ব্যবসায় বাড়তি বিনিয়োগ প্রত্যাশিত সাফল্য নাও দিতে পারে। কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতি শ্বাসকষ্ট ও বক্ষপীড়ায় শারীরিক ক্লেশ। ... বিশদ
করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কয়েক হাজার শ্রমিক জেলায় ফিরেছেন। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ভিনরাজ্য থেকে ফেরা শ্রমিকদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার জন্য প্রশাসনের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোনও কারণে তাঁদের মধ্যে কেউ করোনা আক্রান্ত হয়ে থাকলে যাতে তাঁর থেকে জেলাবাসীর মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে না পড়ে, সেজন্যই এই উদ্যোগ বলে স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে। অভিযোগ, ঘরে ফেরা শ্রমিকদের মধ্যে অনেকেই প্রশাসনের নির্দেশে তা মানছেন না। তাঁরা এলাকায় যত্রতত্র ঘুরে বেড়াচ্ছেন। একে অন্যের সংস্পর্শে আসছেন। সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং না মানার ফলে করোনার মতো সংক্রামক রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই অবস্থায় মালদহ জেলা পুলিসের তরফে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। করোনা ছড়িয়ে পড়া আটকাতে পুলিসকর্মীরা ভিনরাজ্য থেকে আসা শ্রমিকদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন। ঘরে ঘরে গিয়ে তাঁরা শ্রমিকদের সাবধান করে দিচ্ছেন। বাড়ির লোককেও এ ব্যাপারে সতর্ক করে দেওয়া হচ্ছে।
এ ব্যাপারে মালদহের পুলিস সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, এখনও পর্যন্ত জেলায় ৫৭০০ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। পাশাপাশি ১৩০০ জনকে প্রশাসনের তরফে তৈরি করা কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে রাখা হয়েছে। প্রশাসন তথা সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী সকলকে চলতে হবে। কোনওভাবেই কোয়ারেন্টাইন ভেঙে যত্রতত্র ঘুরে বেড়ানো যাবে না। এইরকম কাজ করলে পুলিস আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। তিনি আরও বলেন, ভিনরাজ্য থেকে আসা শ্রমিকরা যথাযথভাবে প্রশাসনের নির্দেশ পালন করছেন কিনা তা দেখার জন্য পুলিস বাড়ি বাড়ি ঘুরছে। এ ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করছেন পুলিসকর্মীরা। প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট বাড়ির লোকজনের সঙ্গেও পুলিস কথা বলছে। তাঁদেরও এ ব্যাপারে সতর্ক করে দেওয়া হচ্ছে।
মালদহ মেডিক্যাল কলেজের এমএসভিপি ডাঃ অমিত দাঁ বলেন, এ জেলায় এখনও পর্যন্ত করোনা পজিটিভ রোগীর সন্ধান মেলেনি। তবে আত্মতুষ্টির কোনও জায়গা নেই। ভিনরাজ্য থেকে আসা হাজার হাজার শ্রমিকের মধ্যে কেউ করোনা ভাইরাস বহন করে আসছেন না, তা হলফ করে বলা যাবে না। ফলে আপাতত তাঁদের পৃথকভাবে থাকা উচিত। এ ব্যাপারে প্রশাসন তথা স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশিকা ও পরামর্শ মেনে চলতে হবে।
উল্লেখ্য, মালদহের বহু শ্রমিক ভিনরাজ্যে কাজ করেন। অনেকে আবার বিদেশেও শ্রমিকের কাজ করতে যান। বাগিচা, কার্পেট শিল্পে কাজ করার মতো দক্ষ শ্রমিকের জোগান মূলত মালদহ দিয়ে থাকে। উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের পাশাপাশি পশ্চিম ভারতের রাজ্যগুলিতেও এ জেলার শ্রমিকরা কাজ করেন। তার মধ্যে কেরল, তামিলনাড়ু ও মহারাষ্ট্র উল্লেখযোগ্য। আর ওই তিনটি রাজ্যেই সবচেয়ে বেশি লোক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। করোনা ভাইরাসের প্রকোপ ওইসব রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই দল বেঁধে শ্রমিকরা জেলায় ফিরতে শুরু করেন। তাঁরা ট্রেনেই মূলত বাড়ি ফেরেন। লকডাউন শুরুর আগেই দলে দলে শ্রমিকরা ফিরে আসেন। অনেকে তারপরেও নানাভাবে বাড়ি ফেরেন। সম্প্রতি জেলায় ফেরা শ্রমিকদের নিয়েই প্রশাসনের আধিকারিকরা চিন্তিত। কারণ, তাঁদের মাধ্যমে রোগ ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এক পুলিস আধিকারিক বলেন, আমরা বাড়ি বাড়ি যাওয়ার সময় অনেকেই ভিন রাজ্য থেকে আসার বিষয়টি লুকোচ্ছেন। কোয়ারেন্টাইন সেন্টার এড়ানোর জন্যই তাঁরা তা করছেন। বাড়িতেও তাঁরা নিয়ম মানছেন না। তবে ভিলেজ পুলিস ও সিভিক ভলান্টিয়ারদের মাধ্যমে আমরা এলাকায় নজরদারি চালাচ্ছি। পাশাপাশি পুলিসের টহলদারি ভ্যানও এলাকায় ঘুরছে।