নিকট বন্ধু দ্বারা বিশ্বাসঘাতকতা। গুরুজনের স্বাস্থ্যহানি। মামলা-মোকদ্দমায় পরিস্থিতি নিজের অনুকূলে থাকবে। দাম্পত্য জীবনে ভুল বোঝাবুঝিতে ... বিশদ
এইমসের রাজকুমারী ওপিডি বিল্ডিংয়ের ন’তলায় কোভিভ ভ্যাকসিন সেন্টারে প্রধানমন্ত্রীর বাঁ হাতে ফোটানো হল সূচ। টিকা নিয়ে মজাও করলেন প্রধানমন্ত্রী। পুদুচেরির যে নার্স নরেন্দ্র মোদিকে টিকা দিলেন, তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আমাদের মতো রাজনৈতিক নেতাদের চামড়া কিন্তু মোটা। তাই গোরুদের টিকা দেওয়ার মোটা সূচ ব্যবহার করছেন না তো?’ শুনে হেসে ফেলেন নার্স নিবেদিতা। জবাব দেন, ‘না স্যার, সরু সূচই।’ নিবেদিতা ছাড়াও পাশে ছিলেন কেরলের বাসিন্দা নার্স রোসাম্মা অনিল।
প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া হল আইসিএমআরের তত্ত্বাবধানে ভারত বায়োটেকের তৈরি সম্পূর্ণ দেশীয় টিকা ‘কোভ্যাকসিন’। ওই ভ্যাকসিনের নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা নিয়ে সমালোচনায় সরব হয়েছিল কংগ্রেস সহ বিরোধীরা। তার জবাব দেওয়ার পাশাপাশি সাধারণের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়াতেই নরেন্দ্র মোদি ‘কোভ্যাকসিন’ নিলেন বলে ওয়াকিবহাল মহলের মত। যদিও কাকে কোন কোম্পানির ভ্যাকসিন দেওয়া হবে, তা প্রাপক ঠিক করতে পারেন না। নরেন্দ্র মোদির ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। নয়াদিল্লির এইমসে করোনার টিকাকরণে ‘কোভ্যাকসিন’ই দেওয়া হচ্ছে। সিরাম ইনস্টিটিউটের ‘কোভিশিল্ড’ নয়।
ভ্যাকসিন নেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী ডাক্তার ও নার্সদের ভূয়সী প্রশংসা করেন। ট্যুইট করে দেশকে করোনা মুক্ত করার লক্ষ্যে ভ্যাকসিন পাওয়ার যোগ্য নাগরিকদের টিকা নেওয়ার আহ্বানও জানান। প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও এদিন নয়াদিল্লির এইমসে গিয়ে ভ্যাকসিন নেন প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, প্রধানমন্ত্রীর প্রধান বৈজ্ঞানিক পরামর্শদাতা বিজয় রাঘবন। চেন্নাইয়ের সরকারি কলেজে টিকা নেন উপ রাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডু। মেদান্ত হাসপাতালে টিকা নেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আজ মঙ্গলবার টিকা নেবেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডাঃ হর্ষ বর্ধন। সোমবার স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, গণ টিকাকরণে প্রথম দিন নাম রেজিষ্ট্রেশন হয়েছে সাড়ে ২৪ লক্ষ সাধারণ নাগরিকের। ভ্যাকসিন পেয়েছেন ষাটোর্ধ্ব ১ লক্ষ ২৮ হাজার ৬৩০ জন। ৪৫-৫৯ বয়সি কোমরবিড ১৮ হাজার ৮৫০ জনকেও টিকা দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রীর টিকা নেওয়ার বিষয়টিকে যেভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করা হচ্ছে, তা নিয়ে সমালোচনায় সরব হয়েছে কংগ্রেস। মাস্কহীন নরেন্দ্র মোদির টিকা নেওয়ার ছবি দেখে কটাক্ষ করেছে তৃণমূলও। ভ্যাকসিন নিতে গিয়েও নরেন্দ্র মোদি ‘কৌশলে’ ভোটমুখী রাজ্যে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেছেন বলেও উঠছে অভিযোগ। কেরল, পুদুচেরির দুই নার্স ছাড়াও ভ্যাকসিন নেওয়ার সময় মোদির গলায় ছিল অসমের গামছা। এই দৃশ্য দেখে লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী টিকা নিতে গিয়েও ভোটের প্রচার করছেন! হাতে রবীন্দ্রনাথের একটা ‘গীতাঞ্জলি’ বই নিয়ে বসলেই তো হতো! কটাক্ষ তাঁর। তৃণমূলের রাজ্যসভার এমপি তথা ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সভাপতি ডাঃ শান্তনু সেন সমালোচনার সুরে বলেছেন, প্রোটোকলের চেয়ে ছবি তোলাই আগে। তাই মুখে মাস্ক নেই প্রধানমন্ত্রীর। ময়ুরকে দানা খাওয়ানো আর ভ্যাকসিন নেওয়া এক জিনিস নয়...।