বেশি বন্ধু-বান্ধব রাখা ঠিক হবে না। প্রেম-ভালোবাসায় সাফল্য আসবে। বিবাহ যোগ আছে। কর্ম পরিবেশ পরিবর্তন ... বিশদ
আন্তর্জাতিক সুসম্পর্ক বজায় রাখতে এখন তালিবানরা কট্টর অবস্থান থেকে সরে এসেছে বলে দাবি করা হচ্ছে। মহিলা ও শিশুদের শিক্ষার অধিকার রক্ষার পক্ষে কথা বলছে। কিন্তু শান্তি আলোচনার ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। কেউ জানে না আফগানিস্তানে নতুন সরকার কারা গঠন করবে। তালিবানের উপর আদৌ কতটা নিয়ন্ত্রণ থাকবে, তা–ও স্পষ্ট নয়। কিন্তু তালিবানের ফেরা নিয়ে তরুণ প্রজম্মের আতঙ্ক বাড়ছে।
কাবুলের গানের স্কুলের পিয়ানোবাদক ১৬ বছরের মরিয়ম আতিয়া জানান, ‘এটা ভালো যে মার্কিন সরকার ও তালিবানের মধ্যে শান্তি আলোচনা চলছে। তালিবান ক্ষমতায় ফিরে এলে যাতে নারী অধিকারের বিষয়টিও নিশ্চিত করা যায় সেদিকে নজর রাখা দরকার। তালিবান ফিরে এলে আর গানবাজনার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে। কাবুলে চুল সাজানোর কাজ করেন ১৯ বছরের হুসেন। আফগানিস্তানে যুদ্ধের পর ইরানে শরণার্থী হিসেবে ছিলেন হুসেন। সেখানেই বেড়ে ওঠেন তিনি। হুসেন বলেন, ‘শান্তি আলোচনায় তালিবান যোগ দেওয়ায় আমি আশাবাদী। এটি আমার দেশের হিংসা দূর করবে। আমি চাই, তালিবান তাদের মনোভাবও বদলাক।’
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলছেন, শান্তি আলোচনা অনেকটাই ফলপ্রসূ। কথা নয়, কাজেও প্রমাণ দিয়েছেন তিনি। আফগানিস্তানে নিযুক্ত মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করে চলেছেন তিনি। ২০১০ সালের শুরুতে মার্কিন সেনা ছিল এক লাখ। আর এখন তা কমে এসে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজারে। ২০০১ সালে আমেরিকার অভিযানে তালিবানকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। সেই সময় যারা শিশু ছিল, তারা এখন তরুণ। তালিবানের পতনের পর নতুন প্রজন্ম স্বাধীনতা পেয়েছে। গানবাজনা, মডেলিং ও প্রযুক্তির ব্যবহার করে আধুনিক জীবনযাপনে তারা অভ্যস্ত। তারা ইচ্ছেমতো বাইরে যেতে পারে। আধুনিক পোশাক পরতে পারে। চুল কাটতে পারে। তালিবান জমানায় মহিলারা ঘরের বাইরে যেতে পারত না, গানবাজনা তো দূরের কথা। তরুণ প্রজন্মের ভয়, সেখানে আবার ফিরতে হবে না তো?
আফগানিস্তানে সাড়ে তিন কোটি মানুষ বাস করে। তার মধ্যে ৬০ ভাগের বেশি তরুণ। তাদের বয়স ২৫ বছরের নিচে। অন্য যেকোনও দেশের তরুণদের মতো আফগানিস্তানের তরুণ প্রজন্মও প্রযুক্তির প্রসার চায়। আফগানিস্তানের দুর্বল অর্থনৈতিক ব্যবস্থার কারণে বেকারত্ব রয়েছে। জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে অনেকেই পাড়ি জমাচ্ছে বিদেশে। অভিবাসী হিসেবে থাকছে বিভিন্ন দেশে। ২০১৪ সালের পর থেকে হাজার হাজার তরুণ অভিবাসী হিসেবে বাইরের দেশে পাড়ি দিয়েছে।
যারা আফগানিস্তানে রয়েছে, তারাও চায় বিদেশে গিয়ে কর্মসংস্থান করতে। কাবুলের একটি দোকানে কাজ করেন ১৯ বছরের ওমর। তুরস্ক থেকে আমদানি করা কাপড় বিক্রি করেন তিনি। ছ’বছর বয়স থেকে মন দিয়ে ইংরেজি শিখেছেন তিনি। কারণ, ওমর চান বিদেশে যেতে। তাজমহল, আইফেল টাওয়ার, নিউ ইয়র্ক সিটি তাঁর পছন্দ। তবে রক্তপাত বন্ধ হলে আফগানিস্তানেই থাকতে চান ওমর। তিনি জানেন, আফগানিস্তানেও অনেক ধনী ব্যক্তি রয়েছেন। তাঁরা হিংসার কারণে বিনিয়োগে ভয় পান। মার্কিন সেনা প্রত্যাহারে সায় নেই ওমরের। বললেন, তাঁদের আমেরিকার সাহায্য প্রয়োজন। কাবুলের মডেল সুলতান কাসিম সাইদি। ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম থেকে ফ্যাশন আর মডেলিংয়ের নতুন নতুন শিক্ষা নেন তিনি। তালিবান ফিরে এলে মডেলিং আর চালাতে পারবেন কি না, তা নিয়ে আতঙ্ক রয়েছে সাইদিদের।