ছোট ও মাঝারি ব্যবসায় উন্নতি। বেচাকেনা আর উপার্জন বাড়বে। যে কোনও কাজে ব্যস্ততা বৃদ্ধির যোগ। ... বিশদ
এর আগে কয়েকবার চেন্নাইয়ে নির্মাণ শ্রমিকের কাজে গিয়েছেন কনকপুরের রাখিকুল শেখ ও বাপি শেখ। গত শুক্রবার প্রথম তাঁদের সঙ্গে ভিন রাজ্যে যাচ্ছিলেন শান্তা শেখ। শান্তা, রাখিকুল ও বাপির পরিবারের সদস্যরা রবিবার সকাল সাতটা নাগাদ বালেশ্বরে পৌঁছেছেন। বিকেল পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তাঁদের পাওয়া যায়নি। সংবাদ মাধ্যমে দুর্ঘটনায় মৃত্যু মিছিল দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারগুলির সদস্যরা।
শান্তার বোন আরেজা বিবি বলেন, বছর বিয়াল্লিশের শান্তার পাঁচ ছেলেমেয়ে। বড় মেয়ের বয়স আঠারো। তার বিয়ের ঠিক করেছিল। বিয়ের টাকা জোগার করতেই চেন্নাইয়ে কাজে যাচ্ছিল দাদা। কিন্তু দুর্ঘটনার পর থেকে দাদার মোবাইল অফ। হেল্প লাইন নম্বরে ফোন করে কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। তাই গ্রামবাসীদের সঙ্গে দাদার খোঁজে বালেশ্বরে এসেছি। কিন্তু কোথাও পাচ্ছি না। এদিকে পরিবারের কার্যত কান্নার রোল। মা জুলেখা বিবি, বউমা ও নাতিদের নিয়ে অঝোরে কাঁদতে কাঁদতে বললেন, আমি সকলের পায়ে পড়ছি। ছেলেকে ফিরিয়ে দিন আমার কাছে।
অন্যদিকে উৎকণ্ঠায় রাখিকুল ও বাপি শেখের পরিবারের সদস্যরাও। রাখিকুলের মা তাজকেরা বেওয়া বলেন, ছেলে এর আগে কয়েকবার চেন্নাইয়ে রাজমিস্ত্রির কাজে গিয়েছে। কিন্তু এমন ঘটনা কোনওদিন ঘটেনি। দুর্ঘটনার পর থেকে ছেলের আর খোঁজ নেই। তিনটে ছোট নাতনি। তার আয়েই সংসার চলত। প্রশাসনের কাছে আমার আবেদন, ছেলেকে খুঁজে বের করে দিন। একইভাবে দিশেহারা বাপি শেখের পরিবারও। গ্রামবাসীরা বলেন, তিনটি পরিবারই অত্যন্ত দুঃস্থ। এদিন পরিবারের সঙ্গে দেখা করে পাশে থাকার আশ্বাস দেন বিজেপির সংখ্যালঘু সেলের জেলা সভাপতি আব্দুল লতিফ, স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব, পুলিস ও বিডিও নাজির হোসেন। বিডিও বলেন, পরিবারগুলির পাশে আমরা রয়েছি। তাঁদের নিখোঁজের বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আপাতত ওই পরিবারগুলির হাতে ৪৮ কেজি করে চাল, ত্রিপল, রান্নার সামগ্রী ও নগদ এক হাজার করে টাকা দেওয়া হয়েছে। এদিকে নলহাটির আমাইপুর গ্রামের বছর উনিশের তাসিরুদ্দিন শেখ দুর্ঘটনায় জখম হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি ঠিকাদার নিযুক্ত রেলের এসি টেকনিসিয়ান পদে চাকরি করেন। বেঙ্গালুরু-হাওড়া এক্সপ্রেসে ভুবনেশ্বরে ওঠেন। খড়গপুর পর্যন্ত ডিউটি ছিল। তিনি বলেন, দু’-একটি কোচের এসি ঠিক করে গার্ড কোচে এসে উপরে উঠে ঘুমোচ্ছিলাম। সাতটা নাগাদ হঠাৎই ট্রেনটি কাঁপতে শুরু করে। আমি উপর থেকে নীচে পড়ে যাই। হাঁটু ভাঙার যন্ত্রণায় ছটফট করছিলাম। কিছুক্ষণ করে উদ্বারকারী দল এসে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করেন। শনিবার সেখান থেকে খড়গপুর রেলওয়ে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তিনি বলেন, ভয়াবহ দুর্ঘটনা। কে কাকে বাঁচাবে তার ঠিক ছিল না। গার্ডকোচে থাকায় বরাত জোরে প্রাণে বেঁচে গিয়েছি।