নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি, ২৯ মার্চ: করোনার জন্য এই লকডাউন আর কতদিন চলবে তা নিশ্চিত নয়। কিন্তু এখন থেকেই দেশ ও বিদেশের বাণিজ্য ও শিল্পমহল থেকে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে আগামীদিনে তীব্র আর্থিক মন্দা আসতে চলেছে। ইতিমধ্যেই সংশয় প্রকাশ করা হচ্ছে, ভারতের জিডিপি বৃদ্ধির হার ২ শতাংশের নীচে চলে যাবে। এমনকী একটি হিসাবে বলা হচ্ছে ভারতের প্রায় ৯ লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক লেনদেনের লোকসান হতে চলেছে। আর এই লকডাউন যদি চলতে থাকে, তা হলে জিডিপি নেগেটিভে পর্যন্ত চলে যেতে পারে। পাল্লা দিয়ে শোচনীয় হতে পারে অর্থনীতির অবস্থা। সুতরাং লকডাউন কেটে যাওয়ার পর দেশজুড়ে বিপুল আর্থিক মন্দার জেরে কর্মীছাঁটাই শুরু হবে। প্রধান কারণ হল, গোটা পশ্চিমী দুনিয়ার যা পরিস্থিতি তাতে আবার কবে যে বিদেশি সংস্থাগুলি ঘুরে দাঁড়াবে কিংবা লগ্নি করার ক্ষেত্রে এগিয়ে আসবে তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। যে হাজার হাজার কর্মী বিভিন্ন দেশ থেকে স্বদেশে চলে গিয়েছে,তারা কবে আবার ওই দেশে ফিরে কাজে যোগ দেবে অথবা আদৌ তাদের আর ওইসব দেশে ফেরা সম্ভব হবে কিনা অদূর ভবিষ্যতে, তা সম্পূর্ণ অনিশ্চিত। ভারতের আর্থিক অবস্থা আগে থেকেই ছিল মন্দার কবলে। এবার লকডাউনের ধাক্কায় এবং বৈদেশিক বাণিজ্যের অনিশ্চয়তায় সেই অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানো অনিশ্চিত। কিন্তু এই নিরাশজনক অবস্থার মধ্যেই ইতিবাচক কিছু সম্ভাবনাও শোনাচ্ছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংগঠনগুলি। আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলির থেকে বার্তা পাওয়া যাচ্ছে যে, ভারতে তুলনামূলকভাবে অনেক নিয়ন্ত্রণে রয়েছে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের হার। আর তাই হঠাৎ আগামী দিনগুলিতে যদি বড়সড় কোনও অঘটন না ঘটে, তাহলে ভারতের মতো ১৩০ কোটি জনসংখ্যার দেশে যে হারে সংক্রমণ ঘটছে, সেই প্রবণতাই বজায় থাকলে সেটা যথেষ্ট ইতিবাচক হিসেবেই বিবেচিত হবে। আর সেক্ষেত্রে ভবিষ্যতে ভারতকে চীন কিংবা আমেরিকা অথবা ইওরোপের তুলনায় অনেক নিরাপদ স্থান হিসেবে ধরা হবে। যা কর্পোরেট ও বহুজাতিক সংস্থাগুলিকে নিজেদের লগ্নি অথবা দপ্তর ও উৎপাদন কেন্দ্র ভারতে বেশি করে স্থাপনেই আগ্রহী করবে বলে মনে করা হচ্ছে। আর সেক্ষেত্রে ভারতের অর্থনীতি ও কর্মসংস্থান ক্ষেত্র অনেক উন্নত হওয়ার সম্ভাবনা। ভারত সরকারের তাই একটাই লক্ষ্য। ভারতে করোনাকে যথাসম্ভব নিয়ন্ত্রণে রাখা ও কোনওমতেই স্টেজ থ্রির দিকে যাওয়া প্রতিরোধ করা। সেই কারণেই লকডাউন আরও কঠোর করার দিকেই মরিয়া প্রয়াস কেন্দ্রের।