নিউ ইয়র্ক: ঘুষ দেওয়ার তথ্য গোপন রাখতে ব্যবসায়িক নথি জাল সংক্রান্ত মামলায় দোষী সাব্যস্ত প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার এই রায় দিয়েছে নিউ ইয়র্কের একটি আদালত। সংশ্লিষ্ট মামলায় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনা ৩৪টি অভিযোগই প্রমাণিত হয়েছে বলে জানিয়েছে ১২ সদস্যের জুরি। সাজা ঘোষণা আগামী ১১ জুলাই। আমেরিকার ইতিহাসে প্রথমবার কোনও প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ফৌজদারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলেন। নভেম্বর মাসে আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। প্রাথমিক লড়াইয়ে জো বাইডেনের থেকে বেশ কিছুটা এগিয়ে রয়েছেন সত্তরোর্ধ্ব ট্রাম্প। তার মধ্যেই এবার ঘুষ কাণ্ডে দোষী প্রমাণিত হলেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। অভিযোগ, পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসের মুখ বন্ধ রাখতে তাঁকে ১ লক্ষ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার ঘুষ দিয়েছিলেন ট্রাম্প। সেই তথ্য গোপন রাখতে নিজের সংস্থার নথিতে জালিয়াতি করেছিলেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে রিপাবলিকান নেতার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। তবে সেদেশের আইন অনুযায়ী, জেলে যেতে হলেও ভোটে লড়তে ট্রাম্পের কোনও অসুবিধা হবে না। আমেরিকার সংবিধান জানাচ্ছে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দাঁড়াতে গেলে নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে তিনটি শর্ত পূরণ করতে হবে। সেখানে বলা হয়েছে, মার্কিন নাগরিক হওয়ার পাশাপাশি প্রার্থীর বয়স কমপক্ষে ৩৫ বছর হতে হবে। ১৪ বছর বসবাস করতে হবে আমেরিকায়। তাই ফৌজদারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া সত্ত্বেও সর্বোচ্চ পদের জন্য দিব্যি লড়তে পারবেন ট্রাম্প। তবে নিউ ইয়র্কে জেল হলে ফ্লোরিডায় নিজের ভোট তিনি দিতে পারবেন না। রায় ঘোষণা পর সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ‘আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ। শেষ সিদ্ধান্ত নেবেন ভোটাররা। এই রায় অত্যন্ত অসম্মানজনক।’
২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় স্টর্মি দাবি করেন, তাঁর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছিলেন ট্রাম্প। তখন পর্ন তারকার মুখ বন্ধ রাখতে তাঁকে মোটা টাকা ঘুষ দেন এই রিপাবলিকান নেতা। অভিযোগ, সেই তথ্য গোপন রাখতে ব্যবসায়িক নথিতে জালিয়াতি করেছিলেন ট্রাম্প। চলতি সপ্তাহে নিউ ইয়র্কে মামলার শুনানি হয়। দু’দিন ১১ ঘণ্টা ধরে সবকিছু খতিয়ে দেখে ১২ সদস্যের জুরি। অবশেষে বৃহস্পতিবার ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। সংশ্লিষ্ট মামলায় জরিমানার পাশাপাশি প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের জেল পর্যন্ত হতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞ মহলের মতে, বয়স সহ একাধিক বিষয় মাথায় রেখে ট্রাম্পকে ছাড় দিতে পারে আদালত। শুরু থেকেই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সাজা ঘোষণার আগেই এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন ট্রাম্প।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আদালতের এই পদক্ষেপকে প্রচারের অস্ত্র করেছেন জো বাইডেন। প্রতিদ্বন্দ্বীকে আক্রমণ করে বাইডেন সমর্থকরা বলেন, ‘কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নন। দেশের গণতন্ত্রের জন্য সবথেকে বেশি ক্ষতিকারক ট্রাম্প।’