হঠাৎ জেদ বা রাগের বশে কোনও সিদ্ধান্ত না নেওয়া শ্রেয়। প্রেম-প্রীতির যোগ বর্তমান। প্রীতির বন্ধন ... বিশদ
গত সোমবার মিরিকে গোর্খাদের রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের পক্ষে সওয়াল করেন দার্জিলিংয়ের সংসদ সদস্য বিজেপির রাজু বিস্তা। তিনি বলেছিলেন, পাহাড় ও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা গোর্খাদের সমস্যা সমাধানের জন্য ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হওয়া দরকার। এই অবস্থায় এদিন শিলিগুড়িতে সাংবাদিক সম্মেলনে গোর্খাল্যান্ড সংক্রান্ত একটি প্রশ্নের জবাবে নাম না করে বিজেপির উদ্দেশ্যে পর্যটনমন্ত্রী তথা তৃণমূলের জেলা সভাপতি বলেন, ওরা বাংলা বিভাজন চায় কি না তা ওদেরকে স্পষ্ট করে জানাতে হবে। তবে গোর্খাল্যান্ড ক্লোজড চ্যাপ্টার। অতীতে একবার বাংলাকে ভাগ করা হয়েছে। সেই সময় বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন হয়েছিল। কাজেই আবার বাংলাকে ভাগ করা হলে রাজ্যে আগুন জ্বলবে। সর্বশক্তি দিয়ে বাংলা বিভাজন প্রতিরোধ করা হবে। সর্বাত্মক আন্দোলন হবে। এই কথা ওদের মাথায় রাখতে হবে।
পাশাপাশি জিটিএর প্রসঙ্গ নিয়েও দার্জিলিংয়ের সংসদ সদস্যর বিরুদ্ধে সরব হন পর্যটনমন্ত্রী। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার শিলিগুড়িতে বিজেপির সংসদ সদস্য জিটিএ’র বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। সংসদ সদস্যের অভিযোগ, জিটিএ বেআইনিভাবে চলছে। যে উদ্দেশ্যে জিটিএ গঠন করা হয়েছিল, তা বাস্তবায়িত হয়নি। বর্তমানে জিটিএ’র সদস্যরাও নির্বাচিত নন। কাজেই জিটিএ বেআইনি। এই প্রসঙ্গে এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে পর্যটনমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে জিটিএ গঠিত হয়েছে। সেসময় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পি চিদাম্বরম চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন। তাছাড়া জিটিএ’র নির্বাচিত পরিচালন বোর্ডের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর কারা, কীভাবে তা পরিচালনা করবে তাও আইনে উল্লেখ আছে। সেই আইন মেনেই জিটিএ পরিচালিত হচ্ছে। নতুন এমপি আইন না জেনে ভুল বলছেন। তাঁদের তো আইনজীবী আছে। কাজেই জিটিএ’র আইন জেনে তাঁর কথা বলা উচিত ছিল।
উল্লেখ্য, গোর্খাদের সমস্যা সমাধান নিয়ে বিজেপি সংসদ সদস্য যে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের দাবি তুলেছেন সেসব বিষয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অবশ্য স্পষ্ট করে কিছু বলেননি। এদিকে বিজেপি সংসদ সদস্যের ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের দাবি নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন মোর্চার অবিভক্ত অংশের সভাপতি বিনয় তামাং। ইতিমধ্যে তিনি বলেছেন, পাহাড়বাসীর ভাবনাকে নিয়ে ছেলেখেলা করছেন। গোর্খাল্যান্ডের লালিপপ দেখিয়ে পাহাড়বাসীকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।
রাজনৈতিক নেতাদের এমন বক্তব্য ঘিরে জেলার রাজনীতিতে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের বক্তব্য, আগামী দিনে শিলিগুড়িতে মহকুমা পরিষদ ও পুরসভা নির্বাচন আছে। তারপর রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন সংগঠিত হবে। সেই কারণে জিটিএ এবং গোর্খা জনগোষ্ঠীর সমস্যা নিয়ে বিজেপি হাওয়া গরমের চেষ্টা করছে। সেই হাওয়া দমাতে তৃণমূলও মরিয়া হয়ে উঠেছে। কাজেই আগামী নির্বাচনের আগে পাহাড় নিয়ে রাজনীতি ফের সরগরম হয়ে উঠবে বলেই মনে হচ্ছে।