সপরিবারে অদূরবর্তী স্থানে ভ্রমণে আনন্দলাভ। কাজকর্মে কমবেশি ভালো। সাহিত্যচর্চায় আনন্দ। ... বিশদ
সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ ও এমজি রোডের ক্রসিংয়ের পাশে একটি রেডিমেড কাপড়ের দোকান থই থই করছে। বালতি ভরে জল তুলে রাস্তায় ফেলতে ফেলতে নাজেহাল দোকানদার। সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউতে এই পরিমাণ জল শেষ কবে জমেছে তা অনেকেই মনে করতে পারছেন না। মহেশ শর্মা নামে ওই দোকানদার বলেন, ‘কয়েক সপ্তাহ আগে এত বৃষ্টি হল কিন্তু এরকম জল জমেনি। গত বছরও অনেক দিন টানা বৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু এতটা খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।’ তবে এদিন মাত্র ঘণ্টা খানেকের ভারী বৃষ্টিতেই ভাসল মধ্য কলকাতা? কলকাতা পুরসভার নিকাশি বিভাগের যুক্তি, গঙ্গার জোয়ারের কারণে সকাল ১১টা থেকে বেলা তিনটে পর্যন্ত সমস্ত লকগেট বন্ধ রাখা হয়েছিল। সেই কারণেই দীর্ঘক্ষণ জলমগ্ন হয়ে পড়ে ধর্মতলা, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, ডালহৌসি।
নাগরিকদের অভিযোগ, এদিন জলে থই থই করেছে কর্মব্যস্ত ধর্মতলা। এসএন ব্যানার্জি রোড, লেনিন সরণিতে জমা জলের কারণে বিপাকে পড়তে হয় মানুষকে। এমনকী কলকাতা পুরভবনের গেটেও দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিল জল। সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, শিয়ালদহ, এমজি রোড, বিবাদী বাগ, লালবাজার, রবীন্দ্র সরণি, আমহার্স্ট স্ট্রিট, পার্কসার্কাস সেভেন পয়েন্ট ইত্যাদি অঞ্চল কার্যত জলের তলায় ছিল দীর্ঘক্ষণ ধরে। সবমিলিয়ে উত্তর ও মধ্য কলকাতার বিভিন্ন রাস্তায় জল জমে থাকে। এমনকী কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ভিতরেও দীর্ঘক্ষণ জল দাঁড়িয়ে ছিল। হাসপাতাল প্রাঙ্গণে জল থাকার কারণে রোগীর পরিজনদের চরম ভোগান্তির মুখে পড়তে হয়।
পুরসভার তথ্য অনুযায়ী, বেলা একটা থেকে তিনটে পর্যন্ত বিক্ষিপ্তভাবে অল্প পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে শহরে। সবথেকে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে দুপুর দু’টো থেকে তিনটে পর্যন্ত। চলতি মরশুমে এই প্রথমবার ১০০ মিমিরও বেশি বৃষ্টি হয় কলকাতায়। সবথেকে বেশি বৃষ্টি হয়েছে বালিগঞ্জ পাম্পিং স্টেশন অঞ্চলে(১১৪ মিমি)। কিন্তু এদিন দক্ষিণের লকগেট বন্ধ থাকার কারণে উত্তর ও মধ্য কলকাতার একাধিক অঞ্চল জলমগ্ন হয়ে পড়ে। তবে দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন অঞ্চলের বড় রাস্তাগুলিতে সেই অর্থে জল-ছবির দেখা মেলেনি বলে পুরসভার দাবি। এদিন উত্তরে পামারবাজার পাম্পিং স্টেশনে ৭৮মিমি, ঠনঠনিয়ায় ৪২ ও মার্কাস স্কোয়ারে ৬৫মিমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। কলকাতা পুরসভার নিকাশি বিভাগের মেয়র পারিষদ তারক সিং বলেন, ‘গঙ্গায় জোয়ার থাকায় লকগেট বন্ধ রাখতে হয়েছিল। ওই সময়ের মধ্যে ভারী বৃষ্টি হয় শহরে। স্বাভাবিকভাবেই জল জমে যায়। কিন্তু লকগেট খোলার পর জল নেমেও যায়।’ পুরসভার নিকাশি বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, লকগেট খোলার পর জল নামতে শুরু করে। তবে সার্বিকভাবে সব রাস্তা থেকে জল নামতে তিন থেকে চার ঘণ্টা সময় লেগেছে। ফলে মানুষের ভোগান্তির শেষ ছিল না। এদিন প্রায় সন্ধ্যা পর্যন্ত জলমগ্ন থেকেছে শহরের বহু রাস্তা।