উচ্চতর বিদ্যায় সফলতা আসবে। সরকারি ক্ষেত্রে কর্মলাভের সম্ভাবনা। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্য আসবে। প্রেম-প্রণয়ে মানসিক অস্থিরতা ... বিশদ
ডোমিসাইল বি লাগু থাকলেও কাউন্সেলিংয়ের নির্দেশনামায় উল্লেখিত এই কড়া পরিচ্ছেদ কিছুটা হলেও আশ্বস্ত করেছে নিট উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের। রবিবার নিট পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সংগঠন টার্গেট এমবিবিএস ফোরাম ফর বেঙ্গল-এর অন্যতম কর্তা রঞ্জন রায় বলেন, গত এক বছর ধরে আমরা লাগাতার দাবি জানিয়েছি, নিট কাউন্সেলিংয়ে ১০০ শতাংশ স্বচ্ছতা রাখতে হবে। যাতে ডোমিসাইল বি ফর্মকে ঢাল করে কেউ অসাধু উপায়ে বাংলার কোনও মেডিক্যাল কলেজে ঢুকতে না পারে। সেদিক থেকে এই সরকারি নির্দেশনামার জন্য আমরা স্বাস্থ্যভবনের কাছে কৃতজ্ঞ। ধন্যবাদ মুখ্যমন্ত্রীকেও।
এদিকে কাউন্সেলিং সংক্রান্ত নির্দেশনামার এই অংশটি যেমন ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকরা ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখেছেন, তেমনই ১৬ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টায় ফলপ্রকাশ হওয়ার পর ১৭ এবং ১৮ নভেম্বর বিকেল ৪টের মধ্যে নিজ নিজ কলেজে পৌঁছানো কষ্টসাধ্য হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকেই। তাঁদের বক্তব্য, উত্তর থেকে দক্ষিণবঙ্গ বা দক্ষিণ থেকে উত্তরবঙ্গে পৌঁছানো দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার। করোনা পরিস্থিতিতে আরও কঠিন। যদিও এই ধরনের আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছেন রঞ্জনবাবুর মতো বহু অভিভাবকই। তাঁরা জানান, ১৩ নভেম্বরই অনেকটা স্পষ্ট হয়ে যাবে, কে কোন কলেজে আসন পেতে পারেন। তারপর চার-পাঁচদিন অনেকটাই সময়।
এবছর গোড়াতেই স্বাস্থ্যদপ্তরের শীর্ষকর্তারা ডোমিসাইল বি সংক্রান্ত সমস্ত নথিপত্র চেয়ে পাঠান স্বাস্থ্য শিক্ষা শাখার কাছে। গত দু’বছরে সামগ্রিকভাবে কতজন রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজগুলিতে ভর্তি হয়েছেন এবং এই সংরক্ষণের মাধ্যমে কতজন ভর্তি হয়েছেন—সেই তথ্য জানাতে বলেন। যাঁরা ভর্তি হয়েছেন, তাঁদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা জমা পড়ে। স্বাস্থ্যদপ্তরের শীর্ষকর্তারা বিভিন্ন সরকারি কলেজে ভর্তির পরিসংখ্যান নিয়ে দেখেছিলেন, ২০১৮ সালে বাংলার বিভিন্ন মেডিক্যাল আসনে সবসুদ্ধ ২৮২৯ জন ছাত্রছাত্রী ভর্তি হন। ২০১৯ সালে ভর্তি হয়েছিলেন ৩৮৫৫ জন। ২০১৮ সালে ফর্ম বি ফর্ম দাখিল করে নিট উত্তীর্ণ হয়ে বাংলার কলেজগুলিতে ভর্তি হন ১৫৯ জন। আর ২০১৯ সালে ‘ডোমিসাইল বি’ সংরক্ষণের মাধ্যমে ভর্তি হন ২৩১ জন।
কর্তাদের তখন যুক্তি ছিল, যেখানে মোট ভর্তির মাত্র ছয়-সাত শতাংশ এই সংরক্ষণের মাধ্যমে হচ্ছে, সেখানে এত হইচই কেন? দুই, এই ১৫৯ এবং ২৩১ জনের তালিকার ৯৫ শতাংশেরই বাঙালি পদবি। তাই ‘ডোমিসাইল বি’র মাধ্যমে পড়তে সুযোগ পাওয়া ছাত্রছাত্রীদের পরিসংখ্যান ও সাধারণ ধারণার মধ্যে ফারাক আকাশ পাতাল। তিন, যে ক’জনের অবাঙালি নাম-পদবি রয়েছে, তাঁদের নথিপত্র খতিয়ে দেখা যাচ্ছে, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরেই পরিবারসূত্রে বাংলায় বসবাস করছেন। এইসব নানা যুক্তিকে ঢাল করে গত বছরের মতো এবছরও বাংলায় টিকে গেল ‘ডোমিসাইল বি’।