আবেগের বশে কোনও কাজ না করাই ভালো। দাম্পত্য জীবনে বনিবনার অভাবে সংসারে অশান্তি বাড়বে। কর্মে ... বিশদ
নবাবি তালুক মুর্শিদাবাদ শহরে নানা স্থাপত্য নিদর্শন দেখার জন্য দেশ-বিদেশের পর্যটকরা আসেন। স্থাপত্য নিদর্শনের পাশাপাশি নবাবি আমলের ঐতিহ্য হিসেবে রয়েছে ঘোড়ায় টানা টাঙা। শহরে ঘোরার জন্য টোটো, অটো, ট্রেকার সহ একাধিক যানবাহন থাকলেও দেশ-বিদেশের পর্যটক এবং দর্শনার্থীদের প্রথম পছন্দ ঘোড়ায় টানা টাঙা। পর্যটকদের বক্তব্য, ঘোড়ায় টানা টাঙায় করে নবাবি তালুক ঘুরে দেখার অনুভূতিই অন্যরকম। যেন টাইম মেশিনে চেপে নবাবি আমলে পৌঁছে গিয়েছি। পর্যটকদের প্রথম পছন্দ টাঙা গাড়ির ঘোড়ার মল শহরকে সমস্যার সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, পর্যটকদের শহর ঘুরিয়ে দেখানোর জন্য মোট ২৫০টি টাঙাগাড়ি রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গিয়েছে, আগে ঘোড়া যত্রতত্র মলত্যাগ করার ফলে শহর যেমন নোংরা হতো, দূষণ ছড়াত। শহরের রাস্তায় ঘোড়ার মল পড়ে থাকার কারণে স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি পর্যটকরা অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়তেন। নোংরা পরিবেশের জন্য বিদেশি পর্যটকদের কাছে নবাবি তালুকের ঐতিহ্য এবং গরিমা ক্ষুণ্ণ হচ্ছিল। শহরবাসীর পাশাপাশি পর্যটকরাও শহরের নোংরা এবং দূষিত পরিবেশ নিয়ে একাধিকবার ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল। অবশেষে শহর নির্মল এবং দূষণমুক্ত রাখতে পুরসভার পক্ষ থেকে টাঙাগাড়ির ঘোড়ার পিছনে বস্তা বাঁধার নিদান দেওয়া হয়। যাতে ঘোড়া মলত্যাগ করলে রাস্তায় না পড়ে বস্তায় পড়ে। শহরবাসীর অভিযোগ, মাস কয়েক আগে বেশ কিছু টাঙায় ঘোড়ার পিছনে বস্তা বাঁধার বিষয়টি লক্ষ্য করা যায়। তবে সব টাঙাচালক নিদান মেনে বস্তা বাঁধেননি।
রতনপুরের বাসিন্দা সমীরণ দাস বলেন, শহর নির্মল এবং দূষণমুক্ত রাখার উদ্দেশ্যে নিয়ে ঘোড়ার পিছনে বস্তা বাঁধার প্রক্রিয়া শুরু হলেও টাঙাচালকদের উদাসীনতার কারণেই সফল হয়নি। টাঙাচালকরা এমনভাবে বস্তা বেঁধেছে যে বেশিরভাগ মল বস্তায় না পড়ে রাস্তার উপরেই পড়ছে। শহরের প্রায় প্রতিটি রাস্তার সঙ্গে দর্শনীয় স্থানগুলির সামনে ঘোড়ার মল পড়ে থাকছে। শহরবাসী এবং পর্যটকদের ঘোড়ার মল মাড়িয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে। রাস্তায় পড়ে থাকা ঘোড়ার মল পুরসভার সাফাই কর্মীরা পরিষ্কার করায় সমস্যা বড় আকার ধারণ করছিল না। কিন্তু এবার পুরসভার সাফাইকর্মীরা ঘোড়ার মল পরিষ্কার না করার দাবিতে মিছিল বের করেছে।
সাফাইকর্মীরা বলেন, ঘোড়ার মল পরিষ্কার করায় অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। তাছাড়া ঘোড়ার মলে ক্যান্সার এবং ধনুষ্টঙ্কার প্রভৃতি মারণ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই আর ঘোড়ার মল পরিষ্কার করব না। পুরসভার সাফাই কর্মীদের এই সিদ্ধান্তে শহরবাসী প্রমাদ গুনতে শুরু করেছেন। ঘোড়ার পিছনে বস্তা বাঁধার দাবিতে সরব হয়েছেন তারা।
টাঙা ইউনিয়নের সদস্য লালু শেখ বলেন, প্রায় সবাই বস্তা বেঁধেছে। কিছু টাঙায় বস্তা ঠিকমতো না বাঁধার জন্য রাস্তায় পড়ছে। বিষয়টি আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। মুর্শিদাবাদ পুরসভার চেয়ারম্যান বিপ্লব চক্রবর্তী বলেন, বিষয়টি নিয়ে টাঙা চালকদের সঙ্গে কথা বলব।