বেশি বন্ধু-বান্ধব রাখা ঠিক হবে না। প্রেম-ভালোবাসায় সাফল্য আসবে। বিবাহ যোগ আছে। কর্ম পরিবেশ পরিবর্তন ... বিশদ
তবে সকালে রঞ্জিত বাজাজ যা বলেছিলেন চিঠির ভাষা ছিল তার চেয়েও কড়া। রঞ্জিত বাজাজ ওই চিঠিতে লেখেন, ‘নিরাপত্তার জন্য আমাদের ম্যাচের ভেন্যু পরিবর্তন করে দিন। কাশ্মীরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খেলা সম্ভব নয়। ভেন্যু পরিবর্তন না করলে আমাদের পয়েন্ট রিয়াল কাশ্মীরকে দিয়ে দিন।’ এছাড়াও তিনি লেখেন, ‘আমাদের ক্লাব সেনাবাহিনীর পাশে আছে।’
মিনার্ভার এই চিঠি পাওয়ার পর আই লিগের সিইও সুনন্দ ধর আলোচনায় বসেন সচিব কুশল দাসের সঙ্গে। যোগাযোগ করা হয় শ্রীনগরের পুলিস কমিশনারেটের অফিসের সঙ্গে। এমনকী রাষ্ট্রপতি শাসন জারি থাকায় রাজ্যপালের অফিসের সঙ্গেও যোগাযোগ করেন ফেডারেশনের শীর্ষ কর্তারা। রিয়াল কাশ্মীর টিমটিকে দাঁড় করানোর পিছনে আছে রাজ্য সরকারের ভূমিকা। রাজ্য সরকার দুই কোটি টাকা আর্থিক সাহায্য করেছে দল গড়তে। জম্মু-কাশ্মীর ব্যাঙ্ক দলটির প্রিন্সিপাল স্পনসর। কাশ্মীরের বর্তমান প্রজন্ম যাতে জঙ্গি সংগঠনে জড়িয়ে না পড়ে সেই জন্যই ফুটবলকে সামনে আনতে চেয়েছে রাজ্য প্রশাসন। কাশ্মীর পুলিসের পৃষ্ঠপোষকতায় দুই তরুণ ফুটবলার জামার্নিতে ট্রেনিং নিয়ে এসেছে দুই বছর আাগে।
এই সব কারণে রাজ্য সরকার ফেডারেশন কর্তাদের জানিয়ে দেন, ‘এই প্রেক্ষাপটে রিয়াল কাশ্মীরের ম্যাচ সরিয়ে দিলে উপত্যাকায় ‘অন্য বার্তা’ যাবে। রিয়াল কাশ্মীরকে প্রমোট করার পরিকল্পনাই ভেস্তে যাবে। তাছাড়া শুক্রবার শ্রীনগরে পরিস্থিতি শান্তই ছিল। রাস্তায় লোকজন কম থাকলেও অপ্রীতিকর কিছু ঘটেনি। তাই ম্যাচ হোক। বড়জোর একদিন পিছিয়ে দিন। আমরা পুরো নিরাপত্তা দিতে তৈরি।’ রাজ্য প্রশাসনের এই বক্তব্য ফেডারেশনের সিইও সুনন্দ ধর সন্ধ্যায় জানিয়ে দেন রঞ্জিত বাজাজকে। সন্ধ্যা ছ’টা নাগাদ রঞ্জিত বাজাজ জানান, ‘নিরাপত্তা নিয়ে কাশ্মীর প্রশাসনের লিখিত প্রতিশ্রুতি পেলে আমরা সোমবার শ্রীনগরে ম্যাচটি খেলব।’ কিন্তু ফেডারেশন সূত্রের খবর, নিরাপত্তা নিয়ে লিখিত প্রতিশ্রুতি দেবে না জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসন। তবে রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে ফেডারেশনের যা কথাবার্তা হয়েছে সেই প্রেক্ষিতে সুনন্দ ধর শনিবার লিখিত চিঠি দেবেন মিনার্ভাকে। শ্রীনগর পুলিস কর্তারা ফোনে রঞ্জিত বাজাজের সঙ্গে কথাও বলতে পারেন। তাই সোমবার মিনার্ভা-রিয়াল কাশ্মীর ম্যাচ শ্রীনগরে হবে কিনা তা পরিস্কার হবে শনিবার। তবে প্রশাসন অনড় মনোভাব নেওয়ায় এবং শ্রীনগরের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি আগামী ৪৮ ঘণ্টায় না হলে মিনার্ভা শেষ পর্যন্ত খেলতে রাজি হবে বলে তথ্যাভিজ্ঞ মহলের ধারণা। কারণ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার পর মিনার্ভা শ্রীনগরে না খেললে তাদের তিন পয়েন্ট তো যাবেই সেই সঙ্গে তাদের সাসপেন্ড হওয়ার ব্যাপারটি খতিয়ে দেখবে ফেডারেশনের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি। ২০১২ সালের মোহন বাগানের মতো সেই ক্ষেত্রে মোটা জরিমানা হতে পারে মিনার্ভা এফ সি’র। চলতি মরশুমে আর্থিক অনটনে চলা গতবারের চ্যাম্পিয়ন দলটি কি সেই ঝুঁকি নেবে? মিনার্ভা না খেললে রিয়াল কাশ্মীর তিন পয়েন্টের পাশাপাশি তিন গোলও পাবে। যা তাদের গোল পার্থক্য অনেকটাই বাড়িয়ে দেবে।
সুনন্দ রাতে জানান, ‘ম্যাচের রেফারিরা শ্রীনগরে পৌঁছে গিয়েছেন। সেখানে পৌঁছে গিয়েছেন ম্যাচ কমিশনার মাইকেল অ্যান্ডু। তাঁরা কোনওভাবেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন না। একদিন পিছিয়ে রবিবারের জায়গায় সোমবার ম্যাচ করতে আমরা তৈরি। আগে মিনার্ভা ম্যাচ সম্পন্ন হোক। তারপর ২৮ ফেব্রুয়ারি ইস্ট বেঙ্গল ম্যাচ নিয়ে ভাবব। মাঝে প্রায় ১০ দিন আছে। আগামী দশ দিনে উপত্যাকার পরিস্থিতির অনেক কিছু পরিবর্তন হতে পারে।’ উল্লেখ্য, শ্রীনগরের নিরাপত্তা নিয়ে ইস্ট বেঙ্গলও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।