বিদ্যায় সাফল্য ও হতাশা দুই-ই বর্তমান। নতুন প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠবে। মামলা-মোকদ্দমার কোনও পরিবেশ তৈরি ... বিশদ
এদিনের বৈঠক নিয়ে কৃষ্ণকুমারবাবু অবশ্য স্পষ্ট করে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। যদিও গৌতমবাবু বলেন, কৃষ্ণকুমারদা আমাদের দলের সিনিয়র নেতা। তাঁর অভিজ্ঞতাকে রাজনীতির ময়দানে কাজে লাগাব। তাই এদিন বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
জলপাইগুড়ি জেলায় তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ নেতাদের মধ্যে কৃষ্ণকুমারবাবু অন্যতম। দু’দফায় দু’বার তিনি দলের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতির দায়িত্ব সামলেছেন। একবার ২০০২-২০০৬ সাল। আবার ২০০৮-১০১৩ সাল সাল পর্যন্ত। সদ্য সমাপ্ত লোকসভা ভোটের আগে থেকেই তিনি দলের জেলা নেতাদের একাংশের বিরুদ্ধে সরব হন। তিনি অভিযোগ করেন, জেলার ওই নেতারা তৃণমূলকে তোলামূল পার্টিতে পরিণত করতে চাইছেন। ওই নেতারা দলকে সামনে রেখে ‘ক্রিম’ খেতে চাইছেন। এরজেরে ইদানিংকালে দলের অন্দলের কিছুটা কোণঠাসা হয়ে পড়েন তিনি। এমন পরিস্থিতিতে তাঁর সঙ্গে বিজেপি নেতাদের যোগাযোগ শুরু হয়। এমনকী, বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা সংসদ সদস্য দিলীপ ঘোষের সঙ্গে তাঁর বৈঠক হয়েছে। এই খবর চাউর হতেই তাঁকে ঘিরে জল্পনা শুরু হয়। অনেকেরই বক্তব্য, কৃষ্ণকুমারবাবুর অনুগামীদের একাংশ বর্তমানে বিজেপিতে রয়েছেন। সম্ভবত তিনিও এবার বিজেপিতে পা বাড়াবেন।
এদিকে বিজেপির থাবা থেকে দলকে বাঁচাতে তৎপর হয়ে উঠেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দেযাপাধ্যায়। ইতিমধ্যে তিনি প্রতিটি জেলা কমিটিকে দলের পুরনো নেতাদের গুরুত্ব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এমন অস্থায় কিষাণ কল্যাণীর সঙ্গে পর্যটনমন্ত্রীর বৈঠক যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নির্দেশে আলিপুরদুয়ার জেলার বন্যা পরিস্থিতি দেখতে যাওয়ার পথে দলের জলপাইগুড়ি জেলার নেতা কৃষাণবাবুর বাড়িতে যান পর্যটনমন্ত্রী। এক ঘণ্টার বেশি তাঁদের মধ্যে কথা হয়েছে। কাটমানি ইস্যু, দলের পুরনো কর্মীদের উপর অত্যাচার, রাজনৈতিক লড়াই, দলবদলের জল্পনা প্রভৃতি বিষয় নিয়ে তাঁদের আলোচনা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
পরে কৃষাণবাবু বলেন, পর্যটনমন্ত্রী আমার বাড়িতে এসেছিলেন। এব্যাপারে যা বলার তিনি বলবেন। গৌতমবাবু অবশ্য বলেন, কৃষাণদা অনেক পুরনো ও অভিজ্ঞ নেতা। তিনি আমার দাদার মতো। দীর্ঘদিন তাঁর সঙ্গে কাজ করেছি। কোনও সমস্যা হয়নি। এদিন তাঁর সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে কথা হয়েছে। তাঁর অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাব। অন্যদিকে, পর্যটনমন্ত্রী বৈঠক করেও যে দলের এই বর্ষীয়ান নেতার ক্ষোভকে প্রশমিত করতে পারেননি তা কিছুক্ষণের মধ্যেই পরিষ্কার হয়ে যায়। গৌতম দেব চলে যেতেই ফের দলের বিরুদ্ধে গলা ফাটিয়েছেন কিষাণ কল্যাণী। তিনি বলেন, ২০১৪ সালের পর থেকে দলে ব্রাত্য হয়ে পড়ি। আমার সঙ্গে যাঁরা রাজনীতি করেন, তাঁদের কাউকে গত পঞ্চায়েত ভোটে টিকিট দেওয়া হয়নি। তাঁদের অনেকে নির্দল ও বিজেপির টিকিটে জয়ী হয়েছেন। সেই নির্বাচন থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায়, তাঁরা রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক। তা সত্ত্বেও দলের হুঁশ ফেরেনি। এখনও যাঁরা দলে আছেন, তাঁরা অত্যাচারিত হচ্ছেন। এক কথায় দলে সঠিক মূল্যায়ন হয়নি। কাজেই, যাঁদের জন্য রাজনীতি করা, তাঁরা যদি সম্মান না পান, তা হলে কীভাবে চলতে পারে। বিজেপির রাজ্য সভাপতির সঙ্গে কথা হয়েছে। বিজেপির নেতাদের সঙ্গে আরও কথা হবে।