কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ। যোগাযোগ রক্ষা করে চললে কর্মলাভের সম্ভাবনা। ব্যবসা শুরু করলে ভালোই হবে। উচ্চতর ... বিশদ
ট্রেন্টব্রিজকে বলা হয় ব্যাটসম্যানদের স্বর্গ। সেখানে টসে জিতে ইংল্যান্ড অধিনায়ক ইয়ন মরগ্যান কেন পাকিস্তানকে আগে ব্যাট করতে পাঠান, সেই প্রশ্ন এখনও ঘুরপাক খাচ্ছে। মরগ্যানের ব্যাখ্যা ছিল, এই মাঠে কোনও রানই নিরাপদ নয়। তাই, লক্ষ্য ছিল যতটা সম্ভব কম রানে পাকিস্তানের ইনিংসকে আটকে রাখা। তারপর সেই রান তাড়া করা। কিন্তু, বাস্তবে সেই পরিকল্পনা খাটেনি। ইংল্যান্ডের বোলিংকে তুলোধোনা করে পাকিস্তান তোলে আট উইকেটে ৩৪৮ রান। জবাবে রুট এবং জস বাটলারের (১০৩) সেঞ্চুরি সত্ত্বেও ইংল্যান্ডের লড়াই আটকে যায় নয় উইকেটে ৩৩৪ রানে। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে ১৪ রানে হারের পর হতাশ রুট জানিয়েছেন, ‘শেষের দিকের জন্য আমরা একটু বেশি কাজই ফেলে রেখেছিলাম। বারবার একই ভুল যাতে না হয়, সেদিকেই এবার আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে। আশা করি, পাক ম্যাচকে পিছনে ফেলে কার্ডিফেই আমার ঘুরে দাঁড়াতে পারব।’ এবারের বিশ্বকাপের ফরম্যাট অনুযায়ী ১০টি অংশগ্রহণকারী দলই একে অপরের বিরুদ্ধে খেলবে। তারপর সেরা চারটি দল সেমি ফাইনালে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। রুট বলেছেন, এই নিয়মে সব দলেরই সামনেই সুবিধা থাকছে নিজেদের ভুলত্রুটিগুলি শুধরে নেওয়ার। ফলে, লড়াই এবার আরও জমজমাট হবে। এই ফরম্যাটের বিশেষত্ব এখানেই। তাই, একটা ম্যাচে হার নিয়ে ভেঙে পড়তে তিনি নারাজ।
পাক ম্যাচে হারের জন্য রুট দায়ী করেছেন ক্যাচ মিস এবং প্রয়োজনের মুহূর্তে ব্যাটসম্যানদের ভুল শট খেলে আউট হওয়াকে। অধিনায়ক ইয়ন মরগ্যানও রুটের সুরে সুর মিলিয়ে পাকিস্তানের রানের পাহাড় গড়ার অন্যতম কারণ হিসেবে তুলে ধরেছেন দলের বাজে ফিল্ডিংকে। তিনি বলেছেন, ‘বিশ্বকাপের মতো প্রতিযোগিতায় এই ধরনের ভুল করলে তার জন্য কখনও চড়া মাশুল দিতে হয়। পাকিস্তান সেই সুযোগই কাজে লাগিয়ে দু’দলের মধ্যে ব্যবধান গড়ে দিয়েছে।’ তবে, তিনশোর উপর রান তোলা, জোড়া সেঞ্চুরি পাওয়া— এই ইতিবাচক দিকগুলিকে নিয়েই কার্ডিফের লড়াইয়ের জন্য তৈরি হওয়ার উপর জোর দিচ্ছেন তিনি।
অন্যদিকে, টুর্নামেন্টের অন্যতম ‘ফেভারিট’ ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে জয়কে বিশ্বকাপের টার্নিং পয়েন্ট হিসেবেই দেখছে পাক শিবির। ছন্দে ফেরার জন্য এরকমই একটা পারফরম্যান্সের প্রতীক্ষায় ছিল তারা। অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ, ম্যাচের সেরা মহম্মদ হাফিজ কিংবা হাসান আলিরা এই জয়কে ‘দলগত সাফল্য’ হিসেবেই দেখছেন। ব্যক্তিগত ১৪ রানে জীবন ফিরে পাওয়ার পর ৬২ বলে ৮৪ রানের ইনিংস উপহার দেন হাফিজ। বল করতে এসে তুলে নেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক ইয়ন মরগ্যানের উইকেট। রুটের ক্যাচটিও তিনিই তালুবন্দি করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘এরকমই একটা পারফরম্যান্সের অপেক্ষায় ছিলাম আমরা। এই ম্যাচে সবাই নিজেদের সবটুকু উজাড় করে দিয়েছে। অন্যদিকে, অধিনায়ক সরফরাজ এই জয়ের জন্য স্পিনার সাদাব খানের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন। প্রসঙ্গত, সাদাব খানকে দিয়েই ইনিংসের সূচনা করেছিল পাকিস্তান। তিনি প্যাভিলিয়নে ফেরান জ্যাসন রায় এবং মরগ্যানকে। ওয়াহাব রিয়াজ তিনটি এবং মহম্মদ আমির দু’টি উইকেট পেয়েছেন। হাসান আলি আবার এই সাফল্যের জন্য কৃতজ্ঞ দলের কোচ মিকি আর্থারের কাছে। বিশ্বকাপের আগে টানা ১০টি ম্যাচে হার (এর মধ্যে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে চারটি ম্যাচও রয়েছে) মেনেছিল পাকিস্তান। তারপর বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে মাত্র ১০৫ রানে গুটিয়ে যায় পাক ইনিংস। সেই ম্যাচে হারের ধাক্কা কাটিয়ে দুর্দান্তভাবে জয়ে ফেরার পিছনে কোচে মিকি আর্থারের অবদানের কথাই বারবারে তুলে ধরেছেন হাসান আলি। তাঁর মতে, ‘টানা ব্যর্থতার মধ্যেও কোচ আমাদের উপর আস্থা রেখেছিলেন। ক্রমাগত সাহস জুগিয়েছেন। লড়াইয়ের জন্য উৎসাহ দিয়েছেন। তাই, এই জয়ের নেপথ্য কারিগর তিনিই।’