নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: বাইপাসজুড়ে একের পর এক দুর্ঘটনা। তাতে প্রাণ গিয়েছে শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সীদের। গাড়িগুলি দ্রুত গতিতে চলাচল করায় বাইপাসে দুর্ঘটনা ঘটেছে বারবার। সমীক্ষার পর শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিস জানতে পেরেছে, আলোর অভাব থাকায় রাতে এই পথে একাধিক দুর্ঘটনা ঘটছে। দূর থেকে বিভিন্ন জায়গায় স্পিডব্রেকারগুলো দেখা না যাওয়ায় গাড়িগুলি দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে। বিষয়টি অনুমানের পর ইস্টার্ন বাইপাসজুড়ে স্পিডব্রেকারগুলোতে ফ্লুরোসেন্ট স্টিকার লাগিয়েছে শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিসের ট্রাফিক বিভাগ। পুরো ইস্টার্ন বাইপাসজুড়ে গার্ডরেল বসিয়ে সেগুলোতে ফ্লুরোসেন্ট স্টিকার জড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। যার ফলে দূর থেকে গাড়ির চালক সামনে স্পিডব্রেকার গার্ডরেলগুলো অতি সহজেই দেখতে পাবেন। পাশাপাশি, এলাকায় বিভিন্ন জায়গায় স্পিড লিমিটেড বোর্ড বসানো হয়েছে। যাতেও ফ্লুরোসেন্ট কাগজের স্টিকার লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। দূর থেকেই গাড়ির গতিবেগ কত থাকবে তা আন্দাজ করেই চালকরা গাড়ি, স্কুটার, বাইক চালাতে সক্ষম হবেন। প্রাথমিকভাবে একাধিক জায়গায় আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে সম্পূর্ণ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের তরফ থেকে। যাতে দুর্ঘটনার প্রকোপ কমে তা নিশ্চিত করতে তৎপর শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিসের ট্রাফিক বিভাগ। ডিসিপি (ট্রাফিক) বিশ্বচাঁদ ঠাকুর বলেন, আমরা ইস্টার্ন বাইপাস এলাকার সমস্ত দুর্ঘটনার ঘটনা খতিয়ে দেখে ফ্লুরোসেন্ট স্টিকার দিয়ে গার্ডরেল লাগিয়ে বসানোর ব্যবস্থা করেছি। আশা করছি, এর ফলে গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। যার ফলে দুর্ঘটনার হাত থেকে সাধারণ মানুষ রক্ষা পাবেন।
জানুয়ারি মাসে একটি শিশু তার মায়ের সঙ্গে ইস্টার্ন বাইপাস এলাকা দিয়ে টিউশন যাওয়ার সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এর আগে একইমাসে একটি দ্রুতগতির গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হয় এক পঞ্চাশোর্ধ ব্যক্তির। এরপর গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হয় আরও এক পথচারীর। এছাড়া ওই এলাকা দিয়ে প্রাণ হাতে নিয়ে চলাচল করতে হয় বলে বারবার অভিযোগ করেন বাসিন্দাদের একাংশ। এরপরই ট্রাফিক বিভাগের তরফ থেকে এলাকাজুড়ে সমীক্ষা চালানো হয়। সমীক্ষার পর একাধিক সিদ্ধান্তে উপনীত হন পুলিসকর্তারা। পুরো ইস্টার্ন বাইপাস এলাকায় পর্যাপ্ত বিদ্যুতের ব্যবস্থা নেই সমীক্ষায় উঠে আসে। এরপরই সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি ফ্লুরোসেন্ট স্টিকার ব্যবহার করা হবে বলে পুলিসের শীর্ষ কর্তারা সিদ্ধান্ত নেন। এরপরেই গার্ড রেল দিয়ে ব্যারিকেড করা হয়। সেই ব্যারিকেডে থাকা গার্ডরেলগুলোতে উপর থেকে নিচে পর্যন্ত লাল, নীল, হলুদ ফ্লুরোসেন্ট কাগজ দিয়ে মুড়ে দেওয়া হয়। ওই কাগজগুলোর ফলে দূর থেকে যে কোনও চালক সহজেই দূরের ব্যারিকেড দেখতে পাবে বলে জানিয়েছেন শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিসের ট্রাফিক বিভাগের কর্তারা। তবে গোটা বাইপাসে পথবাতি বসালে এর স্থায়ী সমাধান হবে বলে মনে করেন সাধারণ মানুষ। নিজস্ব চিত্র।