কোনও কিছুতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভাববেন। শত্রুতার অবসান হবে। গুরুজনদের কথা মানা দরকার। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সুফল ... বিশদ
কাঞ্চনবাবু উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেন। ‘অভিজিৎ সেনের ছোটগল্প: বিষয়বস্তু ও শিল্পনীতির বিশ্লেষণ’ শীর্ষক গবেষণাপত্রটি ২০১৪ সালেই মঞ্জুরি পায়। সেখানে কথা সাহিত্যিক অভিজিৎ সেনের সাহিত্য সৃষ্টির তালিকাও ছিল। পরে বিকাশবাবু অভিজিৎ সেনকে নিয়ে যৌথভাবে একটি বই সম্পাদনা করেন। সেটির নাম ‘কথাসাহিত্যিক অভিজিৎ সেন পাঠে-বহুপাঠে’। সেই বইটিতেই কাঞ্চনবাবুর করা তালিকাটি হুবহু তুলে দেওয়া হয়েছে। তাতে বছর ধরে ধরে কোনও প্রকাশনা সংস্থার মাধ্যমে অভিজিৎ সেনের বই বা প্রকাশিত লেখাগুলির সুসংহত বিবরণ রয়েছে। আরও অবাক করার মতো বিষয়, সেখানে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করা হয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার এক গবেষকের প্রতি। পূর্ব পরিচয়ের কারণে কাঞ্চনবাবুর কাছেও ওই বইয়ের জন্য একটি লেখা চাওয়া হয়েছিল। কাঞ্চনবাবু তা দিয়েছিলেন। পরে বইটি সংগ্রহ করার পর এই বিষয়টি তাঁর নজরে আসে। তিনি প্রথমে মৌখিকভাবে অনুরোধ করেন, যাতে বইগুলি তুলে নিয়ে সংশোধিত ভাবে তা প্রকাশ করা হয়। কিন্তু কাঞ্চনবাবুর অভিযোগ, সেই আবেদনে তিনি সাড়া পাননি। শুধু বলা হয়েছিল, পরবর্তী সংস্করণে তা ঠিক করে দেওয়া হবে। কিন্তু কাঞ্চনবাবুর দাবি ছিল, একবার বইটি এভাবে বেরিয়ে গেলে পরবর্তীকালে তিনি নিজে এই সংক্রান্ত বই প্রকাশ করতে গেলে কপিরাইট সংক্রান্ত জটিলতায় পড়বেন। কিন্তু তাতেও চিঁড়ে ভেজেনি। এরপরে তিনি উকিলের চিঠি পাঠান। সেটা পাঠানোর পর কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে কাঞ্চনবাবুর নাম প্রকাশ করে বইটি সংশোধিত করা হয়। কাঞ্চনবাবুর দাবি অনুযায়ী, বিকাশবাবু জানিয়েছিলেন, সাহিত্য সৃষ্টির তালিকাটি তিনি যাদবপুরের ওই গবেষকের থেকেই পেয়েছিলেন। তাই তিনি ভেবেছিলেন সেটা তাঁরই তৈরি। কিন্তু ওটা ছাপিয়ে দেওয়ার আগে তথ্যের উৎস্য সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে নেননি কেন তিনি? এর কোনও ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি বলেই কাঞ্চনবাবুর অভিযোগ।
এরপর কাঞ্চনবাবুর দাবি করেন, গোটা ঘটনার জন্য লিখিতভাবে ক্ষমা চাইবেন সম্পাদকরা। এবং তাঁর যে আইনি খরচ হয়েছে, তাও মিটিয়ে দিতে হবে। কিন্তু সম্পাদকদের তরফে উকিলের চিঠিতে জানিয়ে দেওয়া হয়, এতে কপিরাইট লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেনি। বিবলিওগ্রাফি বা গ্রন্থতালিকার কপিরাইট হতে পারে না। বিবাদ এখানেই থেমে থাকেনি। গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্বাগত সেন, আচার্য তথা রাজ্যপালের দপ্তরেও অভিযোগপত্র পাঠান কাঞ্চনবাবু। চিঠি পাঠানো হয় কলেজ সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যানের উদ্দেশেও। কারণ, কমিশনের বিভিন্ন কমিটিতে বিশেষজ্ঞ হিসেবে থাকেন বিকাশবাবু। এতেও সন্তুষ্ট না হয়ে ৩১ জুলাই তিনি মামলা দায়ের করেন। কাকতালীয়ভাবে ১ আগস্ট ডিন হিসেবে নিযুক্ত হন বিকাশবাবু। এ প্রসঙ্গে বিকাশবাবুর দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটির রিপোর্টে আমাকে নির্দোষ বলা হয়েছে। এতে আমার কোনও দোষ নেই। আমিও এই মামলাকারীর বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিচ্ছি দেখুন। যদিও সেটা কী, তা এখনই বলতে চাননি তিনি।