কোনও কিছুতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভাববেন। শত্রুতার অবসান হবে। গুরুজনদের কথা মানা দরকার। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সুফল ... বিশদ
এদেশে পোস্ত চাষে হরেক নিষেধাজ্ঞা আছে। তাই এই বস্তুটি চিরকালই দামি। যেটুকু পোস্ত আমদানি করা হয়, তা আসে চীন এবং চেক প্রজাতন্ত্র থেকে। তবে ভারতে পোস্ত’র সবচেয়ে বড় সোর্স তুরস্ক। কতটা পোস্ত এদেশে আসবে, তা নিয়েও আছে হরেক প্রশাসনিক জটিলতা। কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের আওতায় থাকা সেন্ট্রাল ব্যুরো অব নারকোটিক্স সেই বিষয়ে ছাড়পত্র দেয়। তার উপর ভিত্তি করে আমদানির বিষয়ে বাইরের দেশগুলির সঙ্গে চুক্তি করেন এখানকার ব্যবসায়ীরা। সেই মতো জোগান আসে। পোস্ত মরশুমি পণ্য। তাই সারা বছর তার জোগান থাকে না। যখন জোগান আসে, তখন সরকারি নিয়ম মেনে তা বিদেশ থেকে আমদানি করতে অনেক সময়ও পেরিয়ে যায়। সাম্প্রতিককালে পোস্ত আমদানিতে কেন্দ্রীয় সরকার বেঁকে বসায় সমস্যা বিরাট আকার নিয়েছে, বলছেন পোস্ত’র কারবারিরা।
এদেশে পোস্ত বিক্রি হয় বছরে ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টন, বলছে শিল্পমহল। কলকাতা পোস্তা বাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, এদেশে মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানে মূলত পোস্ত চাষ হয়। এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত যে পোস্ত ওঠে, তা দেশীয় চাহিদা মেটাতে গিয়ে প্রায় শেষের মুখে, জানিয়েছেন তাঁরা। ব্যবসায়ীদের কথায়, কেন্দ্রীয় সরকার পোস্ত আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা তুলেছে। কিন্তু দীর্ঘদিন আমদানিতে রাশ টানায়, তার জের গোটা বাজারে পড়েছে। বড়বাজারের হিসেব বলছে, এই সময় গত বছর শহরে পোস্তর পাইকারি বাজারদর গিয়েছিল কেজি প্রতি ৩২৫ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা। সেই দর এক মাস আগে ওঠে ৬০০ টাকায়। এক মাসের মধ্যে তা পাইকারি বাজারে ৮০০ টাকায় পৌঁছেছে। পোস্তর দর বিগত কয়েক দশকে এত টাকা ওঠেনি বলেই মনে করছেন বাজার কর্তারা। দীর্ঘদিনের পোস্তর পাইকার কেশব গোয়েলের কথায়, তিন বছর আগে একবার বড়বাজারে ৫৮০ টাকা দর উঠেছিল। সেটাই ছিল রেকর্ড। এবার তা ৮০০ টাকা ছাড়িয়েছে। মাল নেই। পরিস্থিতি ভয়াবহ। তাঁর হিসেব, প্রতিদিন পোস্তা বাজার থেকে প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার কেজি পোস্ত যায় খুচরো বাজারগুলিতে। এখন জোগান এত কম, তার এক তৃতীয়াংশ পোস্ত বিক্রি হচ্ছে না এই বাজার থেকে।
খোলা বাজারেও পোস্ত চড়ছে। তাই ৮০০ টাকাতেও মিলছে না ভালো কোয়ালিটি। সংশ্লিষ্ট মহল বলছে, আঞ্চলিক পোস্ত মিশছে তাতে। সেসব পোস্তদানার রং ও গঠন ভালো নয়। পাশাপাশি ভুট্টা দানা গুঁড়িয়ে মেশানো চলছে কোথাও কোথাও। পাঁচশো বা সাড়ে পাঁচশো টাকায় যে পোস্ত তৃপ্তি করে খেয়েছেন সাধারণ মানুষ, তা পেতে এখন হাজার টাকা দর দিতে হবে বলেই জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। তবে আশার আলোও দেখিয়েছেন তাঁরাই। বলছেন, প্রশাসনিক ছাড়পত্র পাওয়ার পর পোস্ত আমদানির তোড়জোড় শুরু হয়েছে। আগস্টে তা ভারতে ঢুকতে পারে। সেক্ষেত্রে ফের দাম কমতে পারে, মনে করছেন তাঁরা। -ফাইল চিত্র