ঠাৎ জেদ বা রাগের বশে কোনও সিদ্ধান্ত না নেওয়াই শ্রেয়। প্রেম-প্রীতির যোগ বর্তমান। প্রীতির বন্ধন ... বিশদ
(নাওরেম,পাপা,টারসুনভ)
ইম্ফল, ২৩ জানুয়ারি: আই লিগের খেতাবি লড়াইয়ে মসৃণভাবেই এগিয়ে চলেছে মোহন বাগান। বৃহস্পতিবার ইম্ফলে নেরোকাকে ৩-০ গোলে হারিয়ে ৯ ম্যাচে ২০ পয়েন্ট পেয়ে লিগ শীর্ষে নিজেদের অবস্থান আরও মজবুত করল সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। বড় ম্যাচ জিতলেও ফুটবলারদের মধ্যে আত্মতুষ্টি আসতে দেননি কোচ কিবু ভিকুনা। এই ম্যাচে বেইতিয়া-পাপা দিওয়ারা-নাওরেমদের পারফরম্যান্সই তার প্রমাণ। এদিন মোহন বাগানের খেলায় ছিল পাসিং ও প্রেসিং ফুটবলের ছোঁয়া। প্রথম ১৫ মিনিট প্রতিপক্ষকে পরখ করে নেয় মোহন বাগান। ১৫ থেকে ৩৫ মিনিট, এই স্পেলে ভিকুনা-ব্রিগেডের পাসিং ফুটবলের সামনে দিশাহারা মনে হয়েছে নেরোকার ফুটবলারদের। মণিপুরের এই ক্লাবটি গত ম্যাচে ভালো খেলেছিল। কিন্তু মোহন বাগানের মতো ছন্দে থাকা দলের সামনে স্যামসন, দিয়ারারা আশাপ্রদ পারফরম্যান্স মেলে ধরতে ব্যর্থ হন। গোলরক্ষক মার্ভিন ফিলিপসের মধ্যেও আত্মবিশ্বাসের অভাব ছিল। প্রথমার্ধের মাঝমাঝি থেকেই ম্যাচে আধিপত্য বিস্তার করেন বেইতিয়া, নাওরেম, শেখ সাহিল, ফ্রান গঞ্জালেজ মুনোজরা। পাশাপাশি দুই সাইড ব্যাক আশুতোষ মেহতা ও ধনচন্দ্র সিং চমৎকারভাবে আক্রমণে উঠেছেন। তবে এদিন সকলকে পিছনে ফেললেন নাওরেম। মণিপুরের দলটির বিরুদ্ধে দলের জয়ে স্থানীয় ছেলেটির বড় ভূমিকা আছে। এক রুমাল জমিতে অনায়াসে দুই-তিনজনকে অবলীলায় ড্রিবল করার ক্ষমতা নাওরেমের আছে। তিনি ছাড়াও প্রচণ্ড ওয়ার্কলোড নিয়েছেন পাপা দিওয়ারা। তাঁকেই ম্যাচের সেরা বেছে নেওয়া হয়েছে। তবে একটি গোল এবং একটি অ্যাসিস্ট করার সূত্রে নাওরেমও পেতে পারতেন এই সম্মান।
ম্যাচের ২৪ মিনিটে মুনোজের বাড়ানো বল ধরে ডানদিক দিয়ে ঢুকে সুহেরের শট পোস্টে লেগে পাপার কাছে যায়। ফিরতি বলে পাপার শট ক্রসপিসের উপর দিয়ে উড়ে যায়। এরপরেই নাওরেম চমৎকার ব্যাকহিলে ধনচন্দ্রকে বল দিয়েছিলেন। তাঁর ভাসানো সেন্টারে পাপার হেড ক্রসপিসের উপর দিয়ে উড়ে যায়। মিনিট দুয়েক বাদে বেইতিয়ার বাড়ানো বল ধরে নাওরেম দেন ধনচন্দ্রকে। মণিপুরী ফুটবলারটির সেন্টার নেরোকার স্টপার রোশন সিংয়ের গায়ে লেগে ফিরে আসে নাওরেমেরই কাছে। নেরোকার তিন ডিফেন্ডার কাছাকাছি থাকলেও তৎপরতার সঙ্গে তিনি বলটি গোলে ঠেলেন (১-০)। বেইতিয়ার দু’টি কর্নার সুবিধাজনক অবস্থায় পেয়েও বাইরে হেড করেন মুনোজ। শেষ ২০ মিনিট ড্যানিয়েল সাইরাসকে তুলে টারসুনভকে নামান কোচ ভিকুনা। তখন সেন্ট্রাল ডিফেন্সে নেমে আসেন ফ্রান গঞ্জালেজ মুনোজ। ম্যাচের শেষ পর্বে রক্ষণ সামলাতে তাঁকে বেশ সাবলীলই মনে হয়েছে। আই লিগে এখনও পর্যন্ত চারটি গোল করা নেরোকার স্ট্রাইকার দিয়ারাকে এদিন খাপ খুলতে দেননি মোরান্তে। তবে ১৬ মিনিটে শঙ্কর রায়কে এগিয়ে আসতে দেখে প্রায় ৩৫ গজ দূর থেকে দিয়ারা তৎপরতার সঙ্গে শট নিয়েছিলেন। যদিও তা ক্রসপিসের উপর দিয়ে চলে যায়। রোনাল্ড সিংয়ের দু’টি সেন্টার ছাড়া গোটা ম্যাচে নেরোকার তেমন কোনও আক্রমণ নেই। তাই শঙ্কর রায়কে তেমন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়নি। উল্লেখ্য, এদিন মাঝমাঠে প্রচুর ওয়ার্কলোড নিলেন শেখ সাহিল। ৫৩ মিনিটে নাওরেম দেহের দোলায় দু’জনকে পরাস্ত করে নিঁখুত সেন্টারটি রাখেন পাপা দিওয়ারার জন্য। হেডে বল জালে জড়াতে অসুবিধা হয়নি তাঁর (২-০)। ৮৭ মিনিটে বেইতিয়ার কাছ থেকে বল পেয়ে পরিবর্ত হিসেবে নামা শুভ ঘোষের শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। সংযোজিত সময়ে নেরোকার কফিনে শেষ পেরেকটি পোঁতেন টারসুনভ। ব্রিটোর পাস ধরে বিপক্ষ ডিফেন্ডারদের চ্যালেঞ্জ টপকে তিনি জাল কাঁপান (৩-০)।