বিমা প্রভূতক্ষেত্র থেকে অর্থাগম যোগ। গৃহ সংস্কার বা ক্রয়ের প্রয়োজনীয় অর্থ পেয়ে যেতে পারেন। শরীরের ... বিশদ
পূর্ব দিগন্তে যখন উঁকি দিচ্ছে সূর্য, তখনই মন্দিরে ঢোকার লাইন লম্বা। যদিও কয়েক ঘণ্টা আগে থেকেই ভক্তদের ভিড় উপচে পড়েছিল দক্ষিণেশ্বরের গেটে। রাত তিনটে থেকে লাইন দিয়েছিলেন ভক্তরা। ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে তা পাল্লা দিয়ে বাড়ে। সাপের মতো এঁকেবেঁকে সে লাইন একদিকে বালি ব্রিজ ছাড়িয়ে যায়। অন্যদিকে মন্দিরের মধ্যে কয়েক পাক খেয়ে পৌঁছে যায় আদ্যাপীঠ মন্দিরের কাছাকাছি। সকালে মঙ্গল আরতির পাশাপাশি ছিল বিশেষ পুজো। দেবীকে সাজানো হয়েছিল অপূর্ব সাজে। বিপুল ভিড়ের কারণে অনেকের জিনিসপত্র হারিয়েছে বলে অভিযোগও উঠেছে। কেউ হারিয়ে ফেলেছিলেন নিজের সঙ্গীকেও। মন্দির চত্বরে অবশ্য তৈরি ছিল পুলিসের হেল্প ডেক্স। সেখানে সাহায্যপ্রার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভক্তরা এসেছিলেন পুজো দিতে। ছিল ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বলয়। সাদা পোশাকের পুলিস, অ্যাম্বুলেন্স সহ একাধিক ব্যবস্থা মোতায়েন ছিল। কড়া প্রহরার কারণে বড় রকমের কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
এর পাশাপাশি এদিন সকাল থেকেই বেলুড় মঠের মূল দরজা ভক্তদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল। মঠের মূল মন্দির, মা সারদার মন্দির, স্বামী বিবেকানন্দের মন্দিরে দিনভর ভিড় ছিল। প্রায় ৫০ হাজার ভক্ত ও দর্শনার্থীকে প্রসাদ বিতরণ করে মঠ কর্তৃপক্ষ। রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সাধারণ সম্পাদক স্বামী সুবীরানন্দজী মহারাজ বলেন, ‘এ দিন পৃথিবীর সমস্ত মানুষকে ঠাকুর অভয় দিয়ে গিয়েছেন। এতদিন তিনি দক্ষিণেশ্বরের শ্রীরামকৃষ্ণ ছিলেন। ১৮৮৬ সালে কল্পতরুর দিন সমস্ত পৃথিবী জানতে পারে, তিনি ছিলেন অবতার।’ এদিন মঠে ভিন রাজ্য থেকেও প্রচুর দর্শনার্থী এসেছিলেন।
অন্যদিকে, কাশীপুর উদ্যানবাটির কল্পতরু উৎসবও ভেসে যায় জনজোয়ারে। মধ্যরাত থেকে চিৎপুর থানার দিকে ও বরানগর বাজারের দিকে দু’টি পৃথক লাইন শুরু হয়। বেলা যত বাড়ে লাইন ক্রমে কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ হয়। ১৮৮৬ সালের পয়লা জানুয়ারি শ্রীরামকৃষ্ণ উদ্যানবাটিতে কল্পতরু হয়েছিলেন। গিরীশ ঘোষ সহ অন্যান্য ভক্তদের বলেছিলেন, তোদের চৈতন্য হোক। ভক্তরা তাঁর কৃপা লাভ করে ধন্য হয়েছিলেন। এরপর থেকে এই দিনটি উদ্যানবাটিতে পালন হয়। তিনদিনের এই উৎসবকে কেন্দ্র করে এখন সেজে উঠেছে উদ্যানবাটি। লাইনে দাঁড়ানো ভক্তদের জল, সরবত, চা দেওয়ার জন্য বিভিন্ন সংগঠন স্টল তৈরি করেছিল। কয়েক কিলোমিটার রাস্তাজুড়ে কয়েকশো দোকানও বসে। ভোর চারটের সময় সানাই বাজানো দিয়ে হয় উৎসবের সূচনা। ভোর পাঁচটায় ঊষাকীর্তন, বিশেষ পুজো, হোম সহ দিনভর নানা অনুষ্ঠান হয়। দুই এবং তিন তারিখ ধর্মীয় আলোচনা ও পুজো হবে। সন্ধ্যায় হবে যাত্রাপালা। কাশীপুর রামকৃষ্ণ মহাশ্মশানেও এদিন যথাযোগ্য মর্যাদায় কল্পতরু উৎসব পালিত হয়েছে। সেখানেও তিন তারিখ পর্যন্ত নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন।