স্বাস্থ্য বেশ ভালোই থাকবে। আর্থিক দিকটিও ভালো। সঞ্চয় খুব ভালো না হলেও উপার্জন ভালো হবে। ... বিশদ
পুলিস সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, দেড় মাস আগে তাকে ধরার জন্য ছক কষা হয়েছিল। সেসময় সে বাড়িতেই ছিল। কিন্তু সেদিন তদন্তকারীদের একটু ভুলের জন্য এলাকা থেকে সে পালিয়ে যায়। কিন্তু তদন্তকারীরা হাল ছাড়েননি। তাঁরা লাগাতার বাড়ির উপর নজরদারি বাড়াতে থাকেন। করিমও পুলিসের নজরদারির বিষয়টি টের পেয়ে আত্মীয়দের বাড়িতে আত্মগোপন করতে থাকে। সে সাধারণত নিজে মোবাইল ব্যবহার করত না। তার এক ঘনিষ্ঠর মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সে বিভিন্ন জায়গায় বার্তা পাঠাত। মোবাইলটি সে ওই ঘনিষ্ঠর কাছেই রাখত। ওই মোবাইলের সিম কার্ডও বারবার বদল করিয়েছে সে। কাশিমনগর এলাকায় ওই আত্মীয়ের বাড়িতে আসার আগেও ঘনিষ্ঠ একজনকে ফোন করে বার্তা দেয়। তাতে এসটিএফ তার অবস্থান সম্পর্কে আরও নিশ্চিত হয়ে যায়। তারপরেই গভীর রাতে ওই আত্মীয়ের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
করিমের স্ত্রী পারভিন বিবি বলেন, দেড় মাস আগে ও শেষবারের জন্য বাড়িতে এসেছিল। ওইসময় তিন চার-দিন বাড়িতে ছিল। তবে ও কোথায় থাকত তা জানাত না। জিজ্ঞেস করলেই বলত, যেখানে আছি ভালো আছি চিন্তা করো না। বাড়িতে এসে বাইরে বেরত না।
পুলিস সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, সে আগে ভিনরাজ্যে গা ঢাকা দিয়েছিল। সম্প্রতি সে এলাকায় ফেরে। তারপর সূতি এবং সামশেরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় সে লুকিয়ে ছিল। সে গোপনেই সংগঠনের কাজ চালিয়ে যেত। কীভাবে সে জেএমবির বাংলাদেশ ইউনিটের প্রধান সালাউদ্দিন সালেহানের সংস্পর্শে এসেছিল? গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, সামশেরগঞ্জ এলাকায় জেএমবি অনেক আগে থেকেই সক্রিয় ছিল। বিভিন্ন এলাকার ভিডিও দেখিয়ে যুবকদের জঙ্গিরা প্রথমে প্রভাবিত করত। করিমও এভাবে তাদের নজরে চলে আসে। কম কথা বলা এই যুবক যে কোনও কাজে অত্যন্ত দক্ষ। সেকারণে সে কয়েকবছর আগে জেলার এক জেএমবি নেতার চোখে পড়ে গিয়েছিল। সেসময় মুর্শিদাবাদে অবাধ যাতায়াত ছিল সালাউদ্দিনের। সূতির ডাকবাংলো মোড়ে জেলার ওই জঙ্গি নেতাই জেএমবির বাংলাদেশ ইউনিটের প্রধানের সঙ্গে তার পরচিয় করায়। তারপর এলাকাতেই করিমের প্রশিক্ষণ চলে। ডিটনেটর, টাইম বোমার মতো বিস্ফোরক তৈরিতে সে দ্রুত দক্ষ হয়ে ওঠায় সালাউদ্দিনের ঘনিষ্ঠের তালিকায় সে চলে আসে। পরবর্তীকালে ধাপে ধাপে তার পদোন্নতি হতে থাকে। সে বাংলাদেশেও গিয়ে জেএমবি শিবিরে কাজ করেছে। তার বাড়িতেও বিভিন্ন সময় জেএমবির সদস্যরা এসেছে বলে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন। গোয়ান্দারা মনে করছেন, আব্দুল করিমকে গ্রেপ্তার করে জেএমবিকে বড়সড় ধাক্কা দেওয়া গিয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তার নেটওয়ার্ক ছিল। সেই নেটওয়ার্ক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এলাকাতে কোথায় কোথায় সে গা ঢাকা দিয়েছিল তা জানতে তদন্তকারীরা তাকে জেরা শুরু করেছেন। তবে সে প্রশিক্ষত হওয়ায় সব বিষয়ে মুখ খুলতে চাইছে না বলে গোয়েন্দা সূত্রেই জানা গিয়েছে।