বিদ্যায় সাফল্য ও হতাশা দুই-ই বর্তমান। নতুন প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠবে। মামলা-মোকদ্দমার কোনও পরিবেশ তৈরি ... বিশদ
প্রযোজনা: হরিপাল অন্যভুবন
পরিচালনা: শতাব্দী কোলে
প্রত্যন্ত একটি গ্রামে বাবা মায়ের সঙ্গে বাস অভির। একটি অখ্যাত অনামী স্কুলে অভির পড়াশোনা। কিন্তু স্কুল যাই হোক না কেন পড়াশোনায় অভি অত্যন্ত ভালো আর কৃতী ছাত্র হওয়ার সুবাদে গ্রামের মানুষ তাকে একটু অন্যরকমভাবে দেখে। অর্থাৎ ভালোছেলের মর্যাদায় ভূষিত অভি। অভির গৃহশিক্ষক (নাটকে ব্যবহৃত নাম মাস্টারমশাই) অভির আদর্শ। সেই মাস্টারমশাইয়ের লালনে অভির বেড়ে ওঠা। মাস্টারমশাই ছিলেন নকশাল আন্দোলনের একজন সক্রিয় কর্মী। অতি বাম রাজনীতিতে বিশ্বাস করে এসেছেন আজীবন। মাস্টারমশাইয়ের একটা অসম্ভব প্রভাব ছেলেবেলা থেকেই অভির মধ্যে পড়তে থাকে। পুরোপুরি নকশাল আদর্শে প্রভাবিত না হলেও দেশ গড়ার একটা স্বপ্ন মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকে। স্বচ্ছ সমাজের ভাবনায় তৈরি করতে থাকে নিজেকে। ইতিমধ্যে স্কুলের পাঠ শেষ করে উচ্চশিক্ষার জন্য কলকাতায় চলে এসেছে অভি। ভর্তি হয়েছে কলকাতার নামী কলেজে। অভির গ্রামের তুলনায় এ শহর অনেক বড়। অনেক বড় আঙ্গিক। আর তার থেকেও বড় হল রাজনৈতিক এবং সামাজিক দুর্নীতি। রাজনৈতিক নেতাদের মদতে কলেজের ভিতরে দুর্নীতির জাল ধরে ফেলে অভি। কলেজ পড়ুয়াদের দিয়ে খানিকটা জোর করেই ড্রাগের ব্যবসার মতো আরও অনেক অসাধু কাজ অভির চোখের সামনে আসতে থাকে। প্রতিবাদী হয়ে ওঠে অভি। দেশ গড়ার স্বপ্নকে মাথায় রেখেই রুখে দাঁড়ায় অভি। প্রতিবাদে সরব হয়। আর সেখানেই শুরু গন্ডগোলের। দিনে দিনে রাজনৈতিক নেতাদের চক্ষুশূল হয়ে ওঠে অভি। পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। গা-ঢাকা দিতে হয়। কিন্তু তাতেও খুব লাভ হয় না অভির। শেষ পরিণতি হিসাবে অভিকে খুন হতে হয় দুষ্কৃতীদের হাতে। এই কাহিনীর আধারে হরিপাল অন্যভুবন নাট্যগোষ্ঠীর নবতম প্রযোজনা নীলরতন সামন্তের লেখা ‘অশান্ত ঘূর্ণি’। নাটকের মুখ্য চরিত্র অভির ভূমিকায় ইন্দ্রনীল লাহা বেশ সাবলীল। দিনুর ভূমিকায় সৈকত দাস মোটামুটি। মাস্টারমশাই এবং বাবার ভূমিকায় তরুণকুমার ঘোষ এবং উজ্জ্বল দাস সাবলীল। কিন্তু মায়ের ভূমিকায় শাশ্বতী মুখোপাধ্যায় খুবই দুর্বল অভিনয়ের সাক্ষ্য বহন করেছেন। পরিশেষে বলা যায় হরিপাল অন্যভুবন নাট্যগোষ্ঠীর ভালো প্রযোজনা করবার ইচ্ছা বা প্রয়াস রয়েছে কিন্তু প্রয়োগে অপেশাদারিত্বের ছাপ। একজন শিশু অভিনেতাকে দেখা গেল মাঝে মাঝে মঞ্চে অভিনয় করছেন এবং মাঝে মাঝে দর্শক আসনে বসছেন এবং ছবি তুলছেন। ভালো প্রযোজনার স্বার্থে পেশাদারি মনোভাবেরও প্রয়োজন।