ঝগড়া এড়িয়ে চলার প্রয়োজন। শরীর স্বাস্থ্য বিষয়ে অহেতুক চিন্তা করা নিষ্প্রয়োজন। আজ আশাহত হবেন না ... বিশদ
বাঁকুড়ার জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস বলেন, মেরামতির কাজের জন্য ৯ থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দুর্গাপুর ব্যারেজ দিয়ে পণ্যবাহী যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বাস ও ছোটগাড়ি যাতায়াত করলেও সেগুলির গতি নিয়ন্ত্রণ করা হবে। পণ্যবাহী যান বন্ধ করা হলেও একটি লেন দিয়ে উভয় দিকের গাড়ি পাশ করানোর জন্য কিছুটা যানজটের আশঙ্কা রয়েছে। পরিস্থিতির উপর পুলিস নজর রাখবে।
বাঁকুড়ার পুলিস সুপার কোটেশ্বর রাও বলেন, দুর্গাপুর ব্যারেজে যান নিয়ন্ত্রণের জন্য আমরা জেলার দিকে পর্যাপ্ত পুলিসের ব্যবস্থা করছি। ব্রিজের মুখের কাছে যানজট এড়াতে আমরা ৫০০মিটার দূর থেকে যানবাহন নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ষার সময় দামোদরের বন্যা থেকে অবিভক্ত বর্ধমান, বাঁকুড়া ও হুগলি জেলাকে বাঁচাতে ১৯৫৫সালে সাড়ে ৬ লক্ষ মিলিয়ন কিউবিক মিটার জল ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন দুর্গাপুর ব্যারেজ নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে এই ব্যারেজ থেকে তিনটি জেলার কৃষিকাজের জন্য জল সরবরাহ করা ছাড়াও দুর্গাপুর শহর, বাঁকুড়া শহরের পানীয় জল ও কলকারখানার জলের চাহিদা মেটায় এই ব্যারেজ। ব্যারেজের উপরে থাকা ৬৯২মিটার দীর্ঘ ব্রিজ বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামের সঙ্গে দুর্গাপুর, আসানসোলের সংযোগ স্থাপনের কাজ করেছে। বেশ কিছুদিন ধরেই ব্রিজের উপরের রাস্তাটি খানাখন্দে ভরে গিয়েছে। ফলে একদিকে যেমন প্রাচীন এই ব্রিজটি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল, তেমনই প্রতিদিন ছোটখাট দুর্ঘটনার জন্য ব্যারেজের উপর যানজট হচ্ছিল। তাই সমস্যা সমাধানের জন্য বর্ধমান ও বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা বৈঠকের মাধ্যমে ব্রিজ মেরামতির সিদ্ধান্ত নেন।
প্রথমে সেচদপ্তরের আধিকারিকরা পুরোপুরি সেতু বন্ধ করে কাজ করার প্রস্তাব দেন। কিন্তু, সাধারণ মানুষের অসুবিধার কথা মাথায় রেখে পরবর্তী সময়ে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়। ৯থেকে ১৩তারিখ পর্যন্ত প্রথম দফায় মেরামতির কাজ একটি লেন খোলা রেখে করা হবে। খোলা লেন দিয়ে যাত্রীবাহী বাস ও অন্যান্য ছোটগাড়ি যাতায়াত করতে পারবে। তবে কাজের ক্ষতি এড়াতে সেতুতে সমস্ত গাড়ির গতিবেগ ১০কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা করা হচ্ছে। একটি লেন বন্ধ ও গতিবেগ বেঁধে দেওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই ব্যস্ততম এই সেতুর উভয়দিকে সকাল থেকেই গাড়ির লম্বা লাইন পড়বে।
বড়জোড়ার বাসিন্দা সুশান্ত সিং বলেন, আমি দুর্গাপুরের একটি সংস্থায় কাজ করি। তাই প্রতিদিন ব্যারেজ দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। দু’টি লেন খোলা থেকেও বেশিরভাগ দিনই ব্যারেজে ব্যস্ততম সময়ে যানজট লেগেই থাকে। সংস্কারের কাজের জন্য একটি লেন প্রশাসন বন্ধ করায় ব্যারেজ পার করতে কতটা সময় লাগবে তা বুঝতে পারছি না। তার উপর যদি খানাখন্দের কারণে কোনও গাড়ি বিকল হয়ে যায় তাহলে তো আর কথাই নেই। তাই নির্দিষ্ট সময়ে কাজের জায়গায় পৌঁছতে ঘণ্টা খানেক আগে বের হব বলে ঠিক করেছি।
বড়জোড়ার আরএক বাসিন্দা অনিন্দ্য মুখোপাধ্যায় বলেন, দুর্গাপুর ব্যারেজ সেতুর অবস্থা দিনের পর দিন খারাপ হয়ে যাচ্ছিল। তাই দ্রুত সেতুটির সংস্কার প্রয়োজন ছিল। একটি লেন বন্ধ করায় কয়েকটা দিনের জন্য মানুষের একটু অসুবিধা হবে ঠিকই। কিন্তু, বাঁকুড়া-দুর্গাপুরের এই লাইফলাইনকে ভালো রাখার জন্য আমাদের কয়েকটা দিন একটু কষ্ট স্বীকার করতেই হবে।
বড়জোড়া পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য আলোক মুখোপাধ্যায় বলেন, দুর্গাপুর ব্যারেজ হয়ে প্রতিদিন পণ্যবাহী গাড়ি বাদে উভয়দিকে ১৫থেকে ১৮ হাজার গাড়ি যাতায়াত করে। কিন্তু, সংস্কারের কাজের জন্য একটি লেন বন্ধ করায় এই বিশাল সংখ্যাক গাড়ি খানাখন্দে ভরা একটি লেন দিয়েই পার করাতে হবে। স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা যানজট হবে। যানজট মোকাবিলার জন্য পুলিস ও আমরা নজর রাখছি। হঠাৎ করে কোনও যানবাহন খারাপ হয়ে গেলে সেটিকে দ্রুত সরিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করার জন্যও পুলিসের তরফে ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে।