নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: খুচরো বাজারে আলু, পেঁয়াজ থেকে শুরু করে শীতকালীন সব্জির দাম কমেছে। কৃষি বিপণন দপ্তরের রিপোর্টে কলকাতার বিভিন্ন বাজারের সব্জির দামের এই তথ্যই রয়েছে। তবে দপ্তর পরিচালিত সুফল বাংলার স্টলগুলিতে খুচরো বাজারের তুলনায় অনেক কম দামে সব্জি মিলছে বলে জানিয়েছে সরকার। সুফল বাংলার স্টলে ডিসেম্বরের শেষে প্রতি কেজি আলু ও পেঁয়াজের দাম যথাক্রমে ছিল ২৫ ও ৩২ টাকা। ওই সময়ে কলকাতার খুচরো বাজারে জ্যোতি আলু ৩০-৩২ টাকা ও পেঁয়াজ ৪৫-৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। অন্যান্য সব্জির ক্ষেত্রেও রয়েছে একই প্রবণতা। বাজার বিশেষজ্ঞদের মতো সুফল বাংলার স্টলে চাষিদের কাছ থেকে কেনা সব্জি সরাসরি সরবরাহ করা হয়। সরকার কোনও লাভ না-রেখেই তা বিক্রি করে। সেখানে খুচরো বাজারে বিক্রয়ের সব্জি পাইকারি বাজার থেকে একাধিক হাত ঘুরেই আসে। প্রতি স্তরের কারবারিরা কিছু লাভ রাখেন। তাই দামের এই তফাত হয়। কৃষি বিপণন দপ্তরের রিপোর্টে ২০২২ সাল থেকে গত ডিসেম্বর মাসের শেষে সব্জির দাম খুচরো বাজারে কত ছিল তা উল্লেখ করা হয়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে, মোটামুটি দাম একই আছে। কিছু ক্ষেত্রে ২০২৪ সালে দাম তুলনামূলকভাবে সামান্য কমও হয়েছে। সরকারি টাস্ক ফোর্সের সদস্য কমল দে জানান, আলু-পেঁয়াজের জোগান বেড়েছে। অনুকূল আবহাওয়ার শীতকালীন সব্জির বাম্পার ফলন হচ্ছে। বাজারে এর প্রভাব পড়ছে। খুচরো বাজারে কিছুদিন ধরে নতুন আলুর জোগান বাড়ছে। ভিন রাজ্য, বিশেষ করে পাঞ্জাব ও উত্তরপ্রদেশের নতুন আলু আগে থেকেই আসছিল। কয়েকদিন ধরে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকেও নতুন আলু বাজারে আসছে। হিমঘর থেকে বেরনো ভালো মানের জ্যোতি এবং নতুন আলুর খুচরো দর এখন মোটামুটি ৩০ টাকা কেজি। যদিও পাইকারি বাজারে ওই আলুর দাম ২২ টাকার আশপাশে। খুচরো বাজারে আলুর দাম আরও কম হওয়া উচিত বলে টাস্ক ফোর্সের সদস্য কমলবাবু মনে করেন।
এদিকে হিমঘর খোলা রাখার বর্ধিত সময়সীমা পেরনোর পরেও সেখানে প্রায় আড়াই লক্ষ টন আলু (৫০ কেজির বস্তা ৪৫ লক্ষ) থেকে যাওয়ায় সমস্যা তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুর ও বাঁকুড়া জেলার হিমঘরে রয়েছে ৩০ লক্ষ বস্তা আলু। ব্যবসায়ীদের দাবি, যে-ধরনের আলু সেসব জায়গায় মজুত রয়েছে তার অধিকাংশেরই তেমন চাহিদা এরাজ্যে নেই। কিন্তু সরকারি বিধিনিষেধের জন্যই তা বাইরে পাঠানো যাচ্ছে না। ফলে দাম পড়ছে। যে-দামে কিনে আলু হিমঘরে মজুত রাখা হয়েছিল দাম তার চেয়েও কমে গিয়েছে! এই অবস্থায় বিপুল পরিমাণ আলু হিমঘরে পড়ে থাকারই আশঙ্কা করছেন হিমঘর মালিকরা। আজ, বৃহস্পতিবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়ের ডাকা প্রশাসনিক বৈঠকে আলু নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত সরকার নেয় কি না সেদিকেই নজর ব্যবসায়ী মহলের।