নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বাংলায় রাজনৈতিক পট-পরিবর্তনের সন্ধিক্ষণে তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি ভাঙার ইঙ্গিত দিচ্ছেন গেরুয়া শিবিরের নেতারা। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের (আরএসএস) শ্রমিক সংগঠন ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘ (বিএমএস) নেতৃত্বের দাবি, কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদি সরকার একক ক্ষমতায় এসেছে। বাংলায় বিজেপির এমপি সংখ্যা দুই থেকে একলাফে বেড়ে ১৮ হয়েছে। পদ্ম শিবিরের এহেন উত্থানে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে আইএনটিটিইউসি’র নেতা-কর্মীরা বিএমএসে যোগ দেওয়ার আবেদন জানাচ্ছেন। এ প্রসঙ্গে বিএমএসের রাজ্য পর্যবেক্ষক গণেশ মিশ্র বলেন, রাজ্যে বিজেপির আশাতীত সাফল্যের পর বিভিন্ন জেলা থেকে এ ধরনের বার্তা পাচ্ছি। তবে এখনই চোখ-কান বুজে সবাইকে বিএমএসে নেওয়া হবে না। আগামী ১৫-১৬ জুন এ নিয়ে আমরা বৈঠকে বসব, তারপরই আইএনটিটিইউসি কিংবা আইএনটিইউসি থেকে যাঁরা আসতে চান, তাঁদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব। মধ্যপ্রদেশের এই প্রাক্তন প্রচারক আরও বলেন, আমাদের সংগঠন করতে হলে ভিন্ন সংগঠন থেকে আসা নেতা-কর্মীদের বিএমএসের আদর্শে নিজেদের পরিবর্তন করে নিতে হবে।
এ বিষয়ে আইএনটিটিইউসি’র রাজ্য সভানেত্রী দোলা সেন কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। যদিও আইএনটিইউসি’র রাজ্য সভাপতি কামারুজ্জামান কামার বলেন, সারা দেশে আমরাই একমাত্র কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন যারা বিজেপির এই আগ্রাসী নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করছি। তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন এই রাজনৈতিক পালাবদলে ভঙ্গুর হয়ে গেলেও আইএনটিইউসি’র কোনও নেতা-কর্মী কখনওই বিএমএসে যোগ দেবেন না বলেও আশাবাদী কামার সাহেব। তাঁর দাবি, কেন্দ্রীয় সংস্থা কিংবা অফিসগুলিতে তৃণমূলের আইএনটিটিইউসি’র কোনও অস্তিত্ব নেই। রাজ্যে একমাত্র পোর্ট ট্রাস্টে গায়ের জোরে ওদের প্রতিনিধিত্ব ছিল। কিন্তু লোকসভা ভোটে শোচনীয় হারে এবার তাও তৃণমূল হারাবে বলে মনে করেন তিনি। আইএনটিইউসি’র রাজ্য সভাপতি আরও বলেন, দোলা সেন এবং তার বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব মারাত্মক আকার নিয়েছে। যে কোনও দিন এই সংগঠন ভেঙে যাবে। পাশাপাশি নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে কামার সাহেবের দাবি, দেশের প্রায় ৮৪ হাজার কোটি টাকার রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে বিক্রি করে দেওয়ার চক্রান্ত শুরু করেছে বিজেপি সরকার। যার জেরে কয়েক লক্ষ মানুষ চাকরি হারানোর আশঙ্কায় ভুগছেন। আইএনটিইউসি সংশ্লিষ্ট সমস্ত পক্ষের পাশে দাঁড়িয়ে এই জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবে।