কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ। যোগাযোগ রক্ষা করে চললে কর্মলাভের সম্ভাবনা। ব্যবসা শুরু করলে ভালোই হবে। উচ্চতর ... বিশদ
ওই চাষি জানিয়েছেন, ক্যানিং বাজার থেকে ১০-১৫ গ্রাম ওজনের সুস্থ শিঙি, মাগুর ও কই মাছের চারাপোনা কেনেন। প্রতিটি চারার দাম পড়ে ২ টাকা। এক বিঘার পুকুরে ৬ হাজার মাছের চারা ছাড়েন। ৬টি হাঁড়িতে মাছের চারাগুলি রেখে মাঝপুকুরে হাঁড়িগুলি ১৫ মিনিট ভাসিয়ে রেখে তবেই পুকুরে মাছের চারাপোনা ছাড়েন। পাত্রের জলের সঙ্গে পুকুরের জলের তাপমাত্রার তফাৎ হলে মাছের চারা মারা যেতে পারে। সেকারণেই এই সতর্কতা নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন মৎস্যচাষিরা। সন্দেশখালি ১ নম্বর ব্লকের আগারহাটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মাছচাষি ধনঞ্জয় নস্কর জানিয়েছেন, তিনি মাছের চারা এনে ৮-১০ ফোটা ফরমালিন দিয়ে ১০-১৫ মিনিট ডুবিয়ে রেখে শোধন করে নিয়েছেন। এতে শিঙি, মাগুর ও কই মাছের চারাগুলি তরতাজা হয়েছে। তরতাজা হয়েছে শোল মাছের চারাও। এতে মাছে ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগ খুবই কম হয়েছে। পুকুরে বর্ষার জল পড়লেই কই মাছের দাপাদাপি বাড়ে। তাই তিনি তাঁর ২ বিঘা একটি পুকুরের চারদিকে ৫ ফুট মশারির জাল দিয়ে ঘিরে রেখেছেন। জিওল মাছের খাবার হিসেবে তিনি ব্যবহার করেছেন মাছের গুঁড়ো ২০ শতাংশ, হাড়ের গুঁড়ো ২৫ শতাংশ, সর্ষের খোল ১০ শতাংশ, চালের খুদ ২৫ শতাংশ, গমের ভুষি ১৫ শতাংশ, ময়দা ৪ শতাংশ, ভিটামিন সহ খনিজ লবণ ১ শতাংশ। চারা মাছের ওজন যত বেড়েছে, খাবারের দৈনিক পরিমাণ তিনি তত বাড়িয়েছেন। তিনি আরও বলেন, তাঁদের গ্রামের অনেকেই জিওল মাছের খাবার হিসেবে মুরগির নাড়িভুড়ি, গুগলি, শামুক, ঝিনুক, নষ্ট চাল প্রভৃতি দিচ্ছেন। কিন্তু এতে পুকুরের জল তাড়াতাড়ি নষ্ট হয় এবং দূষণ ছড়ায়। মাছ রপ্তানির ক্ষেত্রে পরীক্ষায় ফেল করবে মাছ। কিন্তু জৈব পদ্ধতিতে দূষণমুক্তভাবে মাছ চাষ করা সম্ভব। মিনাখা ব্লকের চৈতল গ্রাম পঞ্চায়েতের চাষি উজ্জ্বল মণ্ডল বলেন, তিনি তাঁর তিন বিঘার ছোট ভেড়িতে যত্নের অভাবে কচুরিপানা ভরে গিয়েছিল। জলও কম ছিল। কচুরিপানা পরিস্কার করে তিনি বিঘা প্রতি ৩০০-৩৫০ কেজি মহুয়ার খোল জলে মিশিয়েছেন। ২১ দিন বাদে পুকুরে চুন প্রয়োগ করে পুকুরে পিএইচ পরীক্ষার কাগজ দিয়ে পরীক্ষা করে নেন। পুকুরের জলের পিএইচ ৬.৫-৭.৫ এর মধ্যে থাকতে হবে। পরে ওই মহুয়া খোল পরে জৈব সারে পরিণত হয়। সন্দেশখালি ২ নম্বর ব্লকের জেলিয়াখালি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মাছচাষি সৌরভ সামন্ত বলেন, পুকুর তৈরি আর সংস্কারে বিঘা প্রতি তাঁর খরচ হয় ২ হাজার টাকা, চুন ও জৈব সারের খরচ ৭০০টাকা, চারা মাছ ৬ হাজার টাকা। অতিরিক্ত জল দেওয়া ও মাছ তোলার খরচ ১ হাজার টাকা। অন্যান্য খরচ ২ হাজার টাকা সহ মোট খরচ হয়েছে প্রায় ২০ হাজার টাকা। বিঘা প্রতি ৬৩০ কেজি পাওয়া যায়। ক্যানিং বাজারে ২০০ টাকা কেজি হিসেবে বিক্রি হবে। প্রায় ১ লক্ষ ২৬ হাজার টাকা আয় হবে মাছ বিক্রি করে। সাত মাসে ওই টাকা ঘরে তোলা যায়।