পেশা ও ব্যবসায় অর্থাগমের যোগটি অনুকূল। বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বৃদ্ধি পেতে পারে। ... বিশদ
বাম সরকারের শিল্পনীতি নিয়ে গোটা দেশে প্রশ্ন উঠেছিল। সিঙ্গুর থেকে নন্দীগ্রাম—শিল্পায়নে রাফ অ্যান্ড টাফ নীতি নিয়ে চলেছিল তারা। নিরবচ্ছিন্ন ৩৪ বছরের শাসনের পতনও ডেকে আনে এই নীতি। তার পর ক্ষমতায় আসে তৃণমূল সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসেই মমতা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, শিল্পায়নের ক্ষেত্রে সর্বজন গ্রাহ্য একটি নীতি নিয়ে চলবেন। সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেই জমি অধিগ্রহণের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জমিদাতারাও যাতে কোনওভাবেই চরম ক্ষতির সম্মুখীন না হন, সেটাও সুনিশ্চিত করা হবে। তাঁর এই নীতির প্রথম রূপায়ণ বলতে বীরভূমের মহম্মদবাজারের দেউচা পাচামি কয়লা খনি প্রকল্প।
শুরুতে এলাকায় শিল্প বিরোধী হাওয়া বইতে থাকে। বাড়ির দেওয়ালে দেওয়ালে ‘কয়লা খনি চাই না’ লেখা চোখে পড়ে। ক্ষোভের সুযোগ নেন বহিরাগত কিছু আন্দোলনকারীও। তাঁরাও মাটি কামড়ে পড়ে থেকে প্রকল্পের বিরোধিতা শুরু করেন। কিন্তু জোর করে কিংবা বন্দুকের নলের সামনে দাঁড় করিয়ে উচ্ছেদের পথে হাঁটেনি মমতার প্রশাসন। পরিবর্তে আলোচনায় বসার আহ্বান রেখেছে বারবার। আর তাতেই ধীরে ধীরে হলেও বাস্তবের মুখ দেখছে এশিয়ার সর্ববৃহৎ এই প্রকল্প। আলোচনায় অনুঘটকের কাজ করেছে মমতার মানবিক প্যাকেজ। চড়া মূল্যে জমির দাম ও জমিদাতাদের সরকারি চাকরির নিশ্চয়তা দিয়েছেন তিনি। বহু জমিদাতা ইতিমধ্যে চাকরিও পেয়ে গিয়েছেন। আরও অনেকেই পাবেন।
ফলে, ভোটের দেউচা পাচামি এখন খুশি। তবুও কারও কারও এখনও চাকরি না পাওয়ার আক্ষেপ রয়েছে। প্রকল্প এলাকায় ঢুঁ মারতেই সেই ক্ষোভের আঁচ মিলছে। ঘিরে ধরে অনেকেই বলছেন, ‘আমাদের চাকরি কবে হবে? পাশের ঘরের ছেলের কতদিন আগেই চাকরি হয়ে গেল। আমাদের এখনও হল না।’ মহম্মদবাজার ব্লকের দেউচা, হিংলো, ভাড়কাটা, সেকেড্ডা, পুরাতনগ্রাম এই অঞ্চলগুলি প্রকল্প এলাকার মধ্যে পড়ে। রাস্তায় দাঁড়িয়ে কথা হচ্ছিল দেউচার শুভাশিস রজকের সঙ্গে। তিনি বলছিলেন, ‘স্ত্রীর চাকরি হওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা। জমির রেজিস্ট্রেশন থেকে শুরু করে সবকিছুই প্রায় হয়ে গিয়েছে। এবার পরের ধাপেই স্ত্রীর চাকরি হবে। মাটির নীচে কবে কয়লা উঠবে সত্যিই জানিনা। কিন্তু তার আগেই এলাকায় এত জনের পুলিসের চাকরি হল তা তো আনন্দের বিষয়।’ সিউড়ি থেকে কাজ সেরে ফিরছিলেন গ্রুপ ডি পদে চাকরি পাওয়া রবিউল ইসলাম। প্রকল্পের জন্য জমি দিয়েছেন তিনি। রবিউল বলছিলেন, ‘এখন গোটা দেশেই চাকরির আকাল। সেখানে বাপ, ঠাকুরদার জমি থাকার কারণে সরকারি চাকরি পেয়েছি। এটা বিশাল পাওনা। কয়লা খনি হয়ে আরও মানুষের কর্মসংস্থান হোক।’