উচ্চতর বিদ্যায় সফলতা আসবে। সরকারি ক্ষেত্রে কর্মলাভের সম্ভাবনা। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্য আসবে। প্রেম-প্রণয়ে মানসিক অস্থিরতা ... বিশদ
জানা গিয়েছে, ২০২০ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি আসানসোলের কোর্ট মোড়ের ফ্ল্যাট থেকে প্রথম গ্রেপ্তার হয় সৌমাল্য। নিজের চোখের সামনে পুলিস তাঁর ছেলেকে চুরির অভিযোগে ধরে নিয়ে যাচ্ছে সহ্য করতে পারেননি সদ্য অবসরপ্রাপ্ত হাইস্কুলের শিক্ষিকা মধুছন্দা চৌধুরী। ২১ ফেব্রুয়ারি তিনি অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যা করেন। মায়ের মৃত্যুর পর ছেলে শুধরে যাবে বলেই ভেবেছিলেন আত্মীয় পরিজন থেকে প্রতিবেশীরা। আসানসোলের মামলায় জামিনে মুক্তি পেয়ে খনি শহর ছেড়ে পাঁশকুড়ায় চলে যায় সে। কিন্তু মায়ের মৃত্যুও যে ওই উচ্চ শিক্ষিত চোরকে নিজের পেশা থেকে সরাতে পারেনি, তা জেনে হতবাক শহরবাসী। শুধু লোকের বাড়িতে চুরিই নয়, নিজের বাবা-মায়ের জমানো বহু টাকাও সে শেষ করে দিয়েছে বলে ধৃতের বাবার দাবি।
২০১৯ সালের শেষদিকে আসানসোলের হিলভিউ থেকে কোর্টমোড়, আপকার গার্ডেন, পুলিস লাইন সংলগ্ন এলাকায় একের পর এক বন্ধ ফ্ল্যাটে একই কায়দায় চুরি হচ্ছিল। কিন্তু স্থানীয় চোরেদের সব গ্যাংয়ের খোঁজ নিলেও পুলিস চুরির কিনারা করতে পারেনি। একের পর এক ঘটনায় আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিসের চোখের ঘুম উবে গিয়েছিল। কোনও শব্দ ছাড়াই ফ্ল্যাটে নিখুঁত অপারেশন চলছিল। তিনমাসের চেষ্টায় পুলিস জানতে পারে কোনও গ্যাং নয়, উচ্চশিক্ষিত কোর্টমোড়ের বাসিন্দা সৌমাল্যই চুরি করছিল। পুলিস নিশ্চিত হতেই তাকে গ্রেপ্তার করে। পাঁচটি চুরির মামলা রুজু হয় তার বিরুদ্ধে।
জামিন পেয়ে বাড়ি ফিরলে পূর্তদপ্তরের অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিক সৌমাল্যর বাবা সলীল কুমার চৌধুরী ছেলেকে বুঝিয়েছিলেন তার কুকীর্তির জন্য তার মা মারা গিয়েছেন। আর যেন সে এই পথে না যায়। কিন্তু ‘চোরা না শোনে ধর্মের কাহিনী’। অভিযোগ, ফের একই কায়দায় চুরিতে নেমে পড়ে সে। এবার লক্ষ্য ছিল হাওড়া। সাঁকরাইল থানা এলাকায় একের পর এক চুরির ঘটনা ঘটে। অবশেষে পাঁশকুড়া থেকে গ্রেপ্তার হয়েছে উচ্চশিক্ষিত ওই যুবককে।
সোমবার সলীলবাবুর ফ্ল্যাটে ঢুকতেই দেখা যায়, ডাইনিং হলে বড় এক ফটো ফ্রেমের মাঝে লেখা সেকেন্ড ইনিংস। একপাশে মায়ের ছবি, অন্যপাশে ছেলে সৌমাল্যর। ছোটবেলায় সৌমাল্যকে দেখাশোনার কাজ করতেন দীপিকা সিনহা। তিনি বলেন, এটা মধুছন্দাদেবীর প্রথম স্কুলের কাজে যোগদানের ছবি। অন্য ছবিতে ছিল সৌমাল্য। চৌধুরী পরিবারের একমাত্র ছেলের ছবিতে ভর্তি রয়েছে থ্রি বিএইচকে বিশাল ফ্ল্যাট। তাকে নিয়েই ছিল চৌধুরী দম্পতির জগৎ। বাবা-মায়ের দৌলতে উচ্চশিক্ষিত সৌমাল্যর হাতখরচের অভাব ছিল না। কিন্তু কীসের টানে তাকে অপরাধ জগতে নামতে হল তা নিয়েই এখন প্রশ্ন উঠছে। সৌমাল্যর বাবার দাবি, ওর মা অবসরের পর অনেক টাকা পায়। সেই টাকা দেখভাল করত সৌমাল্যই। সেই খবর পেয়েই দুষ্কৃতী দল তাকে ফাঁদে ফেলে। প্রথমে ওই টাকা হাতায়। পরে তারাই অপরাধে নামিয়ে দেয়।