কর্মপ্রার্থীদের কোনও চুক্তিবদ্ধ কাজে যুক্ত হবার যোগ আছে। ব্যবসা শুরু করা যেতে পারে। বিবাহের যোগাযোগ ... বিশদ
বিষয়টি নিয়ে হুগলি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী বলেন, আমার গাড়িতে কোনও নীল বাতি বা লাল বাতি নেই। মহাকুমা হাসপাতাল সুপারের গাড়িতে নীল বাতি লাগানোর বিষয়টি সম্পূর্ণ অবৈধ। তবে অনেক সময় জরুরিকালীন পরিস্থিতিতে ডাক্তারদের নীল বাতি জ্বালিয়ে যাতায়াত করতে হয়।
এব্যাপারে মহকুমা হাসপাতাল সুপার ডাঃ শিশির নস্করকে ফোন করা হলে, তিনি বিষয়টি নিয়ে কোনও রকম মন্তব্য করেননি। তিনি বলেন, আমি এব্যাপারে ফোনে কোনওরকম কথা বলতে চাই না।
এদিকে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৭সালে এই হাসপাতালে সুপারের দায়িত্ব পান শিশিরবাবু। এরপরই তিনি হাসপাতালের কাজে ব্যবহারের জন্য সাদা স্করপিও গাড়িতে নীল বাতির হুটার লাগিয়েছেন। জানা গিয়েছে, সরকারি নিয়মে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ টেন্ডারের মাধ্যমে বেসরকারি একটি সংস্থার কাছ থেকে চুক্তি ভিত্তিক ওই গাড়িটি নিয়েছে। প্রসঙ্গত, গত ইংরেজি মাসের ২৩ তারিখ পুরুলিয়া জেলার হুড়া ব্লকের বিএমওএইচ নিজে অ্যাম্বুলেন্সে চেপে পুরুলিয়া জেলা আদালতে হাজিরা দিতে গিয়েছিলেন। ওই ঘটনায় আদালত চত্বরে তীব্র সমালোচনার ঝড় উঠেছিল। এরপর আবারও প্রায় দু’বছর ধরে আইনের তোয়াক্কা না করে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে সুপারের গাড়িতে নীল বাতির বিষয়টি সামনে আসতেই শহরে শোরগোল পড়েছে।
হাসপাতাল সংলগ্ন ব্যবসায়ীদের একাংশের দাবি, প্রতিদিনই ওই গাড়িতে করে বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করেন হাসপাতাল সুপার। এরপর রাত প্রায় ১০টার দিকে ওই গাড়িটিকে হাসপাতালে একটি গ্যারেজে এনে রাখা হয়। গাড়ির সামনে বোর্ডে সবসময়ের জন্য লেখা থাকে ‘অন ডিউটি’। এছাড়া গাড়ির সামনের দিকে নম্বর প্লেটের উপরের দিকে স্থায়ীভাবে ইংরেজিতে লেখা রয়েছে, ‘গভর্নমেন্ট অব ওয়েস্ট বেঙ্গল’, ‘সুপারিন্টেন্ডেন্ট’, ‘ডিপার্টমেন্ট অফ হেলথ অ্যান্ড ফ্যামিলি ওয়েলফেয়ার’। হাসপাতাল সংলগ্ন একজন হকার বলেন, হাসপাতাল সুপার আইনের দোহাই দিয়ে আমাদের ১২ জন হকারকে হাসপাতাল চত্বরে ঘুরে ঘুরে পাপড়, বাদাম বিক্রি করতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। অথচ নিজেই নিয়ম মানছেন না।
এব্যাপারে আরামবাগের বিধায়ক তথা মহকুমা হাসপাতালে রোগীকল্যাণ সমিতির সভাপতি কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরা বলেন, হাসপাতাল সুপার সরকারি নিয়ম না মেনে ওই নীল বাতি লাগিয়েছেন। আইন প্রত্যেককেই মেনে চলা উচিত। বিজেপির আরামবাগ শহর মণ্ডলের সাধারণ সম্পাদক অরবিন্দ সমাজি বলেন, অবিলম্বে হাসপাতালে সুপারের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এই ঘটনা বর্তমান শাসক দল পরিচালিত সরকারের উদাসীনতার পরিচয় দিচ্ছে।
আরামবাগ বার অ্যসোসিয়েশনের সেক্রেটারি আইনজীবী সুকান্ত হালদার বলেন, লাল ও নীল বাতি লাগানো গাড়ির অপব্যবহার ঠেকাতে সুপ্রিমকোর্ট কিছু নির্দেশিকা বেঁধে দিয়েছে। তারপরও এমন ঘটনা সামনে আশায় আইনকে বুড়ো আঙুল দেখানো হচ্ছে বলে মনে করছি।