ছোট ও মাঝারি ব্যবসায় উন্নতি। বেচাকেনা আর উপার্জন বাড়বে। যে কোনও কাজে ব্যস্ততা বৃদ্ধির যোগ। ... বিশদ
তরুণ বাড়ির বড় ছেলে। ড্রাইভার। গাড়ি চালিয়েই সংসার চালাচ্ছিলেন। বৃদ্ধ বাবা ডেকরেটর কর্মী। তরুণ টাকা জমিয়ে আগে এক বোনের বিয়ে দিয়েছেন। আরএক বোনকে লেখাপড়া শিখিয়েছেন। বোনের বিয়ে দেবেন, তাই কিছুদিন আগে বাড়ির কাজে হাত দিয়েছিলেন। কিন্তু, ছেলের এভাবে মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না বৃদ্ধ নৃপেনবাবু। শোকস্তব্ধ রায় পরিবার সহ তাঁদের গ্রাম ময়াগুড়ির মাধবডাঙা। তরুণের বন্ধুরাও মুষড়ে পড়েছেন। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার খবর পেয়ে তাঁর মা সুমিত্রা রায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। শনিবার তাঁকে ভর্তি করা হয় জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। রবিবার বিকেলে ছুটি পেয়ে বাড়ি ফেরেন। কিন্তু, তাঁকে ছেলের মৃত্যুর খবর জানানোর মতো ভাষা খুঁজে পাচ্ছিলেন না পরিবারের কেউ। ছেলে হাসপাতালে ভর্তি, এ কথাই জানানো হয়েছে সুমিত্রাকে।
মাধবডাঙার বাসিন্দা শৈলেন রায়ের সঙ্গে চেন্নাইয়ে পাড়ি দিয়েছিলেন তরুণ। তাঁরা দুজনেই এক বেসরকারি সংস্থার গাড়ির ড্রাইভারের কাজ পেয়েছিলেন। সেই কাজে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন করমণ্ডল এক্সপ্রেসে করে। কিন্তু, বালেশ্বরে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় শৈলেন গুরুতর জখম অবস্থায় বালেশ্বরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মৃত্যু হয়েছে তরুণের। তাঁর বাবা বলেন, কীভাবে যে সত্যি ঘটনাটা ওর মাকে বলব, বুঝতে পারছি না। স্ত্রীর যা পরিস্থিতি তাতে ছেলের মৃত্যু খবর জানলে ও কতটা শোক নিতে পারবে জানি না। ছেলে পরিবারের জন্য খুব কম বয়স থেকেই রোজগার শুরু করেছিল। বড় মেয়ের বিয়ে দিয়েছে, ছোট মেয়েকে পড়াশোনা শিখিয়েছে। বাড়ি তৈরির কাজে হাত দিয়েছিল। অগ্রহায়ণ মাসে এলাকারই এক যুবকের সঙ্গে ছোট মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছে। বোনের বিয়ের জন্য বেশি টাকা উপার্জনের আশায় চেন্নাই পাড়ি দিচ্ছিল। সব স্বপ্ন চুরমার করে দিল রেল দুর্ঘটনা। আমাদের সব তছনছ হয়ে গেল।
প্রতিবেশী সরেন রায় বলেন, তরুণ আমার ভালো বন্ধু ছিল। ছোট থেকেই ছেলেটি খুবই কর্মঠ। পরিবারকে ভালো রাখতে সে প্রচুর পরিশ্রম করত। ওঁর এভাবে মৃত্যু মেনে নিতে পারছি না। শনিবার রাতে তরুণের মৃত্যুর খবর পাই। গোটা গ্রাম ওই ঘটনার কথা শুনে শোকে কাতর।