বিদ্যার্থীদের মানসিক উদ্বেগ বৃদ্ধি পাবে। পঠন-পাঠনে আগ্রহ কম থাকবে। কর্মলাভের সম্ভাবনা আছে। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
প্রতিমাকে খুন করা হয়েছে নাকি আত্মহত্যা করেছে তা নিয়ে পুলিস শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সরকারিভাবে কোনও বক্তব্য দেয়নি। তবে প্রাথমিকভাবে ধৃত দম্পতির বিরুদ্ধে আইপিসি ৩০২, ২০১ এবং ১২০বি ধারায় মামলা রুজু করার প্রস্তুতি নিয়েছে পুলিস। মালদহের ডেপুটি পুলিস সুপার (সদর) বিপুল মজুমদার বলেন, মেয়েটি যদি আত্মহত্যাই করে থাকে তাহলে ওই দম্পতি মেয়ের মৃতদেহ গঙ্গায় ফেলে দিতে গেলেন কেন তা বোধগম্য হচ্ছে না। তদন্ত চলছে। পুলিস সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, আমরা এখনই এই ঘটনাকে ‘অনার কিলিং’ বলছি না। কারণ ওই দম্পতি নিজেদের মেয়েকে খুন করেছে সেই সম্ভাবনা যেমন রয়েছে তেমনই তাদের প্ররোচনাতে মেয়েটি আত্মহত্যা করে থাকতে পারে বলেও অন্য মহল থেকে শোনা যাচ্ছে। মৃতদেহ আদৌ গঙ্গায় ফেলা হয়েছে কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওই দম্পতিকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। রহস্যভেদে দফায় দফায় জেরা চলছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকাল ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে মহেন্দ্রটোলার কয়েকজন বাসিন্দা পুলিসকে খবর দেন ধীরেন মণ্ডল ও তার স্ত্রী সুমতি মণ্ডল একটি ভারী চটের বস্তা সাইকেলে চাপিয়ে নিয়ে গঙ্গার দিকে নিয়ে যাচ্ছেন। এলাকার বাসিন্দারা তাদের কাছে বস্তার ভিতরে কী আছে তা জানতে চাইলে ওই দম্পতি নিরুত্তর ছিল। এরপরেই নদীর ঘাটে বেঁধে রাখা সারি সারি ডিঙ্গি নৌকার একটিতে চেপে মাঝগঙ্গায় গিয়ে ওই দম্পতিকে বস্তাটি ফেলে দিতে দেখা যায়। বাসিন্দাদের ধারণা হয় প্রতিমাকে খুন করে মৃতদেহ বস্তায় ভরে গঙ্গায় ফেলে দিয়েছেন ধীরেন ও সুমতি। ইতিমধ্যে ভূতনি থানা থেকে পুলিসের একটি দল ছুটে আসে ঘটনাস্থলে। গঙ্গা থেকে ডিঙ্গি নৌকা নিয়ে ফেরার পথেই আটক করা হয় ওই দম্পতিকে। পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তাদের গ্রেপ্তারও করে পুলিস।
পুলিস জানিয়েছে, গঙ্গায় ফেলে দেওয়া বস্তার ভিতরে কী রয়েছে তা জানতে সেটিকে উদ্ধার করা প্রয়োজন। এজন্য বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত একটি দলকে নদীতে নামানো হয়েছে। নামানো হয়েছে ডুবুরিও। কিন্তু সন্ধ্যা পর্যন্ত বস্তার হদিশ মেলেনি। একই সঙ্গে অন্যান্য সমস্ত সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে অন্য কোথাও প্রতিমার দেহ রয়েছে কি না তা জানতে তল্লাশি শুরু হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা, এই ঘটনায় হতবাক। পুলিসের জেরা এড়াতে মুখে কুলুপ এঁটেছেন সকলেই। তবে স্থানীয় এক জেলে বলেন, ধীরেন বরাবরই সামান্য বিবাদেও প্রচণ্ড রেগে যায়। পেশায় দিনমজুর ধীরেনের দুই মেয়ে। এক মেয়ের কিছুদিন আগে বিয়ে হয়েছে পাশের জানকীরামটোলা গ্রামে। ওই বিয়ের সূত্রেই বড় জামাইয়ের সম্পর্কিত এক ভাইয়ের সঙ্গে মেলামেশা শুরু হয় স্থানীয় বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী প্রতিমার। প্রথমের দিকেই এই সম্পর্ক নিয়ে আপত্তি তুলেছিল ধীরেন। কিন্তু তারপরেও গোপনে মেয়ে ওই তরুণের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলায় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে সে। বৃহস্পতিবার মেয়েকে প্রচণ্ড বকাঝকাও করেন ধীরেন। তারপর থেকেই প্রতিমাকে আর কারও চোখে পড়েনি। গ্রামবাসীদের আশঙ্কা, আত্মীয়স্বজনের মধ্যে বিয়ের সম্পর্ক স্থাপিত হলে পরিবারের সম্মানহানি হবে ভেবেই মেয়ের প্রেম নিয়ে আপত্তি তোলে ধীরেন ও তার স্ত্রী। তার জেরেই পৃথিবী থেকে অকালে বিদায় নিতে হল প্রতিমাকে।