ঠাৎ জেদ বা রাগের বশে কোনও সিদ্ধান্ত না নেওয়াই শ্রেয়। প্রেম-প্রীতির যোগ বর্তমান। প্রীতির বন্ধন ... বিশদ
কাশ্মীর ইস্যুকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে বারবার তুলে আনার চেষ্টা চালাচ্ছে পাকিস্তান। তারা পাশে পেয়েছে ‘সুখ-দুঃখের বন্ধু’ চীনকেও। কিন্তু, তাতে বিশেষ লাভ হয়নি। বারবার আন্তর্জাতিক মঞ্চে মুখ পুড়েছে তাদের। কিন্তু তার থেকে বিন্দুমাত্র শিক্ষা নেয়নি ইসলামাবাদ। বুধবার রাষ্ট্রসঙ্ঘে সাধারণ সভার একটি বৈঠকে পাকিস্তান মিশনের কাউন্সিলার সাদ আহমেদ ওয়ারাইচ জম্মু ও কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে ফের সরব হন। তাঁর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানকে কার্যত তুলোধোনা করেন ভারতের ডেপুটি স্থায়ী প্রতিনিধি কে নাগরাজ নাইডু।
ঝাঁঝালো ভাষায় তিনি বলেন, বস্তাপচা বিতর্ক এবং যুদ্ধের জিগির তোলা বন্ধ করা উচিত পাকিস্তানের। মিথ্যা গল্প ফেঁদে এবং বিভ্রান্তি ছড়িয়ে তারা বিশ্বের কাছে সত্যকে আড়াল করার মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে। নাইডু আরও বলেন, মাছ যেমন জল ছাড়া বাঁচতে পারে না, তেমনি একজন (পাকিস্তানি) প্রতিনিধি মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট দেশের প্রতিনিধিরা মুখ খুললেই বিষ উগরে দেন এবং পাহাড় প্রমাণ মিথ্যা বলতে থাকেন। এদিকে, ভারতে সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ বলে একাধিকবার অভিযোগ জানিয়েছে পাকিস্তান। সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে ভারত। নাগরাজ নাইডু পাকিস্তানের নাম না করে পাল্টা জানিয়েছেন, যে দেশ নিজেরাই সংখ্যালঘুদের শেষ করে দিয়েছে, তারাই সংখ্যালঘুদের রক্ষা করা নিয়ে অন্য দেশকে জ্ঞান দিচ্ছে। এটা অবাক করার মতো বিষয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে মিথ্যাচার ছেড়ে পাকিস্তান সরকারকে নিজেদের দেশের দিকে নজর দিতে পরামর্শ দিয়েছে ভারত। এপ্রসঙ্গে ভারতের ডেপুটি স্থায়ী প্রতিনিধি জানান, মজ্জায় মজ্জায় যে রোগ পাকিস্তানকে ক্ষতবিক্ষত করেছে, তা থেকে নজর ঘোরাতে সর্বদা মিথ্যা গল্প ফাঁদা হচ্ছে। কিন্তু, তাদের বুঝতে হবে যে, কোনও দেশেরই মিথ্যা কথা শোনার সময় নেই। তাই তাদের কূটনীতির সাধারণ ছন্দ বজায় রাখা উচিত। বিগত সপ্তাহে রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদে পাকিস্তানের হয়ে কাশ্মীর ইস্যু উত্থাপন করেছিল চীন। উপত্যকা থেকে ৩৭০ ধারা বাতিলের পর এই নিয়ে তৃতীয়বার। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ জানিয়ে দেয়, জম্মু ও কাশ্মীর সমস্যা ভারত-পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক বিষয়। এই নিয়ে তারা নাক গলাবে না। ফলে, ফের আন্তর্জাতিক মঞ্চে মুখ থুবড়ে পড়ে ভারতকে বিব্রত করার প্রয়াস।
এদিকে, সন্ত্রাসবাদের সঠিক ব্যাখ্যা নিয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পৌঁছতে পারেনি রাষ্ট্রসঙ্ঘ। পাশাপাশি, বিশ্বজুড়ে এই নিয়ে আতঙ্ক দূর করার জন্য কার্যকরী ও সমন্বয়ী কোনও নীতি তৈরি করতে পারেনি আন্তর্জাতিক সংগঠন। এপ্রসঙ্গে রাষ্ট্রসঙ্ঘের সমালোচনা করেছে ভারত। কমপ্রিহেনসিভ কনভেনশন অন ইন্টারন্যাশনাল টেরোরিজমের (সিঅআইটি)-র ১৯৮৬ সালের খসড়া কার্যকরী করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানাচ্ছে নয়াদিল্লি। কিন্তু, সন্ত্রাসবাদের সংজ্ঞা নিয়ে সদস্য দেশগুলি একমত না হওয়ায় তা চালু করা সম্ভব হয়নি। এই নিয়ে রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ সভার বৈঠকে সরাসরি প্রশ্ন তোলেন ভারতীয় প্রতিনিধি।
তাঁর কথায়, আমাদের দেশ ইতিমধ্যেই সন্ত্রাসবাদের আগুনে পুড়ছে। আমাদের থেকে আপনারা কী প্রত্যাশা করছেন? সহযোগিতা না প্রতিযোগিতা? নতুনত্ব না নিষ্ক্রিয়তা। সেই সঙ্গে, তিনি বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে সন্ত্রাসবাদ আতঙ্ক তৈরি করেছে। এই পরিস্থিতিতে দ্রুত ও কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানিয়েছে ভারত। পাশাপাশি, নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কার নিয়েও সরব হয়েছেন ভারতীয় প্রতিনিধি।