একাধিক সূত্রে অর্থপ্রাপ্তি ও ঋণশোধে মানসিক ভাব মুক্তি। নিজ বুদ্ধি ও দক্ষতায় কর্মোন্নতি ও সুনাম। ... বিশদ
ঠাকুরবাড়ির গায়েই মেলার মাঠ। পাশ দিয়ে এগিয়েছে বিস্তীর্ণ রেল লাইন। পড়ন্ত বিকেলে আশপাশের বহু মানুষ স্বস্তির খোঁজে লাইনের পাড়ে এসে বসেন। সেই আড্ডায় বসা মাঝবয়সি সুবীর বিশ্বাস, সুখেন হালদার সহ অনেকেই ফুলচাষের আলোচনা ব্যস্ত। ভোটের কথা বলতেই কৌতূহলী চাহনি। ঠাকুর জিতবেন প্রশ্নে অনেকেরই মুখে কুলুপ। পাশে দাঁড়ানো গৃহবধূ সবিতা মণ্ডল বলেন, ‘রেল লাইন টপকে আমাদের ওপারে যেতে হয়। গত ভোটে ঠাকুর বলেছিলেন, খ্রিস্টান পাড়ার গির্জার সোজা রেল লাইনের নীচ দিয়ে আন্ডার পাস হবে। না হলে রেল গেট বানিয়ে দেবেন। কিছুই তো হয়নি! এই ঠাকুরের দেখা পেতে কত কাঠখড় পোড়াতে হয় জানেন?’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আর এক ব্যক্তি বলেন, ‘সন্ধ্যায় কত ছেলে এখানে বসে। বছর দুয়েক আগে ট্রেন দুর্ঘটনায় দু’জন মারা গিয়েছিল। প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। উনি নিজের উন্নয়ন ছাড়া, এলাকার কোন উন্নয়নটা করেছেন? পঞ্চায়েতটা অন্তত ছাড়তে পারতেন। সেখানেও ঠাকুরবাড়ির কর্মীকে দাঁড় করাবেন? গ্রামে আর কেউ ছিল না?’
পঞ্চায়েতের ফল কেমন ছিল? গাইঘাটা ব্লকের ইছাপুর-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে পড়ে ঠাকুরবাড়ি। এই পঞ্চায়েতে মোট ৩০টি আসন। তার মধ্যে তৃণমূল ১৫টি, বিজেপি ১৪টি ও সিপিএম একটি আসন পেয়েছে। কিন্তু সাংসদ শান্তনু ঠাকুর, তাঁর ভাই তথা গাইঘাটার বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর ভোট দেন ঠাকুরনগর আর পি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪২ নম্বর বুথে। পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূল প্রার্থী করেছিল রীতা মণ্ডলকে। বিজেপির তরফে প্রার্থী হয়েছিলেন শ্রেষ্ঠা মৃধা। তিনিই সেই ঠাকুরবাড়ির কর্মী। শান্তনুবাবুর অত্যন্ত আস্থাভাজন। তাঁর জয়লাভ নিশ্চিত করতে শান্তনুবাবুরা সপরিবারে মাঠে নেমেছিলেন। ফল? রীতাদেবী পান ৫২১ ভোট, শ্রেষ্ঠাদেবী পেয়েছিলেন ২৬৫ ভোট ও সিপিএম প্রার্থী কল্পনা বিশ্বাস ৭০ ভোট। রীতাদেবীর জয়ের ব্যবধান ২৫৬। গাইঘাটা ব্লকে মোট ১৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত। তার মধ্যে একমাত্র ফুলসরা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান আসনটি টসে জয়লাভ করেছে বিজেপি। উপ প্রধান আসন তৃণমূলের। বাকি ১২টি গ্রাম পঞ্চায়েত বাংলার শাসকেরই দখলে। আত্মবিশ্বাসী তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, এবার গাইঘাটা ব্লকে হাওয়া ঘুরে গিয়েছে। নিজের ঘরেই কয়েক গোলে হারবেন শান্তনুবাবু। বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি দেবদাস মণ্ডল বলেন, ‘সারা বাংলার মতো বনগাঁ লোকসভা এলাকায় পঞ্চায়েত ও পুরসভা ভোট লুট হয়েছে। মানুষ নিজের ভোট নিজে দিতে পারলে তৃণমূলের কোনও অস্তিত্ব এলাকায় থাকবেনা। শান্তনুবাবু গাইঘাটা থেকে বিপুল ভোটে জয় পাবেন।’