বেশি বন্ধু-বান্ধব রাখা ঠিক হবে না। প্রেম-ভালোবাসায় সাফল্য আসবে। বিবাহ যোগ আছে। কর্ম পরিবেশ পরিবর্তন ... বিশদ
কয়েক দিনের টানা তুষারপাতের পর বুধবার থেকেই জম্মু-শ্রীনগর জাতীয় সড়কে যান চলাচল শুরু হয়। পুলওয়ামার অবন্তীপোরার যে অঞ্চলে জঙ্গিরা হামলা চালিয়েছে, সেখানে বরাবরই নিরাপত্তা জোরদার থাকে। যদিও সমস্ত নজরদারি এড়িয়ে আগে থেকেই ওই এলাকায় বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি নিয়ে হাজির ছিল জঙ্গিরা। জওয়ানদের কনভয় সেখানে পৌঁছাতেই বিস্ফোরক বোঝাই গাড়িটি একটি বাসে ধাক্কা মারে। প্রবল বিস্ফোরণে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে জওয়ানদের দেহাংশ। গাড়িটিতে ৩৫০ কেজি বিস্ফোরক ছিল বলে জানা গিয়েছে। ঘটনার আকস্মিকতা কাটিয়ে অন্য বাস থেকে জওয়ানরা নামার আগেই তাঁদের ঘিরে ধরে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে লুকিয়ে থাকা জঙ্গিরা। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন জওয়ানরা। ঘটনার এক ঘণ্টার মধ্যেই হামলার দায় স্বীকার করে জয়েশ-ই-মহম্মদ। একইসঙ্গে আত্মঘাতী জঙ্গির ভিডিও ও নাম প্রকাশ করে তারা। জানা গিয়েছে, সেনার কনভয়ে বিস্ফোরণ বোঝাই গাড়ি নিয়ে হামলাকারী জঙ্গির নাম আদিল আহমেদ দার। পুলওয়ামার কাকাপোরা জেলার বাসিন্দা আদিল গত বছরই জয়েশ-ই-মহম্মদে যোগ দিয়েছিল। জয়েশের প্রকাশিত আদিলের ভিডিওটি হামলার আগেই তোলা বলে পুলিসের দাবি। ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, জয়েশের ব্যানারের সামনে হাতে রাইফেল নিয়ে দাঁড়িয়ে আদিল। উর্দুতে আদিল বলে, যখন এই ভিডিও প্রকাশ হবে, তখন আমি জন্নতে পৌঁছে যাব। পরে জয়েশ-ই-মহম্মদের মুখপাত্র মহম্মদ হাসান জানিয়েছে, হামলায় সেনার কয়েক ডজন গাড়ি ধ্বংস হয়েছে।
হামলার পরপরই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং ফোন করেন সিআরপিএফের ডিজি আর আর ভাটনগরকে। ঘটনাস্থলে পৌঁছন কাশ্মীর পুলিসের আইজি জুলফিকার হাসান। জানা গিয়েছে, বাস, ট্রাক মিলিয়ে প্রায় ৫০টি গাড়িতে সিআরপিএফের ৫৪ ব্যাটালিয়নের কনভয় যাচ্ছিল। প্রতিটিতে ৪০ থেকে ৪৫ জন করে জওয়ান ছিলেন। দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে কনভয়ের উপর ওই বর্বরোচিত হামলা হয়। জখম জওয়ানদের অনেকের অবস্থাই আশঙ্কাজনক। তাঁদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে উরির সেনাছাউনিতে হামলার পর এতবড় নাশকতা উপত্যকায় আর হয়নি। উরির হামলায় ২৩ জন জওয়ান প্রাণ হারান। বদলা হিসেবে পাকিস্তানে ঢুকে সার্জিকাল স্ট্রাইক চালায় ভারত।
এদিনের হামলা নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডু জানান, আমি রীতিমতো হতবাক। এমন কাপুরুষোচিত কাজ কোনওভাবেই বরদাস্ত করা যায় না। শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিও। ঘটনার তীব্র নিন্দা করে শহিদ জওয়ানদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ট্যুইটারে তিনি লিখেছেন, আজ পুলওয়ামায় ৪০ জন জওয়ান শহিদ হয়েছেন। আমরা দেশের সাহসী জওয়ানদের স্যালুট জানাই এবং তাঁদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। জখম জওয়ানদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। নিন্দা করেছেন জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। ট্যুইটারে লিখেছেন, উপত্যকায় ভয়ঙ্কর হামলার খবর পেলাম। আইইডি বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে জঙ্গিরা। এই পৈশাচিক হামলার তীব্র নিন্দা করছি। মৃতদের পরিবারকে সমবেদনা জানাই। পিডিপি নেত্রী এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতিও ঘটনার সমালোচনা করেছেন। বলেছেন, নিন্দার ভাষা নেই। উল্লেখ্য, বুধবার এই পুলওয়ামাতেই একটি স্কুলে ক্লাস চলাকালীন বিস্ফোরণে ১২ জন পড়ুয়া জখম হয়। কোনও সংগঠন ঘটনার দায় না নিলেও জঙ্গি যোগ একেবারই উড়িয়ে দিচ্ছেন না পুলিস আধিকারিকরা। জখম পড়ুয়াদের অধিকাংশই দশম শ্রেণীর ছাত্র।