পারিবারিক ক্ষেত্রে কলহের আশঙ্কা। ঠান্ডা মাথায় চলুন। বিজ্ঞানী, ব্যবসায়ী, সাহিত্যিকদের শুভ সময়। ... বিশদ
গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে ইউনেস্কোর তরফে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের স্বীকৃতি পায় শান্তিনিকেতন। তারপরও উপাসনা গৃহ সংলগ্ন রাজ্য সরকারের রাস্তায় যান-যন্ত্রণায় নাজেহাল হচ্ছিলেন এলকাবাসী থেকে পর্যটকরা। স্বভাবতই হেরিটেজ সাইটের তকমা ধরে রাখা কর্তৃপক্ষের চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। সমস্যার সমাধানে মহাকুমা প্রশাসনের কাছে আর্জি জানিয়েছিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। কিন্তু লোকসভার নির্বাচন পর্ব শুরু হওয়ার কারণে বিষয়টি ধামাচাপা ছিল। আর সেই সুযোগ আরও বেশি বেলাগাম হয়ে ওঠে টোটো চলাচল। লেগেছিল নিত্য যানজট। এবার যান নিয়ন্ত্রণে স্থায়ী প্রতিকারে তৎপর হল বিশ্বভারতী। বৃহস্পতিবার পুলিস সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা আধিকারিক সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি যানজটের মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানান বলে বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে। এখন দেখার পুলিস তৎপরতার সঙ্গে যানজট কাটাতে কী পদক্ষেপ করে।
উপাসনা গৃহ, ছাতিমতলা ও রবীন্দ্র ভবন সংলগ্ন রাস্তাটি রাজ্য সরকারের। শান্তিনিকেতনের সুবর্ণরেখার মোড় থেকে কালীসায়র পর্যন্ত এই রাস্তাটির দৈর্ঘ্য ৩.৪ কিলোমিটার। উপাসনা চলাকালীন যান চলাচলের ফলে অনুষ্ঠানে বিঘ্ন ঘটছিল বলে অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি রাজ্য সরকারকে জানালে তৎপর হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয় হাতে ওই রাস্তা তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু প্রাক্তন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর আমলে ওই রাস্তা ঘিরে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠে। আশ্রমিকদের অভিযোগের ভিত্তিতে ২০২০ সালে রাজ্য ফের রাস্তাটি নিজেদের দখলে নেয়। তারপর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ওই রাস্তা রাজ্য সরকারের পূর্ত ও সড়ক দপ্তরের অধীনে রয়েছে।
তবে হেরিটেজ সাইটের স্বীকৃতির পর শান্তিনিকেতনের প্রতি পর্যটকদের আকর্ষণ আরও বাড়তে থাকে। ফলে, আর্থিক লাভের আশায় টোটো চালকর ওই রাস্তাটি বেশি ব্যবহার করতে শুরু করেন। হস্তশিল্পের পসরা সাজিয়ে ঠ্যালা গাড়ি নিয়ে ব্যবসায়ীরাও রবীন্দ্র ভবনের সামনে ভিড় জমাচ্ছেন। তার জেরেই তৈরি হয়েছে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি। মূলত, উপাসনা গৃহ, ছাতিমতলা, রবীন্দ্রভবন প্রভৃতি কোর হেরিটেজ জোনে অবস্থিত। ফলে, হেরিটেজ মর্যাদা ক্ষুন্ন হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। এর থেকে রেহাই পেতে গত বছর নভেম্বর মাসে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে চিঠি লেখেন রবীন্দ্র স্পেশাল অফিসার নীলাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তাতেই নড়েচড়ে বসে কর্তৃপক্ষ। এই মুহূর্তে বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য পদে রয়েছেন পল্লি সংগঠন বিভাগের অধ্যক্ষ অরবিন্দ মণ্ডল। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি জানিয়েছিলেন, ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের তকমা সহ বিশ্বভারতীর ঐতিহ্য রক্ষা করার দায়িত্ব সকলের।’ তাঁর এই অবস্থানের প্রেক্ষিতে এদিন পুলিস ও প্রশাসনের সঙ্গে বিশ্বভারতীর কর্তৃপক্ষের বৈঠক অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে মূলত, যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ সহ নানা বিধি-নিষেধ আরোপ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে।