কোনও কিছুতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভাববেন। শত্রুতার অবসান হবে। গুরুজনদের কথা মানা দরকার। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সুফল ... বিশদ
ঘটনার সূত্রপাত রবিবার বিকেলে একটি পথ দুর্ঘটনাকে ঘিরে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, মহানন্দাটোলায় একটি পিকআপ ভ্যানের ধাক্কায় মৃত্যু হয় পরিমল মণ্ডল(৪৩) নামে এক ব্যক্তির। ফাঁড়িতে অভিযোগ করা হলেও সেটির নম্বর পরিবারের সদস্যদের হাতে পুলিস দেয়নি, অভিযোগ পরিজনদের। সোমবার ফের তার কপি চাইতে ফাঁড়িতে যান মৃতের পরিবারের সদস্যরা। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁদের বলা হয় ইতিমধ্যেই এফআইআর করে মামলা রুজু করা হয়েছে। এফআইআরের কপি এক-দু’দিন পরে পরিবারকে দেওয়া হবে। কিন্তু পুলিস ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে এই অভিযোগ তুলে সন্ধ্যা থেকেই ফাঁড়ির চারপাশে জড়ো হতে থাকে এলাকাবাসী। ভিড় ক্রমশ বাড়তে থাকে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ পুলিসের সঙ্গে উত্তেজিত জনতার বাকযুদ্ধ শুরু হয়। রাত সাড়ে ৮টা থেকে পরিস্থিতির অবনতি হয়। মারমুখী হয়ে ওঠে জনতা। পুলিসকে লক্ষ্য করে শুরু হয় ইটবৃষ্টি। ভাঙচুর করা হয় পুলিসের ছ’টি গাড়ি। প্রাথমিকভাবে আক্রমণাত্মক জনতার সামনে পুলিস পিছু হটলেও খবর যায় চাঁচল ও রতুয়া থানায়। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় র্যাছফ সহ বিশাল পুলিস বাহিনী। মারমুখী জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে প্রথমে লাঠিচার্জ করে পুলিস। এরপরে ফাটানো হয় কাঁদানে গ্যাসের শেল। এলাকাবাসীর দাবি, গুলিও ছুঁড়েছে পুলিস। মহাদেব মণ্ডল সহ তিনজন আহত হন। পুলিসের এক আধিকারিক কাঁদানে গ্যাস ব্যবহারের কথা মানলেও গুলি ছোঁড়ার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন।
পুলিসের পাল্টা প্রতিরোধের সামনে পিছু হটে জনতা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, যে পিকআপ ভ্যানের ধাক্কায় পরিমলের মৃত্যু হয় সেটির চালককে সোমবার বিকেলে এলাকায় ঘোরাফেরা করতে দেখেই উত্তেজনা বাড়ে। এরপরেই মৃতদেহ নিয়ে পুলিস ফাঁড়ি ঘেরাওয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
চাঁচলের এসডিপিও সজলকান্তি বিশ্বাস বলেন, ওই পিকআপ ভ্যানের চালককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলাও রুজু করা হয়েছে। সোমবারের ঘটনায় রাতেই ১১ জনকে ও মঙ্গলবার সকালে আরও ন’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বাকিদেরও গ্রেপ্তার করার জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে। সরকারি সম্পাত্তি নষ্ট করার অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে সোমবার রাতের ঘটনা নিয়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ফের মাথা চাড়া দিয়েছে রতুয়া-১ ব্লকে। দলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি ও প্রবীণ নেতা ফজলুল হক এই ঘটনায় উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন রতুয়ার বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি সমর মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। সমরবাবু মহানন্দাটোলা এলাকারই বাসিন্দা। ফজলুল সাহেবের দাবি, তৃণমূলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা ও বিধায়ক হিসেবে ঘটনাটি থামানোর চেষ্টাই করেননি সমরবাবু। এতেই তাঁর ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ জাগে।
প্রবীণ সমরবাবুর দাবি, নিম্নমানের ভিত্তিহীন অভিযোগের কোনও উত্তর দেব না। যা ঘটেছে তা অবাঞ্ছিত। প্রশাসন সব বিবেচনা করে সঠিক পদক্ষেপ করবে। এই ঘটনার পিছনে বিজেপির মদত থাকতে পারে।
জেলা বিজেপি সভাপতি গোবিন্দ মণ্ডল বলেন, তৃণমূলের নিজেদের লড়াইয়েই এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। বিজেপির এতে কোনও ভূমিকা নেই। নজর ঘোরাতেই আমাদের দিকে আঙুল তোলার চেষ্টা হচ্ছে।