ধনাগম যোগটি অনুকূল। দুপুর থেকে কর্মের বাধা মুক্তি ও উন্নতি। শরীর-স্বাস্থ্য সমস্যার যোগ। ... বিশদ
কালিয়াচকের মোজমপুর হাজি শেখ সুভানি বিশ্বাস হাইস্কুল থেকে এবার মাধ্যমিকের প্রথম দশে চার ছাত্র জায়গা করে নিয়েছে। জেলার মধ্যে একমাত্র ওই একটি স্কুল থেকেই এবার ছাত্ররা মেধাতালিকায় ঠাঁই পেয়েছে। কালিয়াচকের মতো পিছিয়ে পড়া এলাকা থেকে এভাবে জেলার নামী স্কুলগুলিকে টেক্কা দেওয়ায় কৃতীদের নিয়ে গর্ব করছেন স্থানীয়রা। তবে সরকারি স্কুলে পড়ার পাশাপাশি কৃতীরা অবশ্য একটি বেসরকারি আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে কোচিং নিয়েছিল। ফলে তারাও কৃতিত্ব দাবি করেছে।
বৈষ্ণবনগরের এলাহিটোলা এলাকার বাসিন্দা মহম্মদ সাহাবুদ্দিন আলি ৬৮৮ পেয়ে এবারের মেধা তালিকায় ষষ্ঠ স্থান দখল করেছে। পদার্থবিদ্যা সাহাবুদ্দিনের প্রিয় বিষয়। পড়াশুনার পাশাপাশি সে ক্রিকেট ও ভলিবল খেলতে ভালোবাসে। ওই কৃতী বলে, আমি হোস্টেলে থেকে পড়াশুনা করতাম। ইতিমধ্যে বিজ্ঞান নিয়ে পড়ার প্রস্তুতি শুরু করেছি। ভবিষ্যতে আইআইটিতে ভর্তি হওয়ার ইচ্ছা রয়েছে। আমার বাবা চাষি। অনেক কষ্ট করে আমি পড়াশুনা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। সাহাবুদ্দিন অঙ্ক, জীবন বিজ্ঞান ও ভূগোলে ১০০ নম্বর করে পেয়েছে। বাংলা, ইংরাজি ও ইতিহাসে ৯৮ করে এবং ভৌতবিজ্ঞানে ৯৭ নম্বর পেয়েছে।
সাহাবুদ্দিনের সহপাঠি আমিনুল ইসলাম ও বিশালচন্দ্র মণ্ডল ৬৮৫ নম্বর পেয়ে মেধাতালিকায় নবম স্থানে রয়েছে। আমিনুল কালিায়চকে পড়াশুনা করলেও তার বাড়ি মুর্শিদাবাদ জেলার ফারাক্কা থানার অর্জুনপুরে। ওই কৃতীর মা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে কর্মীর কাজ করে সংসার চালান। পড়াশোনার ফাঁকে সে খেলাধুলো করত। কৃতীর মা মেহেবুবা খাতুন বলেন, ছেলের উচ্চ শিক্ষার পথে পারিবারিক অর্থনৈতিক অবস্থা প্রধান বাধা। ফলে ভালো ফল করার পরেও চিন্তায় আছি। কালিয়াচকের পুরাতন বাবুঘাটের বাসিন্দা বিশাল পঠনপাঠনের পাশাপাশি আঁকতে ভালোবাসে। বিশাল স্কুলের পাশাপাশি বাড়িতে বাড়তি ৮-৯ ঘন্টা পড়াশুনা করত। তার বাবা পেশায় প্রাথমিক শিক্ষক। বাবার কাছেই বিশাল অঙ্ক করত। পাশাপাশি তার তিনজন গৃহশিক্ষক ছিলেন। ভবিষ্যতে ওই কৃতী চিকিৎসক হতে চায়।
ওই স্কুলেরই বিশাল মণ্ডল ৬৮৪ পেয়ে মাধ্যমিকে দশম হয়েছে। বিশালের বাবা সীমান্তরক্ষী বাহিনীতে কর্মরত রয়েছেন। কালিয়াচকের গোলাপগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা বিশাল জানায়, পড়াশোনার অবসরে সে ক্রিকেট খেলত। জীবনবিজ্ঞান তার প্রিয় বিষয়। সে চিকিৎসক হতে চায়। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে থাকত। মোবাইল ব্যবহারও সেভাবে করত না। ধারাবাহিক প্রচেষ্টার ফলেই ভালো ফল করতে পেরেছে।
মোজমপুর এইচএসএসবি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মহম্মদ শামীম আফতাজ বলেন, এবার আমাদের বিদ্যালয় থেকে ৩১৭ জন মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল। তারমধ্যে ২৯৭ জন পাশ করেছে। ফার্স্ট ডিভিশন পেয়েছে ১৬৮ জন। আমাদের স্কুলের ফল বরাবর ভালো হয়। স্কুল থেকে মেয়েদের মধ্যে মেহেবুবা ইয়াসমিন ৬৮১ নম্বর পেয়ে শীর্ষে রয়েছে। মেধাতালিকায় ঠাঁই পাওয়ার ব্যাপারে সে আশাবাদী ছিল। কিন্তু মাত্র তিন নম্বরের জন্য সে জায়গা পায়নি। মেহেবুবা পুনর্মূল্যায়নের জন্য আবেদন করবে। বিদ্যালয়ের কৃতীদের আমরা সবধরনের সহযোগিতা করব।
এদিন মালদহ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক সুজিত সামন্ত মোজমপুরের ওই স্কুলে গিয়ে কৃতীদের শুভেচ্ছা জানান। বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও তিনি অভিনন্দন জানিয়েছেন। কালিয়াচকের মোজমপুর হাজি শেখ সুভানি বিশ্বাস হাইস্কুল। - নিজস্ব চিত্র।