোনের চিৎকারে ছুটে আসে বাড়ির লোকজন। জড়োয় হয় স্থানীয় বাসিন্দারাও। সঙ্গে সঙ্গে তাকে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু, বাঁচানো যায়নি। এই ঘটনায় শহরজুড়ে তীব্র ক্ষোভ দেখা দেয়। চীনা মাঞ্জা দেওয়া সুতোর বিক্রি বন্ধের দাবিতে অনেকেই সোচ্চার হন। জনতার ক্ষোভ সামাল দিতে বেগ পেতে হয় পুলিসকে। যার সুতোয় ওই স্কুলছাত্রের গলা কেটে মৃত্যু হয়, পুলিস তাকে আটক করে পরিস্থিতি সামলা দেয়।
মঙ্গলবারই অতিরিক্ত পুলিস সুপার জানিয়ে ছিলেন, চীনা মাঞ্জা দেওয়া সুতো বিক্রি বন্ধ করতে অভিযান চালানো হবে। বাসিন্দাদের সচেতন করারও উদ্যোগ নেওয়া হবে। সেই মতো এদিন খড়্গপুর টাউন থানার আইসি রাজা মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পুলিসের একটি দল শহরের বিভিন্ন বাজারে অভিযান চালায়। গোলবাজার, খরিদা, আজাদবস্তি সহ অনেকগুলি বাজারের ঘুড়ির দোকানে হানা দেয় পুলিস। তবে কোথাও চীনা মাঞ্জা দেওয়া সুতো পাওয়া গিয়েছে কি না, সে ব্যাপারে অন্ধকারে আছে পুলিস। কেননা পুলিসও চিনা মাঞ্জা সম্বন্ধে সেভাবে অবগত নন। কিছু দোকানে লাটাইয়ে প্যাঁচানো ঘুড়ির সুতো পাওয়া যায়। নমুনা হিসেবে সেই সব সুতো বাজেয়াপ্ত করা হয়। সতর্ক করে দেওয়া হয় ব্যবসায়ীদের। যাতে তারা কোনওভাবেই চীনা মাঞ্জা দেওয়া সুতো বিক্রি না করেন।
প্রসঙ্গত, এই সুতো দামে সস্তা হওয়ায় বাজারে চাহিদা রয়েছে। এই সুতো হয় নাইলনের। সিন্থেটিক আঠা দিয়ে ধাতুর মাঞ্জা দেওয়া হয়। সুতো এতটাই শক্ত, যে টানলে সহজে ছেঁড়ে না, বরং সরু হয়ে যায়। যা খুবই ধারালো হয়। শনি, ডায়মন্ড, রাজা সহ নানা নামে এই সুতো পরিচিত। সুতো ৮০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন দরের হয়। বিপজ্জনক এই সুতোর প্যাঁচে পড়ে ইতিমধ্যেই রাজ্যের বেশকিছু জায়গায় কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। ফলে, বহু জায়গাতেই এই সুতোর বিক্রি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
পুলিস জানিয়েছে, এদিন বাজেয়াপ্ত হওয়া সুতো চীনা মাঞ্জা দেওয়া কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে। কোন দোকান থেকে কোন সুতো বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, তার একটি তালিকাও তৈরি করা হয়েছে। যদি পরীক্ষা করে চীনা মাঞ্জার সুতো পাওয়া যায়, তাহলে সংশ্লিষ্ট দোকানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।