হঠাৎ জেদ বা রাগের বশে কোনও সিদ্ধান্ত না নেওয়া শ্রেয়। প্রেম-প্রীতির যোগ বর্তমান। প্রীতির বন্ধন ... বিশদ
পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে পৌঁছন উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডু। বিশ্বভারতীর কুমিরডাঙা মাঠে তাঁর হেলিকপ্টার অবতরণ করে। এদিন তিনি রবীন্দ্রভবনের ভিতরে অবস্থিত শ্যামলী গৃহের দ্বারোদ্ঘাটন করেন। উপরাষ্ট্রপতির সঙ্গে তাঁর সফরে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের নবনিযুক্ত রাজ্যপাল জগদীপ ধনকার। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের জন্য বন্ধ ছিল শ্যামলী গৃহ। এদিন প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে তিনি শ্যামলী গৃহের দ্বারোদ্ঘাটন করেন। সেখানে কিছু সময় কাটানোর পর চলে আসেন লিপিকা প্রেক্ষাগৃহে। সেখানে একটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, শান্তিনিকেতনে আসতে পেরে উপরাষ্ট্রপতি অত্যন্ত খুশি হয়েছেন। তিনি বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় সহ সমগ্র আশ্রম এলাকার প্রশংসা করেন। তারপর দুপুর ১২টা নাগাদ তিনি হেলিকপ্টারে করে রওনা দেন। উপরাষ্ট্রপতির সফরকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার বলয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছিল শান্তিনিকেতন। শ্রীনিকেতন ও শান্তিনিকেতন এলাকার বিভিন্ন জায়গায় ড্রপগেট বানানো হয়েছিল সাধারণ মানুষের যাতায়াত নিয়ন্ত্রণে। জেলা প্রশাসনের তরফে প্রচুর পরিমাণে পুলিস নিয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তু, তা সত্ত্বেও বিতর্ক এড়ানো গেল না। উপরাষ্ট্রপতির জন্য থাকা নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় ভেদ করে কেউ বা কারা এদিন শান্তিনিকেতনের বিভিন্ন এলাকায় ও উপরাষ্ট্রপতির যাত্রাপথে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর অপসারণ দাবি করে পোস্টার লাগিয়ে দেন। পোস্টারে উপরাষ্ট্রপতিকে স্বাগত জানানো হলেও উপাচার্যকে বিশ্বভারতী থেকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি তোলা হয়েছে।
এই বিষয়ে বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব সৌগত চট্টোপাধ্যায় বলেন, রাতের অন্ধকারে কেউ বা কারা এই কাজ করেছে। তাদের উদ্দেশ্য শান্তিনিকেতনকে কালিমালিপ্ত করার। উল্লেখ্য, উপাচার্য যোগদানের পর থেকেই বিশ্বভারতীতে দখল করে থাকা জমি পুনরুদ্ধার করার কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়াও কয়েকদিন আগেই বিভিন্ন দাবি নিয়ে উপাচার্যের দপ্তর ঘেরাও করেন কর্মিসভার সদস্যদের একাংশ। সেদিন উপাচার্য না থাকলেও ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিবকে দীর্ঘক্ষণ তাঁর দপ্তরে আটকে রাখেন তাঁরা। তারপরই এদিন পোস্টার পড়ায় একদিকে যেমন চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে শান্তিনিকেতনজুড়ে, তেমনই অন্যদিকে নিরাপত্তায় গাফিলতির ছবিও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। অপরদিকে উপরাষ্ট্রপতির সফরের জন্য এদিন বিশ্বভারতীর বিভিন্ন বিভাগ ও দপ্তরে কর্মদিবসের প্রথম ভাগে কোনও কাজকর্ম হবে না বলে নির্দেশিকা জারি করা হয়। তবে, সেই নির্দেশিকা জারি করা হয় বৃহস্পতিবার রাতে। এদিন বিশ্বভারতীর বিভিন্ন ভবনে ভর্তি প্রক্রিয়া ছিল। কিন্তু, নির্দেশিকা রাতে জারি হওয়ায় অনেকেই তা জানতে পারেননি। দূর-দূরান্ত থেকে বহু ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকরা এসে হয়রানির শিকার হন। যদিও এই বিষয়ে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ কোনও বক্তব্য দিতে চায়নি।
এছাড়াও এদিন নাট্যঘরে বর্ষামঙ্গল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। কবিগুরুর তিরোধান দিবসের পর থেকে রবীন্দ্রসপ্তাহ শুরু হয়েছিল। যার সমাপ্তি ঘটে এদিন। বিশ্বভারতীর বিভিন্ন বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা নৃত্য ও গানে অংশগ্রহণ করে বর্ষামঙ্গল অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেন।