হঠাৎ জেদ বা রাগের বশে কোনও সিদ্ধান্ত না নেওয়া শ্রেয়। প্রেম-প্রীতির যোগ বর্তমান। প্রীতির বন্ধন ... বিশদ
শিবরাম চক্রবর্তী জন্মগ্রহণ করেন ১৯০৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর। মালদহ জেলার চাঁচল-১ ব্লকের পাহাড়পুরের ভূমিপুত্র শিবরাম চক্রবর্তী দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু সেই ইতিহাস অনেকেরই অজানা। বাংলা সাহিত্যে রসসাহিত্যিক হিসেবে শিবরাম চক্রবর্তীর বিশেষ খ্যাতি রয়েছে। তাঁর সরস রচনা সকল শ্রেণীর পাঠকের কাছেই সমাদৃত। কিন্তু দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে তাঁর অবদান বহুলচর্চিত নয়। ছাত্রজীবনেই স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন শিবরাম। সেই সময় তিনি দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের সংস্পর্শে আসেন। স্বদেশী আন্দোলনে অংশ গ্রহণের জন্য তাঁকে কারাবাসও করতে হয়। এই সময় তিনি বিজলী ও ফরওয়ার্ড পত্রিকার সাংবাদিক হিসেবে কাজ করেন। ছিলেন যুগান্তর পত্রিকার প্রকাশক। তিনি দেশাত্মবোধক গল্প ও কবিতা ও রচনা করেন। তাঁর লেখা ‘গোখলে, গান্ধীজি এবং গোবিন্দবাবু’ নামক গল্পটিতে ইংরেজ সাহেবের বিরুদ্ধে গান্ধীজির বীরত্ব, সাহসিকতা ও অহিংসার আদর্শের নিদর্শন তুলে ধরা হয়। শিবরামের দেশাত্মবোধের এই গল্প নিয়ে নতুন প্রজন্মের চর্চার প্রয়োজনীয়তা আছে বলে দাবি করেন চাঁচলের বাসিন্দারা।
চাঁচল সিদ্ধেশ্বরী ইনষ্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক আসরারুল হক বলেন, শিবরাম চক্রবর্তীর স্বদেশপ্রেমের কথা ও স্বদেশের জন্য কারাবরণের কথা অবশ্যই তুলে ধরা প্রয়োজন। শিবরামচর্চার ব্যাপক ও বৃহত্তর আয়োজন করা সময়ের দাবি। সিদ্ধেশ্বরী ইনস্টিটিউশনের পক্ষ থেকে শিবরাম চক্রবর্তীকে স্মরণ করে তাঁর মর্মর মূর্তি স্থাপন করা হয়। ২০১৪ সালের ১০ জানুয়ারি ওই মূর্তির আবরণ উন্মোচন করেন ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়।
সামসি কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক মনোজ ভোজ বলেন, শিবরামকে আমরা সাহিত্যিক হিসেবেই জানি। কিন্তু তাঁর দেশপ্রেম, স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণ ও কারাবরণের ইতিহাস অনেকেরই অজানা। তাই শিবরাম চক্রবর্তীর এই অবদান চর্চার দাবি রাখে। তাঁর গদ্যশৈলী নিয়ে অনেকেই কাজ করেছেন। কিন্তু তাঁর দেশপ্রেম নিয়ে সেই অর্থে কাজ হয়নি। তাঁর মধ্যে রসিক ও স্বদেশপ্রেমিক, এই দুটি সত্তা একইসঙ্গে বিরাজমান। এলাকার বুদ্ধিজীবীরাও একই সুরে দেশপ্রেমিক শিবরাম চক্রবর্তীর ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করার দাবি তুলেছেন।