কোনও কিছুতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভাববেন। শত্রুতার অবসান হবে। গুরুজনদের কথা মানা দরকার। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সুফল ... বিশদ
পূর্ব মেদিনীপুর ও দুই ২৪ পরগনা জেলায় পাঠানো মৎস্য দপ্তরের চিঠি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই তিন জেলায় মোট ২৮০টি ভেনামি চিংড়ি চাষের ইউনিটের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রতিটি ইউনিটে ৯৬ হাজার ৪০০ টাকায় মোট ১লক্ষ ২৫ হাজার পিস ভেনামি চিংড়ির চারা দেওয়া হবে। এছাড়া ১৯ হাজার ৬০০ টাকায় ২৮০ কেজি খাবার দেওয়া হবে। মৎস্য দপ্তর ইউনিটপিছু ১ লক্ষ ১৬ হাজার টাকার মাছের চারা ও খাবার দেবে। এছাড়া চাষিকে পুকুর তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় চুন, সার, ওষুধ সহ বিভিন্ন খরচ মিলিয়ে মোট ২ লক্ষ ১৯ হাজার ৭৪০ টাকা লাগাতে হবে। প্রথম বছর পূর্ব মেদিনীপুর জেলার জন্য ১২০টি, উত্তর ২৪ পরগনার জন্য ৮০টি ও দক্ষিণ ২৪পরগনা জেলার জন্য ৮০টি ইউনিট বরাদ্দ করা হয়েছে।
রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা বলেন, ভেনামি চিংড়ি রপ্তানি বাড়াতে হলে এই রাজ্যে উৎপাদন বাড়ানো জরুরি। সেকারণে এবার প্রথম উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মাছ চাষিদের আমরা ভেনামি চিংড়ির চারা ও খাবার দিচ্ছি। এছাড়া হাওয়াই ও অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আমাদের মৌ হয়েছে। হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয় এই রাজ্যে চিংড়ির অ্যান্টিবায়োটিক টেস্ট ইউনিট খুলবে। এর ফলে চিংড়ির মধ্যে কতটা অ্যান্টিবায়োটিক আছে তা পরীক্ষা করার পর বিদেশে পাঠানো সম্ভব হবে। এছাড়া অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয় এই রাজ্যে চিংড়ির রোগ পরীক্ষা কেন্দ্র গড়বে। চাষি ওই কেন্দ্রে চিংড়ির রোগ পরীক্ষা করিয়ে প্রয়োজনীয় ওষুধ প্রয়োগ করতে পারবেন। এছাড়া জুনপুটে ভেনামি চিংড়ির হ্যাচারি তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ফলে চাষিরা এই রাজ্য থেকেই রোগমুক্ত ভেনামি চিংড়ির চারা পাবেন।
সি-ফুড এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য এগজিকিউটিভ কমিটির সদস্য মীর মমরেজ আলি বলেন, গত আর্থিক বছরে আমাদের রাজ্য থেকে প্রায় ৬৫ ৭০ হাজার টন ভেনামি চিংড়ি বিদেশে রপ্তানি হয়েছে। তাতে আড়াই থেকে তিন হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা এদেশে এসেছে। ভেনামি চিংড়ি চাষে উৎসাহ বাড়াতে রাজ্য সরকারের উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাচ্ছি।
মৎস্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১২ সাল থেকে এই রাজ্যের পূর্ব মেদিনীপুর ও দুই ২৪ পরগনার নোনা জলে ভেনামি চিংড়ির চাষ শুরু হয়। তার আগে বাগদা চিংড়ির চাষ হত। বিদেশের বাজারে ভেনামি চিংড়ির চাহিদা বেশি থাকায় এই তিন জেলায় এই চিংড়ি চাষ ব্যাপক হারে বেড়েছে। এমনকী পূর্ব মেদিনীপুর সহ এই তিন জেলার বিভিন্ন প্রান্তে আন্তার্জাতিক মানের চিংড়ি প্রসেসিং ইউনিটও গড়ে উঠেছে। কিন্তু, এই চিংড়ি চাষে পরিকাঠামোগত ঘাটতির কারণে চরম সমস্যায় ছিলেন চাষিরা। চিংড়ির চারা অন্ধ্রপ্রদেশ সহ ভিন রাজ্য থেকে আনতে হত। এছাড়া ভেনামি চিংড়ির রোগ পরীক্ষার ব্যবস্থা না থাকায় বেসরকারি ওষুধ কোম্পানি নির্ভর মাছ চাষে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ প্রয়োগ করা হতো। ফলে চিংড়ি মাছের শরীরে অ্যান্টিবায়োটিকের মাত্রা বহু ক্ষেত্রে বেড়ে যেত। সেকারণে বিদেশে রপ্তানি হওয়া চিংড়ি বহু সময় ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হত। ফলে বিপুল টাকা ক্ষতির মুখে পড়তেন এই রাজ্যের চাষিরা। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে মৌ চুক্তি করার পাশাপাশি জুনপুটে ভেনামি চিংড়ির হ্যাচারি তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে।