আবেগের বশে কোনও কাজ না করাই ভালো। দাম্পত্য জীবনে বনিবনার অভাবে সংসারে অশান্তি বাড়বে। কর্মে ... বিশদ
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই রাতে প্রায় ২০টি দলমার হাতির দলকে তাড়িয়ে নিয়ে আসছিল বনদপ্তর। হাতিগুলিকে রতনপুর, পাথরচাকড়ি, বৈষ্ণবপুর গ্রামের দিক থেকে তাড়া করে সাতবাঁকি গ্রামে মালাবতীর জঙ্গলে ঢুকিয়ে দেওয়ার টার্গেট নিয়েছিল বনদপ্তর। প্রায় ১৭টি হাতি পেরিয়ে গেলেও শেষ মুহূর্তে ঘটে বিপত্তি। যার জেরেই মৃত্যু হয় তিনটি পূর্ণবয়স্ক হাতির। এদিকে, তিনটি হাতি মৃত্যুর পর নানা প্রশ্ন তুলছেন গ্রামবাসীরা। সাতবাঁকি গ্রামের বাসিন্দা ধীরেন মাহাত, সমীর মাহাত, নিতাই মাহাত বলেন, পাথরচাকড়ি থেকে সাতবাঁকি পর্যন্ত ১১ হাজার ভোল্টের বিদ্যুতের খুঁটি নিয়ে যাওয়া হলেও ঠিক মতো কাজ করা হয়নি। যেমন, তেমন কাজ করে চলে গিয়েছে ঠিকাদারের লোকজন। যার ফলে বিদ্যুতের তার ঝুলে পড়েছে। গত চার মাস ধরে বারবার বলা সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বিদ্যুৎ দপ্তর। কয়েক মাস আগে গ্রামের এক মহিলা গোরু চরাতে গিয়েছিলেন, সেইসময় তাঁর হাতে থাকা লাঠি বিদ্যুতের তারে প্রায় লেগেই গিয়েছিল। কোনওমতে ওই মহিলা প্রাণে বাঁচেন। তারপর বলা হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। হাতির মৃত্যুর পিছনে বনদপ্তরেরও গাফিলতি রয়েছে বলে অভিযোগ করেন সাতবাঁকি গ্রামের বাসিন্দারা।
সুদর্শন মাহাত, সমীর মাহাত বলেন, এই রাস্তাটি হাতির করিডর। তুবও বনদপ্তর কেন বিদ্যুৎ দপ্তরকে তার উঁচু করার কথা বলেনি। ২০টি হাতির দল জমির দিক দিয়ে পেরিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু, শেষ মুহূর্তে হুলা পার্টির লোকজন হাতির সামনের দিক থেকে টর্চের আলো ফেলে। যার ফলে হাতির মুখে আলো পড়ে। আর ওই সময় একটি কুকুরকে দেখে দলের পিছনে থাকা একটি দাঁতাল হাতি তাড়া করতে গিয়েই বিদ্যুতের তারে মাথায় লেগে যাওয়ায় চিৎকার করে। তখন কিছুটা সামনে থাকা দুটি হাতি বাঁচাতে এসে তারাও বিদ্যুতের তারের সংস্পর্শে চলে আসে। তার জেরে প্রাণ হাতি দু’টি মারা যায়। তাদের সঙ্গে একটি শাবকও ছিল। শাবকটি অবশ্য দলের সঙ্গে চলে যায়।
এদিন হাতি মৃত্যুর খবর পেয়ে রাতেই গ্রামে চলে আসেন ঝা়ড়গ্রামের ডিএফও বাসবরাজ এস হেলোইচ্চি সহ বনদপ্তরের অন্যান্য কর্তারা। হাতিগুলিকে জেসিবি মেশিন দিয়ে ডাম্পারে তুলে বাঁদরভুলা বিট হাউসে নিয়ে আসা হয়। সেখানে ময়নাতদন্তের পর হাতিগুলিকে পুড়িয়ে ফেলা হবে বলে জানা গিয়েছে।
বিদ্যুৎ দপ্তরের রিজিওনাল ম্যানেজার কমল মাইতি বলেন, ঘটনাটি দুর্ভাগ্যজনক, আমরা এই ধরনের ঘটনা চাই না। ইলেক্ট্রিক খুঁটিতে গা ঘেঁষার পর খুঁটি হেলে গিয়েছিল। তারপর শুঁড়ে ইলেক্ট্রিক তার লেগেছে। হাতির করিডরগুলিতে সেই জায়গায় খুঁটি আরও উঁচু করে দেওয়া হবে। এব্যাপারে বনদপ্তরের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
যদিও ঝাড়গ্রামের ডিএফও সরাসরি বিদ্যুৎ দপ্তরের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন। ডিএফও বাসবরাজ হেলোইচ্চি বলেন, হাতির উচ্চতা ন’ফুট থেকে ১০ ফুট ছিল। ঘটনাস্থলে বিদ্যুতের তার ছয় ফুট উচ্চতায় ছিল। যার ফলে ইলেক্ট্রিক তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে হাতির মৃত্যু হয়েছে। আমরা বিদ্যুৎ দপ্তরকে জানিয়েছি, যাতে সাধারণ উচ্চতায় তারগুলি থাকে। বিদ্যুৎ দপ্তরের বক্তব্য অনুযায়ী হাতি ইলেক্ট্রিক খুঁটিতে গা ঘষার ফলে তার ঝুলেছে। এই প্রসঙ্গে ডিএফও বলেন, হাতি গা ঘষলেও বড় জোর এক হাত তার নীচের দিকে ঝুলে যেত। তাহলে হাতি মারা যাওয়ার ঘটনা কোনওভাবেই ঘটত না।