হঠাৎ জেদ বা রাগের বশে কোনও সিদ্ধান্ত না নেওয়া শ্রেয়। প্রেম-প্রীতির যোগ বর্তমান। প্রীতির বন্ধন ... বিশদ
এবছর ভর্তির মরশুম জুড়ে ইংলিশবাজার ও পুরাতন মালদহ ব্লকের গ্রাম ও দুই শহরে বারবার উঠে এসেছে জেলায় আরও একটি মহিলা কলেজ স্থাপনের বিষয়টি। সদরের কলেজ তিনটি কলেজে জেলার সব পড়ুয়া ভিড় করছেন। ফলে ওই প্রতিষ্ঠানগুলির উপর ব্যাপক চাপ পড়ে যাচ্ছে। প্রতি বছরই এই ভর্তি নিয়ে ভোগান্তি হচ্ছে। পড়ুয়াদের দাবি, জেলা সদরে আরও একটি মহিলা কলেজ গড়ে উঠলে ছাত্রীরা উচ্চশিক্ষার জন্য বাড়তি সুযোগ পাবে। পড়ুয়ারা ভর্তি নিয়ে নিশ্চিত হতে পারবেন। এতে জেলার শিক্ষার মানোন্নয়নের পাশাপাশি কর্মসংস্থানও হবে। নারীশিক্ষারও ব্যাপক প্রসার ঘটবে। এই মহিলা কলেজের দাবিকে সরাসরি সমর্থন করেছেন প্রতিটি রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনের নেতৃত্বরাও। এই বিষয়ে ছাত্র পরিষদ ও এসএফআই আলাদাভাবে জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। অন্যদিকে, শাসক দল সমস্যার কথা শিক্ষা দপ্তরে জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
পুরাতন মালদহের বাচামারি থেকে এবছর উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করা রূপম দত্ত বলেন,আমি জিকে স্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছি। ভর্তি প্রক্রিয়া অনেকদিন ধরেই চলছে। কিন্তু আমি এখনও কোনও কলেজে পাশকোর্সেও ভর্তি হতে পারিনি। শুধু আমি নই, ওই ব্লকের অধিকাংশ পড়ুয়ারই একই দুর্দশা। সকলের ভোগান্তি হচ্ছে। আমার মনে হয়, কলেজে কলেজে আসন সংখ্যা আরও বাড়ানো উচিত। যদি জেলায় আরও একটি মহিলা কলেজ থাকত, তাহলে ছাত্রীরা ওই কলেজগুলিতে ভর্তি হতেন। তাহলেই আমাদের ভোগান্তি অনেক কমে যেত। আমরা কলেজে ভর্তি হতে না পেরে পরবর্তী পদক্ষেপগুলিও নিতে পারছি না। জেলার মহিলা শিক্ষার্থীরাও একবাক্যে জানান, এই জেলায় আরও একটি মহিলা কলেজ হলে খুব ভালো হতো। পড়াশুনার মানও বাড়ত।
ইংলিশবাজার ও পুরাতন মালদহ সদরে তিনটি কলেজ রয়েছে। এর মধ্যে ইংলিশবাজারে একটি মহিলা কলেজ রয়েছে। ভালো পরিকাঠামো থাকার সুবাদে জেলার সব ব্লকের পড়ুয়ারা এই কলেজগুলির উপর নির্ভরশীল। তাই প্রতি বছর ভর্তির মরশুমে পড়ুয়াদের খুব ভোগান্তি হয়। এই ভোগান্তি মেটাতে এই জেলায় যদি একটি মহিলা কলেজ করা যায়, তাহলে বিশেষ করে মহিলাদের খুব সুবিধা হবে। এমনটাই দাবি পড়ুয়াদের। পড়াশুনার ক্ষেত্রে বাড়তি সুবিধা মিলবে। জেলার মহিলাদের মধ্যে শিক্ষার হার ও মানের উন্নয়ন হবে।
মালদহ জেলা ছাত্র পরিষদের সভাপতি মান্তু ঘোষ বলেন, আরও একটি মহিলা কলেজের দাবিকে আমরা সমর্থন করছি। এই বিষয়টি নিয়ে আমরা আন্দোলনে নামব। পড়ুয়াদের ভর্তি নিয়ে নানা সমস্যার সমাধান চেয়ে আমরা ইতিমধ্যেই জেলার একাধিক কলেজে স্মারকলিপি দিয়েছি। জেলা এসএফআইয়ের সাধারণ সম্পাদক প্ৰদ্যুৎ বর্মন বলেন, আমরা এর আগে জেলাশাসকের কাছে জেলার উত্তরের গ্রামীণ এলাকার কলেজগুলির পরিকাঠামোর উন্নয়নের দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছি। মহিলা কলেজের বিষয়টি তখন ওই কর্মসূচির অন্তর্ভূক্ত করা হয়নি। আমাদের দাবি, জেলার ছাত্রীদের কথা ভেবে আরও একটি মহিলা কলেজ তৈরি করা হোক। এই বিষয়টি নিয়ে আমরা আবার ডেপুটেশন দেওয়ার কথা ভাবছি। মালদহ জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি প্রসূন রায় বলেন, গৌড় মহাবিদ্যালয়, মালদহ কলেজ ও মালদহ মহিলা কলেজের রেজাল্ট খুব ভালো হয়। তাই সকলের নজর থাকে সদরের এই তিনটি কলেজের দিকেই। তাই এই কলেজ তিনটির উপর চাপ বাড়ছে। পাসকোর্সের বহু পড়ুয়া এখনও ভর্তি হতে পারেননি এই জন্যই। তবে গ্রামীণ এলাকার কলেজগুলিতে অনেক আসন ফাঁকা রয়েছে। জেলা সদরের কলেজে ভর্তি হতে না পারা পড়ুয়াদের পাশে আমরা রয়েছি। এই বিষয়ে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে কলেজে বিষয় পিছু আসন সংখ্যা বাড়ানোর জন্য আবেদন করা হবে। তাছাড়া পুরাতন মালদহ বা ইংলিশবাজারের যে কোনও একটি জায়গায় আরও একটি মহিলা কলেজ হলে এই চাপ অনেকটা কমবে। আমরা শিক্ষা দপ্তরে এই বিষয়টি জানাব।