কর্মোন্নতি ও কর্মের প্রসার। সামাজিক সুনাম বৃদ্ধি। শারীরিক সমস্যার আশঙ্কা। ধনাগম মন্দ নয়। দাম্পত্যে চাপ, ... বিশদ
তবে এ কাজের জন্য যে বনদপ্তরের কাছ থেকে পুরস্কার মিলবে, তা কোনওদিন মাথায় ছিল না জঙ্গলপ্রেমী আমরুল সাহেবের। চারবছর আগে এক বর্ষার সন্ধ্যায় জাতীয় উদ্যানের শিসামারা নদীর ধারে একটি মৃত গণ্ডারের দেহ পড়ে থাকতে দেখে সারারাত লাঠি নিয়ে পাহারা দিয়েছিলেন আমরুল। আজ চারবছর পর সম্প্রতি সেই কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ বনদপ্তর যে তাঁকে পুরস্কৃত করবে তা জানতেনও তিনি। চোরাশিকারিদের হাত থেকে মৃত বন্যপ্রাণীর দেহাংশ রক্ষার জন্য সম্প্রতি বিশ্বগণ্ডার দিবসে আমরুল সাহেবকে মানপত্র দিয়ে সম্মানিত করে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান কর্তৃপক্ষ। তবে এর আগেও জাতীয় উদ্যানের মালঙ্গি বিটে অন্য একটি মৃত গণ্ডার পাহারা দেওয়ার জন্য বনদপ্তর আমরুল সাহেবকে নগদ আট হাজার টাকা দিয়ে পুরস্কৃত করেছিল।
পেশায় দিন মজুর ৪৫ বছরের আমরুল জাতীয় উদ্যানের ভেতরে শিসামারা নদীতে মাছও ধরেন। স্ত্রী, তিন ছেলে ও দুই মেয়েকে নিয়ে ওঁর সংসার। দুই মেয়েকে অবশ্য ইতিমধ্যেই বিয়ে দিয়েছেন। বনবস্তির বাসিন্দা আমরুল বলেন, মহামারী শুরুর সময় থেকে এলাকায় দিন মজুরির কাজ কম মিলছে। নদীতেও আগের মতো মাছ নেই। তাই সংসার চালাতে তিন ছেলেকেই নির্মাণ শ্রমিকের কাজে লাগিয়ে দিয়েছেন। শিসামারা নদীতে মাছ ধরতে ধরতেই জঙ্গল ও জঙ্গলের বাসিন্দা বন্যপ্রাণীদের প্রতি একটা ভালো লাগা গড়ে উঠেছিল আমরুল সাহেবের। তিনি বলেন, অবলা বন্যপ্রাণীদের দেহাংশ কেটে নেওয়া অপরাধ। তাই মৃত গণ্ডার বা হাতি পড়ে থাকতে দেখলে সঙ্গে সঙ্গে বনদপ্তরে খবর দিই। রাতেও পাহারা দিই। যাতে চোরাশিকারিরা মৃতপ্রাণীর দেহাংশ কেটে নিয়ে না যেতে পারে। তিনি আরও বলেন, মাঝেমধ্যে বনদপ্তরের কাছ থেকে দৈনিক মজুরিতে জঙ্গলে গাছের ডাল কাটা ও জঙ্গল পরিচর্যার কাজ পাই। জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের ডিএফও দীপক এম বলেন, আমরুল নজির তৈরি করেছেন। ওঁর কাজে খুশি হয়ে সম্মানিত করেছি। জঙ্গল পাহারায় আমরুলের মতো আরও অনেককে চাই।