ঝগড়া এড়িয়ে চলার প্রয়োজন। শরীর স্বাস্থ্য বিষয়ে অহেতুক চিন্তা করা নিষ্প্রয়োজন। আজ আশাহত হবেন না ... বিশদ
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদের মতো পিছিয়ে পড়া জেলায় একসময় ড্রপ আউট প্রশাসনের আধিকারিকদের মাথাব্যথার কারণ ছিল। বিশেষ করে ছাত্রীদের ক্ষেত্রে সেই প্রবণতা সবচেয়ে বেশি ছিল। অনেকেই মাধ্যমিকের গণ্ডি টপকাতে পারত না। কিন্তু কন্যাশ্রী প্রকল্প চালু হওয়ার পর থেকে ছাত্রীদেরও পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ বেড়েছে। এক আধিকারিক বলেন, কন্যাশ্রী প্রকল্পের জন্য আগামী শিক্ষাবর্ষে আরও টার্গেট বাড়ানো হবে। বহু ছাত্রী কন্যাশ্রী প্রকল্পের জন্য পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে। এটা যে কোনও জেলার পক্ষে ভালো ইঙ্গিত। শুধু তাই নয়, জেলায় নাবালিকাদের বিয়ের হারও অনেক কমে গিয়েছে। একসময় ডোমকল বা জঙ্গিপুরের মতো এলাকায় ১৮বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই মেয়েদের বিয়ে হয়ে যেত। এখন নাবালিকাদের বিয়ে সম্পূর্ণ বন্ধ না হলেও অনেক কমে গিয়েছে। কন্যাশ্রী ক্লাবও তা নিয়ে নজরদারি চালাচ্ছে। নাবালিকাদের বিয়ে বন্ধ এবং স্কুলছুটদের ফের শিক্ষার আঙিনায় ফিরিয়ে আনার জন্য জেলার দুই পড়ুয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে সংবর্ধিত হয়েছে। কন্যাশ্রী দিবসে তাদের কলকাতায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়। তাদের মতো বহু ছাত্রী কন্যাশ্রী ক্লাব তৈরি করে সামাজিক কাজ করে চলছে।
প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১২সালে কন্যাশ্রী প্রকল্প চালু করেন। কে-১ প্রকল্পে ছাত্রীদের বছরে এক হাজার টাকা পড়াশোনার খরচ চালানোর জন্য দেওয়া হয়। কে-২ প্রকল্পে এককালীন টাকা টাকা দেওয়া হয়। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কে-১ এবং কে-২ প্রকল্পের লক্ষ্যমাত্রা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পূরণ হবে। কে-১ প্রকল্পের কাজ ইতিমধ্যেই ৬০শতাংশ এগিয়ে গিয়েছে। কিছু ছাত্রীর কাছে সম্পূর্ণ নথি না থাকায় এই প্রকল্প থেকে সুবিধা পেতে দেরি হচ্ছে। নির্দিষ্ট ক্লাসের সমস্ত ছাত্রীরা যাতে এই প্রকল্পের সুবিধা পায় সেজন্য বিদ্যালয়গুলিকেও নজর দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। জেলাশাসক বলেন, কন্যাশ্রী ক্লাবের মেয়েরা সমাজের বিভিন্ন কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বিশেষ করে বাল্যবিবাহ বন্ধে তাদের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য।
মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ কৃষ্ণেন্দু রায় বলেন, সমস্ত জায়গাতেই কন্যাশ্রী ক্লাব গড়ে উঠেছে। আমাদের জেলায় এই প্রকল্প ব্যাপকভাবে সাড়া ফেলেছে। আর্থিক সামর্থ না থাকায় জেলায় আগে অনেকে মেয়ের পড়াশোনা না শিখিয়ে বিয়ে দিয়ে দিত। এখন সেই প্রবণতা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ১৩ থেকে ১৯ বছরের মেয়েরা কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছে। কে -২ প্রকল্পে মেয়েরা এককালীন ২৫ হাজার টাকা পাচ্ছে। এটা গ্রামীণ এলাকার যে কোনও ছাত্রীর কাছে বড় বিষয়। চলতি আর্থিকবর্ষে কে-১ এবং কে-২ মিলিয়ে ৩লক্ষের বেশি ছাত্রী এই প্রকল্পের সুবিধা পাবে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, যাদের নাম এই প্রকল্পের জন্য অনুমোদিত হয়ে গিয়েছে। তারা কিছুদিনের মধ্যে অ্যাকাউন্টে টাকা পেয়ে যাবে। বাকিদের নামও আপলোড করে অনুমোদন দেওয়ার জন্য দ্রুত কাজ চলছে।