কর্মপ্রার্থীদের বিভিন্ন দিক থেকে শুভ যোগাযোগ ঘটবে। হঠাৎ প্রেমে পড়তে পারেন। কর্মে উন্নতির যোগ। মাঝেমধ্যে ... বিশদ
এদিন পুরুলিয়ার সভা সেরে বেরিয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশে মমতা বলেন, ‘আমরা ২৩ জানুয়ারি দেশনায়ক দিবস পালন করব। গুজরাত, উত্তরপ্রদেশ কিংবা বিহারে যে শব্দ ব্যবহার করা যায়, বাংলায় তা সাযুজ্যপূর্ণ নয়। বাংলা যেটা বুঝবে সেরকমই মধুর শব্দের ব্যবহার হওয়া উচিত। নেতাজি বাঙালির মননের মহানায়ক। তাই আমরা পরাক্রম নামটিতে খুশি নই।’
তাৎপর্যপূর্ণ হল, বিধানসভা ভোটের আবহে যুযুধান রাজ্যের অবিজেপি দলগুলিকে কার্যত একই সুরে মিলিয়ে দিয়েছেন নেতাজি। কারণ, বামফ্রন্ট, কংগ্রেসও কেন্দ্রের এই একতরফা সিদ্ধান্তের প্রবল প্রতিবাদ জানিয়েছে। এমনকী বিজেপি ও মোদি সরকারকে চরম অস্বস্তিতে ফেলে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বসু পরিবারের সদস্য বিজেপি নেতা চন্দ্রকুমার বসুও। তিনি জানান, ‘কমিটির বৈঠকে আলোচনা ছাড়াই কীভাবে এই সিদ্ধান্ত হতে পারে? আমাদের ইচ্ছা শুধু নয়, দিনটিকে দেশপ্রেম দিবস করার বিষয়টি গণদাবিতে পরিণত হয়েছিল।’ ফরওয়ার্ড ব্লকের সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত বিশ্বাস বলেন, ‘আজ নয়, ২৫ বছর আগে নেতাজির জন্মশতবার্ষিকীর প্রাক্কালে আমরা দাবি তুলেছিলাম দেশপ্রেম দিবসের। কিন্তু আজও সেই দাবি পূরণ করা হল না।’ পরাক্রম দিবস কেন? প্রশ্ন তুলে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, একতরফাভাবে কেন্দ্র এরকম ঘোষণা করতে পারে না। এটা নেতাজিকে ঘিরে তৈরি হওয়া সামগ্রিক আবেগকে ধাক্কা দেওয়া। বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের আব্দুল মান্নান বলেছেন, ‘এভাবে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটে না।’
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আরও জানান, ২৩ জানুয়ারির প্রধান অনুষ্ঠান হবে কলকাতার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল এবং ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে। ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে ১৮ ফুট উঁচু নেতাজির একটি মূর্তি বসবে। হাজির থাকবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ২৩ জানুয়ারি প্রথমে দুপুর সওয়া ১২টায় শ্যামবাজারে নেতাজির জন্মমুহূর্তকে স্মরণ করা হবে। এরপর হবে সুভাষচন্দ্র বসুর স্মরণে পদযাত্রা— শ্যামবাজার থেকে রেড রোড।
ভোট আসছে বাংলায়। রাজনীতি ও প্রশাসনিক সাফল্য-ব্যর্থতার ইস্যুকে ছাপিয়ে বাঙালির মন জয়ে মরিয়া হয়ে উঠেছে নরেন্দ্র মোদির সরকার ও দল। সেই কারণে রবীন্দ্রনাথ, স্বামীজি আর নেতাজি আবেগকেই পাখির চোখ করার চেষ্টা করছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাই পাল্টা আক্রমণ করে বলছেন, ‘বিজেপির এই বাঙালি আবেগ আসলে ভোটের পাখি।’ এবার এই দেশনায়ক বনাম পরাক্রম চর্চা তাই হয়ে উঠল কেন্দ্র-রাজ্যের অধিকার আদায়ের নিরন্তর লড়াইয়ের তালিকায় নবতম সংযোজন।